আহমাদুল কবির, মালয়েশিয়া প্রতিনিধি
দুরারোগ্য ব্যধিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর পর টানা ১৭ দিন যাবত মালয়েশিয়ার একটি হাসপাতালের মর্গে পড়ে আছে বাংলাদেশির মরদেহ। পরিবার অত্যন্ত দরিদ্র হওয়ার কারণে লাশটি দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার খরচ জোগাতে না পারায় মালয়েশিয়ার মাটিতে তাকে দাফনের সম্মতি দিয়েছে পরিবার।
জানা গেছে, জন্ডিস ও লিভারের রোগে গত ১৬ অক্টোবর মো. জহিরুল ইসলাম জবু নামে গাইবান্ধার ওই প্রবাসী মালয়েশিয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থাতে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত জহিরুল ইসলাম গাইবান্ধা জেলার সদর উপজেলার বিষ্ণুপুর এলাকার কবির পাড়া গ্রামের মৃত হোসেন আলী মুন্সির পুত্র। জহিরুল কোনো বিয়েশাদি করেনি এবং তার মা বাবা মারা গেছেন আগেই।
অনেক খোঁজাখুঁজির পর অবশেষে দেশে থাকা জহিরুল ইসলাম তার ভাইয়ের মেয়ে রোমানা আক্তারের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি তাদের অসহায়ত্বের কথা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, আমার চাচা জহিরুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে মালয়েশিয়ায় অবস্থান করছেন এবং আমাদের সাথে কোনো যোগাযোগও করেনি। এই অবস্থায় তার লাশ দেশে আনতে গেলে প্রায় ১ লাখ টাকার প্রয়োজন কিন্তু এতো টাকা সংগ্রহ করার সামর্থ্য আমাদের পরিবারের নেই।
মালয়েশিয়া প্রবাসী মো. শাহাদাত হোসেন দৈনিক অধিকারের এ প্রতিবেদককে জানান, গেল দুই সপ্তাহ ধরে জহিরুল ইসলামের মরদেহ দেশটির ইপুহ এলাকার লাজা হাসপাতালের মর্গে পড়ে আছে। তার কোনো সঠিক ঠিকানা বা তার পরিচয় উদ্ধার করা সম্ভব হচ্ছিল না। কারণ তার সাথে যে পাসপোর্টের ফটোকপি পাওয়া গেছে সেখানে তার বাড়ি নরসিংদীর সদরে অবস্থিত বলে উল্লেখ থাকলেও সেই ঠিকানায় এই নামে কাউকে পাওয়া যায়নি। এরপর জানা যায়- জহিরের বাড়ি গাইবান্ধা জেলায়।
আরও পড়ুন : জাতীয় যুব দিবসে ইয়ুথ হাবের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত
তিনি আরও বলেন, হাসপাতালে কর্মরত থাকার সুবাদে আমি জানতে পারি ইপুহ লাজা হাসপাতালের মর্গে একজন বাংলাদেশির লাশ পড়ে আছে যার স্বজনের কোনো খোঁজ নেই। তখন আমি অনেক খোঁজাখুঁজি করে জহিরের আসল ঠিকানা উদ্ধার করি। তার ঠিকানা উদ্ধার করে তার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করি কিন্তু তাদের আর্থিক সামর্থ্য না থাকায় লাশ মালয়েশিয়ায় দাফন করার সম্মতি দেয়। পরিবার লাশ না নিলে মালয়েশিয়ায় কোনো এনজিওর মাধ্যমে মরদেহটির দাফন করা হবে। যদিও জহিরুল গত ২৭ বছর ধরে মালয়েশিয়াতে অবস্থান করছেন। তার সাথে কোনো ভ্যালিড পাসপোর্ট বা ভিসার কোনো সঠিক ডকুমেন্টস পাওয়া যায়নি। সে কনস্ট্রাকশন সেক্টরে কাজ করত।
জহিরের ভাতিজি রোমানা আক্তার জানিয়েছেন, যদি কোনো হৃদয়বান ব্যক্তি মরদেহ দেশে পাঠানোর খরচ বহন করেন তাহলে তারা বিমানবন্দর থেকে তার লাশ গ্রহণ করবেন।
আরও পড়ুন : নিখোঁজের ১৮ দিন পর ক্লিও স্মিথকে জীবিত উদ্ধার
বিষয়টি নিয়ে কুয়ালালামপুরস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, সরকারিভাবে এই মরদেহ পাঠানোর কোনো সুযোগ নেই। কিন্তু তার পরিবার যদি ইউএনও বা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে আবেদন করে তাহলে সরকার রাজি হলে তখন সরকারি খরচে লাশ দেশে পাঠানো যেতে পারে।
ওডি/কেএইচআর
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড