মুনশি আমিনুল ইসলাম
বিজ্ঞানের উন্নতির এই যুগে দীনি দাওয়াতের অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার। আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে অল্প সময়ে, কম কষ্টে বিশ্বের অসংখ্য মানুষের কাছে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছে দেওয়া খুব সহজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উৎকর্ষের ফলে পৃথিবী এখন বলতে গেলে হাতের মুঠোয়। বিজ্ঞানের কল্যাণে গোটা বিশ্বই এখন একটি গ্রামে (global village) পরিণত হয়েছে।
তথ্যপ্রযুক্তির প্রসারমান এ যুগে ধর্মবিদ্বেষীরা এসব প্রযুক্তিকে ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করছে। তারা তাদের ওয়েবসাইট, ফেসবুক, টুইটার ও ইন্টারনেটের অন্যান্য মাধ্যমে মুসলমানদের কাছে তাদের ভ্রান্ত মতাদর্শ ব্যাপকভাবে প্রচার করছে। অথচ আমরা এখনো দাওয়াতি কজে মসজিদের মিম্বর, বইপুস্তক, ওয়াজ-মাহফিল ও তালিমি জলসার মধ্যে সীমাবদ্ধ। পত্র-পত্রিকার মতো আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে দীনি দাওয়াত পৌঁছানোয় আমরা এখনো বলা যায় পিছিয়ে আছি; পুরোদমে এগিয়ে আসতে পারিনি।
ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, নবি-রাসুলগণ তাদের যুগে তৎকালীন প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে মহান আল্লাহর বিধান মানুষের কাছে প্রচার করেছেন। মুসা (আ.) এর যুগে জাদুর প্রভাব ছিল অধিক। তাই মুসা (আ.) সে যুগের প্রেক্ষাপটে আল্লাহর দেওয়া মুজেযা ব্যবহার করে ফেরাউন ও তার সম্প্রদায়ের কাছে দ্বীনের দাওয়াত দিয়েছেন। ফলে অসংখ্য জাদুকর আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছিল। ঈসা (আ.)-এর সময়ে চিকিৎসা বিদ্যার ব্যবহার ছিল বেশি। তাই তিনি আল্লাহপ্রদত্ত চিকিৎসা বিদ্যার ব্যবহারের মাধ্যমে দীনি দাওয়াত দিয়েছেন। সর্বশেষ আমাদের নবি মুহাম্মদ (সা.)-এর সময়ে সাহিত্যের প্রভাব ছিল খুব বেশি। তাই তিনি আরবি সাহিত্যের সর্বোচ্চ মানের কিতাব আল কুরআনের মুজেযা দেখিয়ে মানুষজনকে আল্লাহর সুমহান বাণীর প্রতি আকৃষ্ট করেছেন।
বলা যায়, নবি-রাসুলগণ সমকালীন বিদ্যাকে কাজে লাগিয়েই মানবজাতির কাছে সহজ উপায়ে মহান প্রভুর পরিচয় তুলে ধরে ইসলামের পথে দাওয়াত দিয়েছেন। তাওহিদ ও ইবাদতের আদেশ দিয়েছেন এবং শিরক ও বিভিন্ন পাপকর্ম থেকে নিষেধ করেছেন। মহান আল্লাহ বলেন, ‘যারা অনুসরণ করে বার্তাবাহক উম্মি নবির- যার উল্লেখ তারা তাদের কাছে রক্ষিত তাওরাত ও ইনজিলে লিপিবদ্ধ পায়, যিনি তাদের সৎকাজের নির্দেশ দেন এবং অসৎকাজ থেকে নিষেধ করেন।’ (সুরা আরাফ :১৫৭)
অন্যত্র তিনি বলেন, ‘আপনি মানুষকে দাওয়াত দিন আপনার রবের পথে হিকমত ও উত্তম ওয়াজের মাধ্যমে এবং তাদের সাথে তর্ক করুন উত্তম পদ্ধতিতে। নিশ্চয় আপনার রব, তাঁর পথ ছেড়ে কে বিপথগামী হয়েছে, সে সম্বন্ধে তিনি বেশি জানেন এবং কারা সৎপথে আছে তাও তিনি ভালোভাবেই জানেন।’ (সুরা নাহল :১২৫)
অতএব দীনি দাওয়াতের পদ্ধতি একদিকে যেমন যুগোপযোগী ও উন্নতমানের হওয়া দরকার, অন্যদিকে সমকালীন বাতিল শক্তির মুকাবিলা করার মতো যোগ্যতা, দক্ষতা ও কৌশল প্রয়োগের সক্ষমতা থাকাও জরুরি। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর তোমাদের মধ্যে এমন একটি দল যেন থাকে যারা কল্যাণের দিকে আহ্বান করবে এবং সৎকাজের নির্দেশ দেবে ও অসৎকাজে নিষেধ করবে; আর তারাই সফলকাম।’ (সুরা আলে-ইমরান :১০৪)
এ প্রসঙ্গে রাসুলে কারিম (সা.) বলেন, ‘আমার কাছ থেকে একটি আয়াত হলেও পৌঁছিয়ে দাও।’ (সহিহ বুখারি :৩৪৬১)
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড