• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

মুহাম্মদ (সা.) এর অলৌকিক নিদর্শন বা মোজেজা (৫ম পর্ব)

  অধিকার ডেস্ক    ২৩ নভেম্বর ২০১৮, ০৯:০৭

রাসূল
ছবি : প্রতীকী

বৃক্ষটি ফলে ভরে গেল-

আল্লামা যামাখশারী রা. উম্মে মা’বাদ রা. এর খালাতো বোন হিন্দের সূত্রে বর্ণনা করেন, তিনি বলেছেন, রাসূল (সা.) আমার তাবুতে প্রবেশ করেছিলেন। তিনি এখানে বিশ্রামও করেছিলেন। ঘুম থেকে জেগে আমার কাছে পানি চাইলেন। তিনি পানি পেয়ে হাত ধৌত করলেন এবং কুলি করে তাবুর পাশেই ছোট্ট একটা বৃক্ষের গোড়ায় কুলির পানি ফেললেন। পরের দিন সকালে দেখা গেল, সেই বৃক্ষটি ফলে ফলে ভরে গেছে এবং তা থেকে সুগন্ধি ভেসে আসছে। আর এ ফল এত মিষ্টি এবং উপাদেয় ছিল যে, ক্ষুধার্তলোক খেলে সাথে সাথে ক্ষুধা মিটে যেত, পিপাসিত লোক খেলেও সাথে সাথে পিপাসা দূর হয়ে যেত। এমনকি কোনো অসুস্থ লোক খেলেও তার রোগ দূর হয়ে যেত।

এ বৃক্ষটির নাম রাখা হয়েছিল “মুবারাকা”। বহুদিন পর্যন্ত দূর-দূরান্তের রুগীরা এসে এ ফল খেয়ে আরোগ্য লাভ করেছে। (শাওয়াহিদুন নবুওয়াত- ৮৭ পৃ.)

ছাগলের বাচ্চা ও অল্প আটা-

পঞ্চম হিজরির কথা। মক্কার কাফির মুশরিক কুরাইশরা আরবের বিভিন্নগোত্রের দশ হাজার সৈন্যের এক বিশাল বাহিনী নিয়ে মাদিনা আক্রমণের উদ্দেশ্যে রওনা হলে, রাসূল (সা.) তাঁর সাহাবি সালমান ফার্সি রা. এর পরামর্শে মাদিনার চতুর্দিকে বাংকার বা খন্দক খননে কাজে সকল সাহাবীদেরকে নিয়ে ও নিজেও সেই কাজে যোগ দিলেন। নবী (সা.) ও সাহাবীগণ একাধারে তিন দিন কাজ করার কারণে কারও পেটে কোনো খাবার পৌঁছেনি।

সাহাবি আবু তালহা রা. বলেন, আমরা আমাদের ক্ষুধার যন্ত্রণায় পেটে একটি করে পাথর বেধে রাখার কথা নবী (সা.)’কে জানালে তিনি নিজের পেটের ওপরের কাপড় তুলে দেখালেন যে, সেখানে দুটি পাথর বাঁধা আছে।

আগের পর্ব পড়তে : মুহাম্মদ (সা.) এর অলৌকিক নিদর্শন বা মোজেজা (৪র্থ পর্ব)

সাহাবি জাবির রা. নবী (সা.) এর এ অবস্থা দেখে বাড়িতে চলে আসলেন এবং তিনি তাঁর ছোট একটি ছাগলের বা বকরির বাচ্চা জবেহ্ করলেন এবং ঘরে রাখা আড়াই কেজি পরিমাণ যব পিষে আটা তৈরি করলেন। এরপর জাবির রা. নবী (সা.) এর কাছে এসে গোপনে কয়েকজন ঘনিষ্ঠ সাহাবিকে সাথে নিয়ে তাঁর বাড়িতে আহার করার জন্য দাওয়াত দিলেন। আল্লাহর রাসূল (সা.) জাবির রা. এর গোপন দাওয়াতের কথা সমস্ত সাহাবিদের মাঝে ফাঁস করে দিলেন।

যথাসময়ে রাসূল (সা.) সকল সাহাবিদেরকে নিয়ে জাবির রা. এর বাড়িতে উপস্থিত হলেন। মাত্র আড়াই কেজি আটা দিয়ে রুটি তৈরি করা হচ্ছিল আর জবেহকৃত ছোট ছাগলের বাচ্চার গোশতের হাড়ি চুলার ওপরে বসানো ছিল। রাসূল (সা.) এসে এ সব ঢেকে রাখতে বললেন। আহারের সময় বরকতের নবী নিজের হাতে রুটিগুলো টুকরো টুকরো করে গোশতের মধ্যে মিশিয়ে পর্যায়ক্রমে সাহাবিদের খেতে দেন।

এক হাজার ক্ষুধার্ত সাহাবীকে আড়াই কেজি আটার তৈরিকৃত রুটি ও ছোট্ট একটি ছাগলের বাচ্চার ভুনা গোশত দিয়ে আহার করানোর পরেও নবী (সা.) জাবির রা. এর স্ত্রীকে বললেন, তুমি খেয়ে নাও আর যাদের বাড়িতে হাদিয়া পাঠানোর মনে করও পাঠিয়ে দাও। কেননা লোকেরা আজ খুব ক্ষুধার্ত। (সহিহ বুখারী, সহিহ মুসলিম, আর-রাহীকুল মাখতুম- ৩৩৫পৃ.)

সাহাবি জাবির রা. এর বাড়ির খাদ্যে এই প্রবৃদ্ধি ও বরকতের ঘটনাটি রাসূল (সা.) এর নবুওয়াতের অলৌকিক নিদর্শন।

কাটা হাত জোড়া লাগা-

বদর প্রান্তে বদরের যুদ্ধের দিন খুবাইর রা. বীরত্বের সাথে লড়াই করেন। প্রচণ্ড যুদ্ধের মাঝে উমাইয়া ইবনে খালফ খুবাইব রা. এর ওপর এমন আক্রমণ করেন যে, তাতে তাঁর একখানা হাত কাঁধ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। রাসূল (সা.) তাঁর কাটা হাতখানি যথাস্থানে প্রতিস্থাপন করলেন এবং দুআ করলেন।

আল্লাহ সুবহানাহুওয়া তাআলা রাসূল (সা.) এর দুআ কবুল করলেন এবং খুবাইব রা. এর কাটা হাতখানি জোড়া লাগিয়ে দিলেন। (শাওয়াহিদুন নবুওয়াত- ৯৭ পৃ.)

এছাড়াও হাদীস গ্রন্থসমূহে নবী (সা.) এর অসংখ্য অলৌকিক নিদর্শন বা মোজেজা উল্লেখ আছে, যা সকল মুসলিম নর-নারীদের জানা নৈতিক দায়িত্ব। আমরা বিভিন্ন সময়ে তা আলোচনা করব ইনশাআল্লাহ।

লেখক : মাওলানা আখতারুজ্জামান খালেদ, ইমাম ও খতীব।

প্রচলিত কুসংস্কারের বিরুদ্ধে ধর্মীয় ব্যখ্যা, সমাজের কোন অমীমাংসিত বিষয়ে ধর্মতত্ত্ব, হাদিস, কোরআনের আয়াতের তাৎপর্য কিংবা অন্য যেকোন ধর্মের কোন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, সর্বপরি মানব জীবনের সকল দিকে ধর্মের গুরুত্ব নিয়ে লিখুন আপনিও- [email protected]
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড