ধর্ম ও জীবন ডেস্ক
একাকী নামাজ আদায়ের চেয়ে জামাতে নামাজ আদায়ের গুরুত্ব, তুলনামূলক শ্রেষ্ঠত্ব এবং এর কল্যাণকর প্রভাব অনেক বেশি। যে কারণে রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাদের জামাতে নামাজ আদায়ের জন্য জোর তাগিদসহ আদেশ করেছেন। এখানে জামাতে নামাজ আদায়ের পাঁচটি শ্রেষ্ঠত্ব ও কল্যাণকর প্রভাব নিয়ে সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো-
সাতাশ গুণ বেশি প্রতিদান
রাসুল (সা.) থেকে সহিহ হাদিসের সূত্রে বর্ণনা করা হয়েছে, জামাতে নামাজ আদায়ের মাধ্যমে একাকী নামাজের তুলনায় সাতাশ গুণ অধিক প্রতিদান পাওয়া যাবে। অপর এক বর্ণনায় পঁচিশ গুণ অধিক প্রতিদানের কথা বলা হয়েছে।
সাতাশ বা পঁচিশ যেটিই হোক না কেন, একাকী নামাজের তুলনায় জামাতে নামাজ অধিক গুরুত্বপূর্ণ।
ফেরেশতাদের দুয়া
হজরত আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি অযু অবস্থায় তার নামাজের স্থানে যতক্ষণ অবস্থান করে, ফেরেশতারা তার জন্য ততক্ষণ পর্যন্ত দুয়া করতে থাকে। তারা দুয়া করে : হে আল্লাহ! তাকে ক্ষমা করুন। হে আল্লাহ! তাকে দয়া করুন।’
সুতরাং আপনি যদি শুধু অজু করে মসজিদেও অবস্থান নেন, ফেরেশতারা আপনার জন্য দুয়া করতে থাকবে।
মুনাফেকি থেকে সুরক্ষা
হজরত আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘মুনাফেকদের জন্য সবচেয়ে কঠিন নামাজ হলো ইশা ও ফজরের নামাজ। যদি তারা এর প্রতিদান সম্পর্কে জানত তবে হামাগুড়ি দিয়ে হলেও নামাজে এসে অংশগ্রহণ করত।’
এই হাদিসে রাসুল (সা.) মূলত আমাদের সতর্কতা দিয়ে বলেছেন, এই দুই ওয়াক্তের নামাজ যাদের পক্ষে আদায় করা কঠিন তাদের মনে নিফাকের প্রভাব রয়েছে। সুতরাং এই দুই নামাজ জামাতে আদায়ের মাধ্যমে আমরা আমাদের মনকে নিফাক থেকে মুক্ত করতে পারি।
পূর্ণ রাত নামাজ আদায়ের সওয়াব
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি জামাতের সাথে ইশার নামাজ আদায় করবে, সে যেন অর্ধেক রাত নামাজে অতিবাহিত করল। আবার যে ব্যক্তি ইশা ও ফজরের নামাজ জামাতের সাথে আদায় করল সে যেন সম্পূর্ণ রাত নামাজে অতিবাহিত করল।’
সুতরাং জামাতে ইশা ও ফজর আদায়ের মাধ্যমে আমরা পূর্ণ রাত নামাজ আদায়ের মতো বিশাল প্রতিদান আল্লাহর পক্ষ থেকে লাভ করতে পারি।
গুনাহ মাফ ও মর্যাদা বৃদ্ধি
হজরত আবু সাইদ আল-খুদরি (রা.) বলেছেন, একবার রাসুল (সা.) তার সমবেত সাহাবাদের প্রশ্ন করেন, ‘আমি কি তোমাদের এমন একটি কাজের কথা বলব না, যার মাধ্যমে আল্লাহ তোমাদের গুনাহকে মাফ করবেন এবং তোমাদের নেকিকে বাড়িয়ে দেবেন?’
সকলে বলল, ‘অবশ্যই ইয়া রাসুলুল্লাহ!’
রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, ‘প্রতিবন্ধকতা থাকলেও যথাযথভাবে অজু করে পায়ে হেঁটে মসজিদে গিয়ে জামাতে নামাজ আদায়ের জন্য অপেক্ষা করতে থাকা।’
সুতরাং, জামাতে নামাজ আদায়ের মাধ্যমে আমরা আমাদের গুনাহগুলোকে আল্লাহর কাছ থেকে ক্ষমা করিয়ে নিতে এবং তার দৃষ্টিতে আমাদের মর্যাদাকে বাড়িয়ে নিতে পারি। আল্লাহ আমাদের নিয়মিত জামাতে নামাজ আদায়ের তাওফিক দান করুন। আমিন।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড