‘র্যাব দেখলেই ব্যবসায়ীরা ভয় পায়’
অধিকার ডেস্ক
রাজধানীর ওষুধের দোকানে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ান (র্যাব) এর অভিযানকে ঘিরে আতঙ্কিত ব্যবসায়ীরা। র্যাব আসলেই তারা ভয় পান এমন অনুভূতি ব্যক্ত করে ঢাকার মিটফোর্ডসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের অভিযান বন্ধের দাবি জানিয়েছেন ঢাকার ওষুধ ব্যবসায়ীরা।
সোমবার (২৪ জুন) পুরান ঢাকার ইংলিশ রোডে বাংলাদেশ কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির কেন্দ্রীয় পরিষদের এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন ব্যবসায়ীরা। মতবিনিময় সভায় ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমানের বক্তব্য চলাকালে হঠাৎ দাঁড়িয়ে যান মিটফোর্ডের এক ওষুধ ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম।
মিটফোর্ডে র্যাবের অভিযান বন্ধের দাবি জানিয়ে ব্যবসায়ীদের পক্ষে রফিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের নিয়ন্ত্রণে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর রয়েছে। তারা এবং আমাদের সমিতির লোকজন অভিযান চালাবে।
র্যাবকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, যারা চোর, ডাকাত, মাদক ব্যবসায়ীদের ধরে তারা ওষুধের দোকানে আসুক আমরা চাই না। তার এই দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন উপস্থিত ওষুধ ব্যবসায়ীরাও।
রফিক আরও বলেন, ‘আমাদের শাসন ও শোষণ করার জন্য সরকারি সংস্থা ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর আছে। সেখান থেকে আমাদের আইন-কানুন শেখাবে, আমাদের অন্যায় হলে অভিযান চালাবে।
দু-একজনের অপরাধের জন্য পুরো ওষুধ ব্যবসায়ীরা কেন ভুক্তভোগী হবেন এমন প্রশ্ন ছুঁড়ে তিনি বলেন, তাদের জন্য গোটা ওষুধ ব্যবসায়ীদের ধরতে র্যাব বাহিনী আসে। তারা যখন এই মিটফোর্ডে আসে তখন আমরা ভয় পাই। পুলিশ দেখলেই আমরা ভয় পাই। তাই আমরা চাই ওষুধ প্রশাসন আসুক অভিযানে, কেমিস্ট সমিতির নেতৃবৃন্দ আসুক। আপনারা আমাদের মামলা দেন যা খুশি করেন, কিন্তু র্যাবকে ব্যবসায়ীরা ভয় পায়। তার এ বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘আমরা এখানে মতবিনিময় করতে এসেছি অন্য কথাবার্তা বলা যাবে না। আপনি বলেন যে আপনি পরিষ্কার, আপনি যদি পরিষ্কার থাকেন তখন যদি কেউ অন্যায়ভাবে আপনাদের ধরে তখন আমরা সেটা দেখব।’
গত বৃহস্পতিবার (২০ জুন) রাজধানীর গ্রিনরোডে র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চলাকালে একটি ফার্মেসিতে তিন মাস আগে মেয়াদ শেষ হওয়া ওষুধ পাওয়া যায়। অভিযানে নেতৃত্ব দেন র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম। অভিযানের শুরুতে একটি ফার্মেসিতে সানম্যান-বারডেম ফার্মার এসবি মেট-৮৫০ নামের একটি ওষুধের বাক্সে দেখা যায়, এর মেয়াদ ২০১৯ সালের মার্চে শেষ হয়েছে। তিন মাস পেরিয়ে গেলেও ওষুধটি এখনও দোকানে রাখা হয়েছে। এ ধরনের আরও ওষুধ পাওয়া গেছে ফার্মেসিতে।
মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ দোকানে না রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বাংলাদেশ কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির সভাপতি মো. সাদেকুর রহমান বলেন, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশে কোনো ধরনের দুর্নীতি আমরা বরদাশত করব না। আমরা কথা দিচ্ছি নকল, আন-রেজিস্টার্ড এবং মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ দোকানে রাখব না। সেগুলো কোম্পানিকে ফেরত দেব।
তিনি প্রতিশ্রুতিতে আরও বলেন, যদি কোনো কোম্পানি ফেরত না নেয় তবে সেসব কোম্পানিকে আমরা জুলাই মাসের দুই তারিখ থেকে বর্জন করব। ওষুধ নিয়ে আমরা অনেক অপমান-অপব্যাখ্যার শিকার হয়েছি। আমরা এগুলো থেকে পরিত্রাণ পেতে চাই। আমরা ওষুধ প্রশাসনের আদেশ-নিষেধ মেনে চলব।
ওডি/এআর
