• বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৯ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

বরং জাতীয় সংসদ ভবনে বসে মজবুত পরিকাঠামো তৈরি করুন

  রহমান মৃধা

১০ আগস্ট ২০২৩, ১৫:৪৯
বরং জাতীয় সংসদ ভবনে বসে মজবুত পরিকাঠামো তৈরি করুন
ফাইজারের প্রোডাকশন অ্যান্ড সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্টের সাবেক পরিচালক রহমান মৃধার ‘আমার বাংলাদেশ’ ও ‘জাগো বাংলাদেশ’ বইয়ের প্রচ্ছদ (ছবি : সংগৃহীত)

আমরা অনেকেই অনেক সময় বিশ্বের রাজনীতি এবং অর্থনীতিতে আমেরিকার এত বাহাদুরি কেন এ বিষয়ে আর কিছু না হোক আলোচনা করি। আলোচনা করি তাদের জীবনধরণের ওপর, বিশ্বের সর্বত্র তাদের নাক গলানোর ওপর। নিন্দা করি তাদের প্রভাব বিস্তারের ওপর। এমনকি নানা দেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার ঘটনার উপর।

আমরা পরনিন্দা এবং পরচর্চা এ দুটো কাজে বেশ পাকা কিন্তু আমরা পরিপক্কতা লাভ করতে পারছি বলে মনে হচ্ছে না, যার ফলে বিশ্ববাসীর কাছ থেকে গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করতেও হিমশিম খেতে হচ্ছে। আমরা কাজে না তবে কথায় পাকা, যেমন ২০৪১ সালে কী করবো বা না করবো সরকার মহলে বলছি।

২০৪১ সালের সেই স্বপ্নীল পরিকাঠামো যদি একটু ঘেটে দেখি তাহলে কী এমন নতুনত্ব দেখা যাবে সেখানে? তবে চলুন ফিরে যাই আমেরিকার কনস্টিটিউশন এবং ইনস্টিটিউশনগুলোতে। দেখুন প্রায় ৩৫০ বছরের ইতিহাস। সেই জর্জ ওয়াশিংটনের সময় থেকে গণতন্ত্রের যে মন্ত্রতন্ত্র প্রতিস্থাপন করেছে সেটার রদবদল এক থেকে দুইবারের বেশি হয়নি।

জর্জ ওয়াশিংটন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম রাষ্ট্রপতি। তাকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গঠনের প্রধান বলে উল্লেখ করা হয় এবং তিনি তার জীবদ্দশায় এবং এখনো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম জাতির জনক হিসেবে স্বীকৃত। (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতির জনক একজন নন, বেশ কয়েকজন। আমাদের জাতির জনক একজন হলেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা সংগ্রামে প্রধান যে কয়জন ভূমিকা রেখেছিলেন তাদের প্রত্যেককেই মার্কিনিরা জাতির জনকের আসনে বসিয়েছে)।

জর্জ ওয়াশিংটন দুইবারের বেশি রাষ্ট্রপতির পদ ধরে রাখেননি যদিও তাকে দেশবাসী অনুরোধ করেছে। উত্তরে তিনি মোটামুটি এভাবে বলেছেন- আমি আট বছরে যা করতে পারিনি তা পরবর্তীতে আমিই যে ভালো পারবো তার নিশ্চয়তা কী? বরং অন্যদের সে সুযোগ দেওয়া হোক। সেই থেকে এখনও এক ব্যক্তি দুইবারের বেশি রাষ্ট্রপতির পদ ধরে রাখতে পারেননি। ব্যতিক্রম হয়েছে প্রেসিডেন্ট রুসভেল্টের সময় এবং সেটা ছিল যুদ্ধের কারণে। তারপর থেকে আমেরিকার মজবুত কনস্টিটিউশন বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে সগৌরবে। আরেকটি ঘটনা যেটা গোটা বিশ্বকে চমকে দিয়েছে।

গত কয়েক বছর আগে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দেশে সামরিক পদক্ষেপ গ্রহণের হুমকির দিলে আমেরিকার সশস্ত্র বাহিনী প্রকাশ্যে জানিয়ে দিয়েছিল তারা শুধু দেশের কনস্টিটিউশনের কথায় চলে, কোনো ব্যক্তির নির্দেশনায় না। এটা সম্ভব তখনই যখন একটি দেশের অবকাঠামো মজবুত থাকে এবং সেটা অবশ্যই আমেরিকার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।

যাইহোক জর্জ ওয়াশিংটন দুটো বিষয়ের ওপর চর্চা করতেন। আর সেগুলো হলো সামরিক কৌশল এবং পশ্চিমা সম্প্রসারণ।

জর্জ ওয়াশিংটন ১৭৩২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি সে সময়ের ব্রিটিশ আমেরিকার ভার্জিনিয়ায় এক কৃষক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। জর্জ ওয়াশিংটনের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা সম্পর্কে তেমন কোনো তথ্য পাওয়া যায় না। তবে তার সময়ে ঘরে বসে প্রাইভেট টিউটরের কাছেই পড়াশোনা চলত।

আবার কেউ কেউ বড়জোর স্থানীয় প্রাইমারি স্কুলে পড়াশোনার সুযোগ পেত। তবে জর্জের বাবার মৃত্যুর পর তার পড়াশোনার সুযোগ আরো হারিয়ে যায়। প্রথাগত শিক্ষার ইতি ঘটে ১৫ বছর বয়সেই। তার যৌবনে তিনি উপনিবেশিক মিলিশিয়ার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ লাভ করেন এবং ফরাসি ও ভারতীয় যুদ্ধের প্রথম ভাগ পর্যন্ত এই পদে ছিলেন।

১৭৭৫ সালে দ্বিতীয় কন্টিনেন্টাল কংগ্রেস মার্কিন বিপ্লবের সময় তাঁকে কন্টিনেন্টাল আর্মির সর্বাধিনায়ক পদে পদোন্নতি প্রদান করা হয়।

১৭৮৯ সালের ৩০ এপ্রিল নিউইয়র্কের ওয়াল স্ট্রীট-এর ফেডারেল হলের ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে জর্জ ওয়াশিংটন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। দুই মেয়াদে রাষ্ট্রপতি থাকার পর তিনি অবসরে যান। দুই মেয়াদে এই অবসরের রীতি ১৯৪০ সালের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ফ্রাঙ্কলিন ডি. রুজভেল্ট তৃতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত চলে।

কথাগুলো তুলে ধরার যে কারণ সেটা হলো আমরা কেন এমন একটি ভাবনা নিয়ে আলোচনা করি না যেখানে যে সরকার আসুক, যেই ক্ষমতায় আসুক না কেন সেটা যেন মজবুত একটি রীতিনীতির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে, যাকে বলে হাকিম নড়বে কিন্তু হুকুমের পরিবর্তন হবে না। হচ্ছে কি সেটা বাংলাদেশে? সরকারের পরিবর্তন হওয়া মানে দেশের মানুষ থেকে শুরু করে রাস্তা ঘাটের পরিবর্তন। যে দেশে এমন একটি ভয়ংকর দুর্দশা, সেখানে কি একটা সুষ্ঠ নির্বাচন হওয়া সম্ভব?

বর্তমান সরকারের সঙ্গে যারা জড়িত তারা জানে নতুন সরকার আসলে তাদের পরিণতি কী হবে। কারণ দেশ তো সংবিধান বা ইনস্টিটিউশনের নিয়মকানুন মেনে চলে না, চলে একনায়কতন্ত্র শাসনের ওপর। যার ফলে দেশের পরিকাঠামোতে কখনো কোনো রকম স্থিতিশীলতা আসেনি, আসবে না যদি সঠিক গণতন্ত্রের পুরোপুরি চর্চা না করা হয়।

অতীতে ব্রিটিশ, পাকিস্তান লুটপাট করেছে দেশের পণদ্রব্য। দেশ স্বাধীন হবার পর দুর্নীতি এবং অনীতি দেশটিকে ঋণগ্রস্ত করছে। তবে সবচেয়ে যেটা ভয়ংকর রুপ ধারণ করছে দেশের পরিকাঠামো মেরুদন্ডে সেটা হচ্ছে প্রযুক্তি। বৈদেশিক টেকনোলজি আমাদের মধ্যে ঢুকে লুটপাট করছে আমাদের ব্যক্তিত্ব, রাজত্ব, বন্ধুত্ব, ক্রিয়েটিভিটি সব মূল্যবান চিন্তা শক্তির উৎসকে, বিনিময়ে পঙ্গু করছে নতুন প্রজন্মকে সারাক্ষণ গুগোল, টুইটার, ফেসবুক, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম, টিকটক, পর্ণগ্রাফের মতো রঙ তামাশার মধ্যে ব্যস্ত রেখে।

প্রযুক্তির সিন্ডিকেটের জালে জাতিকে আবদ্ধ করে ব্যবসা করছে তারা, শোষণ করছে তারা, মগজকে পরনির্ভরশীল করছে তারা আর আমরা পরনির্ভরশীল হচ্ছি দিনের পর দিন। কিন্তু ভাবটা এমন আমরা জয়ী হচ্ছি। না, মোটেই না। কারণ বহিঃশক্তির প্রভাবে আমরা হচ্ছি শাসিত। এসব বিষয় ভাবতে হবে।

শুধু দুর্নীতি বা কু-শিক্ষার পেছনে লেগে থাকলে চলবে না। বন্দুকযুদ্ধ বা খুনের পেছনে বিবেকের অবক্ষয় এবং অভাব-অনটনে জড়িত রেখে আমাদের মেরুদন্ডকে দুর্বল করা হচ্ছে সেদিকে কি খেয়াল আছে? এ সমস্ত বিষয়ের ওপর রিফ্লেক্ট না করার জন্য মূলত আইন ব্যবস্থার অবনতি, ন্যায়বিচারের অভাব বা রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার পরোক্ষ এবং প্রত্যক্ষভাবে দায়ী।

ওপরের সমস্যাগুলো শুধু যে বাংলাদেশে তা নয়। এ ধরণের সমস্যা বিশ্বের সব দুর্নীতিগ্রস্ত দেশে লক্ষণীয়।

সামাজিক নিরাপত্তা মানে তো জাতির ন্যূনতম একটি আয়ের ব্যবস্থা, চিকিৎসার ব্যবস্থা, শিশু পুষ্টির ব্যবস্থা, বেকার ভাতা, ছেলেমেয়ের স্কুলের ব্যবস্থা, বৃদ্ধের ভাতা, শান্তি এবং স্বস্তিতে বসবাস করা, জীবনের সব ধরণের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা।

অপরাধ, অপকর্ম কম বেশি পৃথিবীর সব জায়গায় রয়েছে। তবে বাংলাদেশের মতো যেসব দেশে দিনে দুপুরে মানুষ খুন, বন্দুকযুদ্ধের নামে সত্যকে ঢাকতে ক্রিমিনাল খুন, দুর্নীতি, প্রশিক্ষণের অধঃপতন, চিকিৎসায় ফাঁকি, খাবারে ভেজাল এবং সরকারের বিরুদ্ধে কিছু বললে গুম এসব চলছে।

এর মূল কারণ একটাই তা হলো এসব দেশের মানুষের জীবনে সামাজিক নিরাপত্তার কোনো ব্যবস্থা নেই। নেই কোনো শক্তিশালী সংবিধান পরিকাঠামো, নেই কোনো শক্তিশালী ইনস্টিটিউশন। আর নেই বিধায় সবাই লুটপাট করা থেকে শুরু করে যতো ধরণের অপকর্ম করার করছে এবং এ অপকর্মের সঙ্গে সারাদেশের সরকারি, বেসরকারি সব ধরণের মানুষ জড়িত।

দেশের আইন ব্যবস্থার অধঃপতন, পুলিশ বাহিনীর স্বেচ্ছাচারিতা, প্রশাসন এবং সচিবালয়ের অরাজকতা, সংসদ ভবনে অশ্লীল কথাবার্তা আর পরনিন্দা চর্চা এর জন্য দায়ী। ধর্মীয় কথা, জেল হাজতের ভয় দেখিয়ে এমন কি বন্দুকযুদ্ধে হত্যা করেও কোনো ভালো পরিবর্তন আসবে বলে ধারণা করাও ভুল হবে।

জাতির অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা, শিক্ষা এবং সর্বোপরি তাদের বাকশক্তির ওপর স্বাধীনতার নিরাপত্তা দিতে না পারলে দেশের সমস্যার পরিবর্তন হবে না। মুখে মুখে বললে হবে না যে জনগণ ক্ষমতার মালিক তাকে হাতেনাতে প্রমাণ করে দেখাতে হবে।

সরকারি, বেসরকারি কর্মচারিদের দেশের জনগণের কাছে আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে এবং সর্বোপরি জনগণ যে ক্ষমতার মালিক তা প্রমাণ করে দেখাতে হবে। বাংলাদেশের পরিবর্তন আনতে হলে জনগণের ভালোবাসা, বিশ্বাস যদি সরকার অর্জন করতে না পারে তবে দেশের আইনশৃঙ্খলা থেকে শুরু করে সামাজিক নিরাপত্তা, দুর্নীতি, খুন খারাবি, কুশিক্ষা এসবের কিছুরই পরিবর্তন হবে না।

বাংলাদেশের মানুষের কাছে গণতন্ত্রের চাবি ফিরিয়ে দিতে হবে। প্রত্যেকটি নাগরিককে সম্মানের সঙ্গে তাদের সামাজিক মৌলিক অধিকার এবং তারাই যে মাস্টার অব দি আর্ট তা প্রমাণ করে দেখাতে হবে। তাহলে সম্ভব বাংলার মানুষকে সঠিক পথে ফিরিয়ে আনা।

প্রশ্ন, আমরা কি প্রস্তুত এমন একটি চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে? আমি সুইডেনে থাকি, দেখছি এরা কিভাবে বেকার ভাতা দিয়ে বেকারত্বের সমস্যার সমাধান করছে। এখানে যদি কেউ লেখাপড়া করতে চায় তাকে সে সুযোগ দেয়া হচ্ছে। এখানে ভেজাল খাদ্যের কোনো উৎস নেই। এখানে দুর্নীতির জায়গা নেই। এখানে গণতন্ত্রের বেস্ট প্রাক্টিস হচ্ছে প্রতিক্ষণ।

সরকার দায়বদ্ধ তার মাস্টারের কাছে জবাবদিহি করতে এবং করছে। সমস্ত প্রশাসন জনগোষ্ঠীর জন্য ২৪ ঘন্টাই তাদের সেবায় নিয়োজিত। তাই স্বাভাবিকভাবে জনগণই দেশের ভালোমন্দের জন্য দায়ী।

জনগণের দায়ভার প্রশাসন নিলে কী করবে তারা? ধর্ষণ, দুর্নীতি, মানুষে মানুষ খুন, নীতিতে অনীতি ঢুকানো, খাবারে ভেজাল মেশানো এসব হয়েছে বর্তমানে দেশের বেশিরভাগ জনগণের কাজ। জনগণকে তার ক্ষমতা ফিরিয়ে দিতে হবে এবং প্রশাসনকে জনগণের পাশাপাশি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেশকে আমেরিকা, সুইডেন বা নিউজিল্যান্ড করার স্বপ্ন দেখাতে হবে এবং তাকে বাস্তবে রূপ দিতে হবে। এবং সেটা পেতে হলে প্রথম যে কাজটি করতে হবে তা হলো সামাজিক নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা এবং জাতীয় সংসদ ভবনে বসে নোংরামি রাজনীতি ছেড়ে মজবুত পরিকাঠামো তৈরি করা।

লেখক : রহমান মৃধা, সাবেক পরিচালক (প্রোডাকশন অ্যান্ড সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট), ফাইজার, সুইডেন।

[email protected]

(মতামত পাতায় প্রকাশিত লেখা একান্ত লেখকের মত। এর সঙ্গে পত্রিকার সম্পাদকীয় নীতিমালার কোনো সম্পর্ক নেই।)

চলমান আলোচিত ঘটনা বা দৃষ্টি আকর্ষণযোগ্য সমসাময়িক বিষয়ে আপনার মতামত আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। তাই, সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইলকরুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড