• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৭ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

মুহাম্মদ (সা.) এর অলৌকিক নিদর্শন বা মোজেজা (১ম পর্ব)

  অধিকার ডেস্ক    ১২ নভেম্বর ২০১৮, ১৪:২০

রাসূল
ছবি : প্রতীকী

মুহাম্মদ (সা.) নবী হিসেবে প্রেরিত হওয়ার পূর্বে পূববর্তী কিতাবসমূহে লিখিত তাঁর গুণাবলি-

১। কা’ব বলেন, আমরা তাওরাতে লিখিত পেয়েছি যে, মুহাম্মদ (সা.) কঠোর স্বভাবের হবেন না। নির্দয় হবেন না। হাট-বাজারে শোরগোলকারী হবেন না। ববং তিনি ক্ষমা ও মার্জনাকারী হবেন। মন্দ আচরণের প্রতিদানে মন্দ আচরণ করবেন না। আর তাঁর উম্মতগণ প্রত্যেক উচ্চ ভূমিতে আরোহণকালে মহান আল্লাহর অধিক প্রশংসা ও বড়ত্ব উচ্চারণকারী হবেন। তারা সকল অবস্থানেই আল্লাহর প্রশংসা করবেন।

তারা ‘ইযার’ বা লুঙ্গির নিন্মাংশ পায়ের গোছার অর্ধেক বরাবার পরিধান করবেন। তাদের মোয়াজ্জিন আকাশ পরিমন্ডলে আজান ছড়িয়ে দিবেন। তাদের যুদ্ধের সারি ও নামাজের সারি একই রূপ হবে। তাদের রাত্রের নামাজের কান্নার আওয়াজ মৌমাছির গুন গুন আওয়াজের মত হবে।

আর তাঁর জম্ম হবে মক্কায় ও তিনি হিজরত করবেন ত্বয়্যিবায় (মদীনায়) এবং তার রাজ্য হবে সিরিয়া পর্যন্ত। (সূনানূ দারিমী,হাঃ- ৫, ফাতহুল বারী-৮/৫৮৫)

২। রাসূল (সা.) জম্মগ্রহণ করার পর তাঁর মাতা তাঁর দাদা আব্দুল মোত্তালিবকে সু-সংবাদ পাঠালেন। আব্দুল মোত্তালিব অত্যন্ত খুশি হয়ে শিশু মোহাম্মদ (সা.) কে ক্বাবা গৃহে নিয়ে আসলেন এবং দু’আ করলেন। অতপর তিনি তাঁর নাম ‘মুহাম্মদ’ রাখলেন। ইতোপূর্বে কেউ কখনো এমন নাম রাখেন নাই। আরবের রীতি অনুযায়ী সপ্তম দিনে আব্দুল মোত্তালিব তাঁর নাতির খতনা করালেন। (ইবনে হিশাম- ১/১৫৯ - ৬০)

৩। ঐতিহাসিক ইবনু সা’দ স্বীয় তাবাকাতে এবং ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রাঃ. স্বীয় মুসনাদে প্রখ্যাত সাহাবী ইরবায ইবনে সারিয়া থেকে সহীহ সনদে রাসূল (সা.) এর মাতা আমেনার বক্তব্য উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন, যখন মুহাম্মদ (সা.) ভূমিষ্ট হয়েছেন, তখন তাঁর দেহ থেকে একটি উজ্জ্বল জ্যোতি বা আলোকরশ্মি বিচ্ছুরিত হয়। যে জ্যোতির আলোতে সিরিয়ার প্রাসাদগুলো উজ্জ্বল উদ্ভাসিত হয়ে পড়ে এবং তা মক্কা থেকে দিব্যি চোখে পরিদৃষ্ট হয়। (মুসনাদে আহমদ- ৪/১২৮ পৃঃ)

৪। যাবির ইবনে সামুরা, রাঃ. বলেন, নবী (সা.) বলেছেন, আমি নবী হিসেবে প্রেরিত হওয়ার পূর্ব থেকেই মক্কার একটি পাথরকে আমি চিনি যে, আমাকে সালাম দিত, নিশ্চয় আমি সেটিকে এখনো চিনি। (সহীহ মুসলিম,হা- ২২৭৭)

৫। জালাহামা ইবনে আরফাতা বলেন, আমি মক্কায় আসলাম, তখন চারিদিকে দুর্ভিক্ষ চলছিল। অনাবৃষ্টির কারণেই সেই দুর্ভিক্ষের সৃষ্টি হয়েছিল। কুরাইশের লোকেরা বৃষ্টির জন্য দু‘আ করতে আবু তালেবের নিকট উপস্থিত হয়ে আবেদন করল, তখন তিনি একটি ছোট বালককে সঙ্গে নিয়ে বের হলেন।

বালকটিকে দেখে মেঘে আবৃত সূর্যের ন্যায় মনে হচ্ছিল। আবু তালেব বালকটিকে নিয়ে কা’বা গৃহের সামনে গেলেন এবং বালকটির পিঠ কা’বা গৃহের দেওয়ালের সাথে লাগিয়ে দিলেন। অতপর বালকটি তার চাচা আবু তালেবের হাতের মধ্যে নিজ হাত রাখিলেন, ঐ সময় আকাশে এক টুকরা মেঘও ছিল না। কিছুক্ষণের মধ্যে পুরো আকাশ মেঘে ছেয়ে গেল এবং মুষলধারে বৃষ্টিপাত শুরু হলো। ফলে শহর-গ্রাম, মাঠ-প্রান্তর উর্বর হয়ে গেল। (মুখতাসারুস সীরাত- ১৫-১৬ পৃ)

৬। মুহাম্মদ (সা.) এর বয়স যখন ১২ বৎসর, তখন তাঁর চাচা আবু তালেব তাঁকে সঙ্গে নিয়ে ব্যবসার উদ্দেশ্যে সিরিয়া যাত্রা করনে। আবু তালেব ইরাকের বসয়ার পৌছে তাবু স্থাপন করেন। বসরাতে ‘‘জারজিস” নামক জনৈক পাদ্রী ছিলেন, তার ডাক নাম ছিল বুহাইরা । তাবু স্থাপনের পর পাদ্রী বুহাইরা আবু তালেবের কাছে আসলেন।

অথচ বুহাইরা তার গির্জা থেকে সাধারণত বের হতেন না। তিনি মুহাম্মদ (সা.) কে দেখে চিনে ফেললেন এবং মুহাম্মদ (সা.) এর হাত ধরে বললেন, ইনি জগতের সর্দার। আল্লাহ তাআলা ওনাকে রাহমাতুল্লিল আল-আমিন রূপে প্রেরণ করেছেন। আবু তালেব এ কথা শুনে পাদ্রী বুহাইরাকে জিজ্ঞেস করলেন, আপনি তা কীভাবে বুঝলেন?

পাদ্রী বুহাইরা বললেন, এই স্থানে আপনাদের আগমনের পর এই বালকের মর্যাদায় ও সম্মানে এখানকার সকল বৃক্ষ-লতা এবং পাথর-কঙ্কর সিজদায় লুটিয়ে পড়েছে। আল্লাহর নবী ব্যতিত এরা কাউকে সিজদা করে না। তাছাড়া তাঁর কাঁধের নিচে ছেফ ফলের সদৃশ্য মোহরে নবুয়াতের চিহ্নিত রয়েছে।

আমরা আমাদের ‘‘ ইঞ্জিল গ্রন্থ” লিখিত পেয়েছি। আপনি ওনাকে মক্কায় পাঠিয়ে দিন, কোনো অবস্থাতেই সিরিয়ায় নিয়ে যাবেন না। কেননা ইহুদিরা ওনার ক্ষতি করতে পারে। পাদ্রী বুহাইারার পরামর্শে চাচা আবু তালেব কিছু ভৃত্যসহ মুহাম্মদ (সা.) কে মক্কায় পাঠিয়ে দেন। (ইবনে হিশাম- ১/১৮০-৮৩)

চলবে...

লেখক : মাওলানা আখতারুজ্জামান খালেদ, সাবেক ইমাম ও খতীব।

প্রচলিত কুসংস্কারের বিরুদ্ধে ধর্মীয় ব্যখ্যা, সমাজের কোন অমীমাংসিত বিষয়ে ধর্মতত্ত্ব, হাদিস, কোরআনের আয়াতের তাৎপর্য কিংবা অন্য যেকোন ধর্মের কোন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, সর্বপরি মানব জীবনের সকল দিকে ধর্মের গুরুত্ব নিয়ে লিখুন আপনিও- [email protected]
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড