মুনশি আমিনুল ইসলাম
রজব মাসের ২৭ তারিখ রাতকে লাইলাতুল মিরাজ বা শবে মিরাজ বলা হয়ে থাকে। কোনো কোনো পুস্তক-পুস্তিকায় স্পষ্টভাবে লেখা রয়েছে এবং সাধারণ জনগণের মাঝে এটা প্রসিদ্ধ যে, মিরাজের ঘটনা রজব মাসের ২৭ তারিখে সংঘটিত হয়েছিল। অথচ এ কথাটি শুধু ইতিহাসের একটি বর্ণনার ভিত্তিতে প্রসিদ্ধি লাভ করেছে; যার সনদ সহিহ নয়।
অথবা এটি কোনো নির্ভরযোগ্য ইতিহাস দ্বারাও প্রমাণিত নয়, এমনকি হাদিস শরিফ কিংবা কোনো সাহাবির উক্তি দ্বারা তো নয়ই। নির্ভরযোগ্য সূত্রে শুধু এটুকুই পাওয়া যায়- মিরাজের ঘটনা হিজরতের এক বা দেড় বছর আগে সংঘটিত হয়েছিল। কিন্তু মাস, দিন, তারিখের ব্যাপারে নির্ভরযোগ্য কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় না। তাই অনেক আলেম বলেছেন, মিরাজের রাত নিঃসন্দেহে একটি বরকতময় রাত। কিন্তু এই রাতে যেহেতু বিশেষ কোনো আমল বা ইবাদত উম্মতের জন্য বিধিবদ্ধ হয়নি এ জন্য এর দিন-তারিখ সুনির্দিষ্টভাবে সংরক্ষিত থাকেনি। (সূত্র: আল মাওয়াহিবুল লাদুন্নিয়াহ ও শরহুল মাওয়াহিবিল লাদুন্নিয়্যাহ ৮/১৮-১৯; আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, ইমাম ইবনে কাছির ২/৪৭১; লাতাইফুল মাআরিফ, ইমাম ইবনে রজব ১৩৪; ইসলাহি খুতুবাত, আল্লামা মুহাম্মাদ তাকি উসমানি ১/৪৬-৪৮)।
পবিত্র কুরআনে বর্ণিত চার সম্মানিত মাসের একটি যেহেতু রজব মাস, সুতরাং এর পুরো সময়টাই বরকতময়। মহান আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয় আসমানসমূহ ও জমিন সৃষ্টির দিন থেকে আল্লাহ তায়ালার বিধান ও গণনায় মাস বারোটি। তন্মধ্যে চারটি সম্মানিত। এটিই সুপ্রতিষ্ঠিত বিধান; সুতরাং এর মধ্যে তোমরা নিজেদের প্রতি অত্যাচার করো না।’ (সুরা তাওবা : ৩৬)।
তাই রজব মাসের সবকয়টি দিন ও সবকয়টি রাতেই ইবাদত-বন্দেগির ব্যাপারে যত্নবান হওয়া উচিত। তবে এ মাসের ২৭ তারিখ যেহেতু শবে মিরাজ হিসেবে প্রমাণিত নয়, তাই এ রাতকে বিশেষ ইবাদতের জন্য নির্দিষ্ট না করা এবং এর সাথে সংশ্লিষ্ট প্রথাসমূহকে ত্যাগ করা উচিত।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড