অধিকার ডেস্ক
দক্ষিণ এশিয়ার একটি দেশ হলো শ্রীলঙ্কা। দেশটির পূর্বাঞ্চলের পুরো এবং উত্তরাঞ্চলের অর্ধেক অংশ জুড়েই পানির ঘাটতি রয়েছে। এ কারণে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের মাধ্যমে শ্রীলঙ্কার গ্রামাঞ্চলগুলোতে পানির চাহিদা পূরণ করা হয়ে থাকে।
দেশটির গ্রামাঞ্চলে বৃষ্টির পানি ধরে রাখার জন্য বিভিন্ন ধরনের উপায় অবলম্বন করা হয়।
সম্প্রতি ঢাকায় এক কনভেনশনে যোগ দিতে এসে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ নিয়ে বিবিসি বাংলার সঙ্গে কথা বলেন শ্রীলঙ্কার বেসরকারি সংস্থা রেইন ওয়াটার হার্ভেস্টিং ফোরামের রাজেন্দ্র ডি সিলভা। তিনি জানান, গত ২৪ বছর যাবত বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের কাজ করছে শ্রীলঙ্কা।
আন্তর্জাতিক সংস্থা ওয়াটার এইড-এর উদ্যোগে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের উপায় এবং উপকারিতা নিয়ে রাজধানী ঢাকায় এই কনভেনশন আয়োজন করা হয়।
রাজেন্দ্র ডি সিলভা বলেন, গোটা শ্রীলঙ্কা জুড়ে প্রায় ৪৫ হাজার ছোট ও বড় ট্যাংক রয়েছে, যেখানে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ করা হয়। বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের জন্য হাসপাতাল এবং মন্দিরে পানির ট্যাংক স্থাপন করা হয়েছে। পাশাপশি কুয়া, পুকুর ও পরিষ্কার জলাধার আছে। মানুষ এগুলোকে কখনো দূষিত করে না বলেন তিনি। এখানে অবশ্য আমাদের দেশের মানুষ পিছিয়ে আছে।
তিনি আরও বলেন, বছরে এক হাজার মিলিমিটার বৃষ্টিপাতও যদি হয় এবং আপনার বাড়ির ছাদে যে বৃষ্টি পড়বে তা সংরক্ষণ করা হয় তবুও ১০ হাজার লিটার পানি সংরক্ষণ সম্ভব। আর এই পানি রান্না এবং খাবারের জন্যই যথেষ্ট।
কলম্বোর মতো একটি বড় শহরে পানির প্রধান সরবরাহ আসে ভূ-পৃষ্ঠের উপরিভাগের পানি থেকে। যার মধ্যে বৃষ্টি পানি একটি বড় উৎস। শহর এবং গ্রামাঞ্চলে বিভিন্ন বাড়িতে ছোট এবং মাঝারি আকারের ট্যাংক বসানো হয়েছে যেখানে বৃষ্টির পানি ধরে রাখা হয়। এছাড়া প্রাকৃতিকভাবে গড়ে ওঠা পুকুর এবং বড় আকারের জলাধার আছে যেখানে বৃষ্টির পানি জমা হয় বলেও জানান তিনি।
কিন্তু ঢাকা শহরে কী করা হচ্ছে?
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতিদিন ঢাকা ওয়াসা মহানগরীতে ২৫০ কোটি লিটার পানি সরবরাহ করে। এর মধ্যে ৮০ ভাগ পানিই আসে ভূ-গর্ভ থেকে। বিভিন্ন জায়গায় গভীর নলকূপ স্থাপনের মাধ্যমে ঢাকা শহরে এই পানি সরবরাহ করা হয়। ফলে প্রতি বছর পানির স্তর দুই থেকে তিন মিটার নিচে নেমে যাচ্ছে। কারণ একটাই ভূ-গর্ভস্থ পানি উত্তোলন।
এ বিষয়ে ঢাকা ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী কামরুল হাসান বলেন, এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য জরুরি হয়ে পড়েছে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ করে তা মাটিতে রিচার্জ করা।
এরই মধ্যে ঢাকা ওয়াসা পরীক্ষা করে দেখেছে বৃষ্টির পানি মাটিতে রিচার্জ করা যায় কি না। এ পরীক্ষা করা হয়েছে মৎস্য ভবন ও ধানমন্ডি এলাকায় ঢাকা ওয়াসার দুটি ভবনে। বৃষ্টির পানি ধরে সরাসরি একটি ফিল্টারের মাধ্যমে মাটির ১২৫ মিটার গভীরে সে পানি ঢুকিয়ে দেওয়া হয় বলে জানান কামরুল হাসান।
তিনি আরও বলেন, যদি শহরের প্রতিটি বাড়ির ছাদে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ করা হয়, ব্যবহার বা রিচার্জের জন্য। তাহলে দুটি লাভ হবে। ১. বর্ষার সময় জলাবদ্ধতা কমে যাবে। ২. সেই পানি ব্যবহার করলে ভূ-গর্ভস্থ পানির উপর চাপ কমবে।
ওডি/টিএএফ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড