• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩০ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

মসজিদের নামে চাঁদাবাজি

  আমির সোহেল

২২ মে ২০১৯, ২১:৪২
মসজিদের নামে রাস্তায় চাঁদা তোলা হচ্ছে
ছবি : সংগৃহীত

পবিত্র রমজান মাস এলেই বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের নামে চাঁদা চাইতে দেখা যায়। এ পবিত্র মাসে কখনও মসজিদের নামে, কখনও এতিম খানা, কখনও বা মক্তবের নামে চলে চাঁদা তোলার কার্যক্রম। চলন্ত বাসে অথবা ট্রেনেও কিছু লোক মানুষের কাছে হাত পাতেন। অথবা মহাসড়কের সংযোগস্থলে, হাটে-বাজারে টেবিল এবং মাইক বসিয়ে তোলা হয় এই চাঁদা। সারাদেশের প্রায় সর্বত্র এটি দেখা যায়।

এছাড়া এক জেলার ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের জন্য চাঁদা তুলতে দেখা যায় অন্য জেলায়। এমনই ময়মনসিংহের এক মসজিদ তৈরির জন্য টাকা ওঠাতে আজ বুধবার (২২ মে) রাজধানীতে লিফলেট বিতরণ করতে দেখা যায়।

হযরত ওয়াজকুরুনী জামে মসজিদের নামে ওই লিফলেটে উল্লেখ করা হয়, ‘আউলিয়ার দেশ বাংলাদেশ। আউলিয়াদের মধ্যে একজন আউলিয়া রাসূলকে বেশি মহব্বত করত। রাসূলের মহব্বতে এই আউলিয়া তার ৩২ দাঁত ভেঙ্গে ফেলেন।’

এই আউলিয়ার নামেই মসজিদের নামকরণের কথা উল্লেখ করে লিফলেটে বলা হয়, ‘বাংলাদেশ মসজিদের দেশ। দেশে তিন লাখ ৮৫ হাজার ৩৬টি মসজিদ আছে। এক এক মসজিদ এক এক আউলিয়ার নামে নামকরণ করা হয়েছে। কিন্তু এই আউলিয়ার (হযরত ওয়াজকুরুনী জামে মসজিদ) নামে কোনো মসজিদ নেই।’

তাই হযরত ওয়াজকুরুনী জামে মসজিদ, ময়মনসিংহ সদরের ১০ নম্বর ইউনিয়নে ওই আউলিয়ার নামে নামকরণ করে মসজিদের নির্মাণ কাজ শুরু হচ্ছে। মসজিদটির নির্মাণের জন্য সাহায্য চাওয়া হয় লিফলেটে। এছাড়া মসজিদ নির্মাণে জন্য দান করতে একটি বেসরকারি ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট নম্বরও উল্লেখ আছে লিফলেটে।

‘মসজিদের চাঁদা নাকি ধোঁকাবাজি’ কাউকে কাউকে এমন মন্তব্যও করতে শোনা যায়। তবে বেশির ভাগ মানুষ আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ওই মসজিদে দান করেছেন।

মসজিদের জন্য দান করা আবুল হোসেন নামে একজনের সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, ‘ভাই কতো টাকা কত এলোমেলো নষ্ট করি, আল্লাহর ঘর মসজিদে দান করলে তার সওয়াব আল্লাহ নিজে দেন। আর রমজান মাসের দানে বেশি সওয়াব।’

এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি আরও বলেন, ‘আমার দান সৎ উদ্দেশে, সওয়াবের উদ্দেশে। সে যদি মসজিদের নামে টাকা তুলে ধোকাবাজি করে আল্লাহর কাছে তাকে এজন্য জবাবদিহি করতে হবে।’

ওই ব্যক্তি আরও জানান, আমি শোনেছি- যারা মসজিদ এবং মাদ্রাসার জন্যে চাঁদা তোলেন, ওঠানো চাঁদা থেকে তাদের ২০ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত দেওয়া হয়। তবে বর্তমানে অনেক প্রতারক বিভিন্ন মসজিদ-মাদরাসা ও এতিমখানার রশিদবই বা লিফলেট ছাপিয়ে অর্থ সংগ্রহ করছে বলে জানান তিনি।

লিফলেটে দেওয়া নম্বরে যোগাযোগ করলে ওপার থেকে নারী কণ্ঠ ভেসে আসে। অনেক কথাই হয় তার সঙ্গে। তিনি জানান, ‘এই নম্বরটি তার স্বামী বাবুল মিয়ার। এই নম্বরে অনেকে টাকা পাঠান। বাবুল মিয়া একজন ’হুজুর’। তিনি টাইলসের ঠিকাদার।’

বাবুল মিয়ার সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তার স্ত্রী জানান, তিনি ঢাকায় থাকেন। ঈদের সময় ফোন করলে তার সঙ্গে কথা বলা যাবে।

মূলত এই বাবুল মিয়াই ময়মনসিংহে মসজিদ নির্মাণের কথা বলে লিফলেট বিতরণ করে অর্থ সংগ্রহ করছেন।

ওডি/এএস

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড