• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

'নিক্কেই এশিয়ান রিভিউ'তে শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা

ব্যাপক অর্থনৈতিক উন্নয়ন : বিশেষজ্ঞ জরিপে শেখ হাসিনার জয়

'১০ বছরে অর্থনৈতিক উন্নয়নে হাসিনার ঈর্ষণীয় সাফল্য'

  এস এম সোহাগ

২০ ডিসেম্বর ২০১৮, ২১:৫৪
শেখ হাসিনা
টানা ২ বার ক্ষমতায় থেকে বিশ্ব দরবারে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছেন আওয়ীমী লীগ নেত্রী শেখ হাসিনা। ছবি : আকিরা কোদাকা, নিক্কেই এশিয়ান রিভিউ

দক্ষিণ এশিয়ার দেশ বাংলাদেশ, ১৯৭১ সালে দেশটি পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধ করে স্বাধীনতা অর্জন করে। এরপর থেকেই দেশটি ভয়াবহ দারিদ্র্য, প্রাকৃতিক বিপর্যয়সহ নানামাত্রিক সংকটের চক্রে আবদ্ধ। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সব বাধা উপেক্ষা করে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক গোলকধাঁধাকে পরাজিত করে বিশ্বে এক উদীয়মান শক্তি হিসেবে ক্রমাগত আবির্ভূত হচ্ছে সাড়ে ১৬ কোটি নাগরিকের এই দেশটি। 'নিক্কেই এশিয়ান রিভিউ'

বিশ্ব দরবারে নিঃস্বার্থ বন্ধু রাষ্ট্র যারা বাংলাদেশকে সবচেয়ে বেশি সহযোগিতা করে সেই জাপানের গণমাধ্যম 'নিক্কেই এশিয়ান রিভিউ' বুধবার (১৯ ডিসেম্বর) 'বাংলাদেশের উত্থান ও উর্ধ্বগতি' শিরোনামে এক সংবাদ প্রকাশ করে। জাপানি এই গণমাধ্যমের সঙ্গে বিশেষ এক সাক্ষাৎকারে দেশের যাবতীয় পরিস্থিতি, চমকপ্রদ উন্নয়ন ও নির্বাচন নিয়ে কথা বলেন বাংলাদেশের ৩ বারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

দরিদ্রতা, প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের পরে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ট্রাজেডির একটা শরণার্থী, যা বর্তমান বিশ্বে সবচেয়ে গুরুতর মানবিক বিপর্যয় বলে স্বীকৃত। ২০১৭ সালে পার্শ্ববর্তী মিয়ানমার থেকে নিপীড়িত হয়ে সাড়ে ৭ লাখ মুসলিম সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা জাতিগোষ্ঠী প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। শেখ হাসিনার সরকার বিপুল সংখ্যক জনসংখ্যার সঙ্গে বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম এই শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়ে বিশ্বে ব্যাপক প্রশংসা অর্জন করেন।

ছবি : আকিরা কোদাকা, নিক্কেই এশিয়ান রিভিউ

যদিও অতি সীমিত পরিসরে আন্তর্জাতিক মনোযোগ আকর্ষণ করেও বাংলাদেশ, বিশ্ব অর্থনীতিতে অন্যতম এক সফল গল্পের নাম। বাংলাদেশ অন্য দেশগুলোর অর্থনৈতিক সংগ্রামে সাহস জোটানো এক অনুপ্রেরণার নাম। একটি দ্রুত বর্ধমান উৎপাদন সেক্টরের সাহায্যে চীনের পরেই বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের অবস্থান দ্বিতীয়। বিগত প্রায় এক দশক ধরে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি গড় ৬ শতাংশের উপরে অবস্থান করছে যা চলতি বছর জুনে ৭ দশমিক ৮৬ শতাংশে পৌঁছায়।

১৯৭১ সালের ভয়াবহ যুদ্ধে জয়লাভের পরেই দেশটি চরম দরিদ্রতায় পড়ে, ১৯৭৪ সালে ব্যাপক ক্ষুধায় দুর্ভিক্ষের মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। মাত্র ৪৪ বছরের মাথায় ১৬ কোটি ৬০ লাখ মানুষের দেশটি খাদ্য সেক্টরে প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। ২০০৯ সালে দেশটির মাথাপিছু যা ছিল তা ৩ গুণ বেড়ে চলতি বছরে ১৭৫০ মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে। বিশ্ব ব্যাংকের মতে, একই সময়ের মধ্যে চরম দারিদ্র্যের মধ্যে বসবাসকারী মানুষের সংখ্যা, যারা প্রতিদিন ১ দশমিক ২৫ ডলার বা প্রায় ১০০ টাকার উপার্জন শ্রেণিবদ্ধ, সেই জনসংখ্যার হার ১৯ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৯ শতাংশে নিয়ে এসেছে।

ছবি : এডিভি

চলতি বছর শুরুর দিকে বাংলাদেশ সফলতার চরম মুহূর্ত উদযাপন করে, আগামী ২০২৪ সালের মধ্যে 'স্বল্পোন্নত দেশ'- এর তালিকা থেকে বের হবার জন্য নির্ধারিত জাতিসংঘের মানদণ্ড সম্পূর্ণ করে এই দেশটি। দেশটির প্রধানমন্ত্রী, শেখ হাসিনার কাছে 'উন্নয়নশীল অর্থনৈতিক' এই উত্থানের অর্থ, জাতির আত্মমর্যাদার জন্য একটা তাৎপর্যপূর্ণ সহায়ক।

ডিসেম্বরে জাপানের 'নিক্কেই এশিয়ান রিভিউ'র কাছে দেয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনা এই সাফল্য নিয়ে বলেন, 'স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বের হয়ে যাওয়াটা এক ধরনের শক্তি ও প্রত্যয়ের যোগান দিবে, যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেবল রাজনৈতিক নেতাদের জন্য নয়, এটা সাধারণ জনগণের জন্যেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যখন আপনি নিম্ন স্তরে থাকবেন, প্রাকৃতিকভাবেই তখন আপনাকে তখন নানান প্রজেক্ট ও প্রোগ্রামের শর্ত নিয়ে আলোচনায় অন্যের অনুগ্রহের ওপর নির্ভর করতে হবে। যখন আপনি এই স্তর থেকে উত্তীর্ণ হবেন তখন আপনাকে কারো ওপরই নির্ভর করতে হবে না কারণ আপনার নিজস্ব অধিকার রয়েছে।'

জাপানি গণমাধ্যমটির এডিটর এট লার্জ জেন রবিনসন তার এই প্রতিবেদনে শেখ হাসিনাকে উদ্ধৃত করে বলেন, 'বাংলাদেশের শক্তিশালী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি শুধু অব্যাহতই থাকবে না, আরও ত্বরান্বিত হবে।' শেখ হাসিনা বলেন, 'আসন্ন ৫ বছরে বাংলাদেশের বার্ষিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৯ শতাংশ ছাড়িয়ে যাবে এবং ২০২১ সালের মধ্যে ১০ শতাংশে পৌঁছাবে বলে আমরা আশা করছি।'

ছবি : আইএমএফ

বাংলাদেশের এই প্রধানমন্ত্রী বললেন, 'আমি সর্বদা উচ্চতর হারই আশা করি'। তিনি হেসে বললেন, 'কেন আমি নিম্নতর কিছু অনুমান করতে যাব?'

অনেক ক্ষেত্রেই বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড প্রকৃতপক্ষে সরকারি লক্ষ্যমাত্রাও অতিক্রম করেছে। উৎপাদন শিল্পের ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করা একটি জাতীয় কৌশল পরিচালনা করেছি যেখানে পোশাক শিল্পের আধিপত্য রয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশের বার্ষিক রপ্তানির হার ১৫ থেকে ১৭ শতাংশ বেড়েছে যা ২০১৮ সালের জুনের মধ্যে বছরে রেকর্ড ৩৬ দশমিক ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে।

২০১৯ সালে তার সরকারের ৩৯ বিলিয়ন ডলারের লক্ষ্যমাত্রা পূরণের পথে রয়েছে এবং ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশিরা তাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের ৫০ তম বার্ষিকীকে স্বরণীয় করার জন্য ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের শিল্পপণ্য রপ্তানির প্রতি শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোকে আহ্বান জানিয়েছেন।

ছবি : বিবিএস

প্রায় ২৫ লাখ প্রবাসী শ্রমিকদের রেমিট্যান্সের মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক গতিশীলতাকে আরও ত্বরান্বিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। ২০১৮ সালে দেশটির এই বিশাল জনগোষ্ঠীর পাঠানোর রেমিট্যান্স বার্ষিক ১৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ১৫ বিলিয়িন মার্কিন ডলারের মাইলফলক স্পর্শ করেছে। তবুও দেশটির প্রধানমন্ত্রী হাসিনা জানেন যে, দেশের শিল্প মূল্যের প্রবাহ বাড়ানোর প্রয়োজন রয়েছে। নিম্ন উৎপাদন ব্যয়ের পুরানো মডেল যা আংশিকভাবে রেমিট্যান্স এবং আন্তর্জাতিক সাহায্যের ওপর নির্ভরশীল তা পরিবর্তনে দেশটির রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক নেতারাদের মধ্যেও তার (শেখ হাসিনা) উচ্চাকাঙ্ক্ষাগুলো প্রতিফলিত হচ্ছে।

এদিকে, হাসিনা ২০০৯ সালে উদার অনুপ্রেরণা দ্বারা সমর্থিত 'ডিজিটাল বাংলাদেশ' কার্যক্রমের মাধ্যমে বাংলাদেশের আইটি খাতকেও উদীয়মান খাতে পরিণত করেছেন। এখন দেশটির রাজধানী ঢাকা হয়েছে ক্ষুদ্র কিন্তু ক্রমবর্ধমান প্রযুক্তি সেক্টরের আবাস। যেখানে এসব প্রতিষ্ঠানের সিইও'দের নেতৃত্বে দলটি আইটি-তে প্রতিবেশী ভারতকে টপকে যাবার বিষয়ে সাহসের সঙ্গে কথা বলে। ভারতের অন্যতম প্রধান ওষুধ শিল্পেও ঊর্ধ্বমুখী সাফল্য বাংলাদেশের।

বাংলাদেশ সরকার এখন দেশের ১০০ টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার জন্য একটি উচ্চাভিলাষী প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে, যার মধ্যে ১১ টির কাজ সম্পন্ন হয়েছে এবং ৭৯ টি নির্মাণাধীন রয়েছে।

ছবি : সংগৃহীত

এই কৌশল বাংলাদেশের রেকর্ডসংখ্যক জনসংখ্যার ঘনত্বকে পুঁজিবাজারে দক্ষভাবে কাজে লাগাতে সহায়ক বলে মনে করছেন দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ ফয়সাল আহমেদ, যাকে তিনি বলছেন 'ঘনত্বের লভ্যাংশ'।

'জনসংখ্যার নিকটবর্তিতা আমাদেরকে ক্ষুদ্রঋণ এবং কম খরচে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে যেমন সামাজিক ও অর্থনৈতিক ধারণাগুলোকে ডিজাইন করতে সাহায্য করছে তেমন এর বিস্তার করতেও সহায়তা করেছে। তবে, আমরা কীভাবে এই অপর্যাপ্ত ভূমি উৎসকে আরও ভালোভাবে কাজে লাগাতে পারি সেই প্রশ্নের আংশিক উত্তর নির্ভর করছে বিদ্যমান শিল্প পার্কের এবং বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চলের ভালো ও কার্যকরী বিকাশের মধ্যে।

এই বিপুলসংখ্যক অর্জন ও চিত্তাকর্ষক উচ্চাকাঙ্খার পেছনেও একটা সংশয় থেকে যাচ্ছে। আগামী ৩০ ডিসেম্বর দেশটির আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে কাঠামোগত সমস্যা থেকে গভীর রাজনৈতিক বিভক্তি নিয়ে একটা কঠিন বাধার সৃষ্টি হবার সম্ভাবনা থেকেই যাচ্ছে।

শেখ হাসিনা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মধ্যে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বহু বছর ধরেই বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তার করছে। খালেদা জিয়ার পরিবারের ইতিহাসে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করার পক্ষে ছিল, যখন বাংলাদেশ পূর্ব পাকিস্তান নামে পরিচিত ছিল। গত তিন দশক ধরে এই দুই নারীর হাতেই দেশটির ক্ষমতা বদল হয়ে আসছে। দেশটির বিরোধী দল, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বর্তমানে দুর্নীতির অভিযোগে কারাগারে রয়েছেন, যে অভিযোগকে তিনি মিথ্যা অভিযোগ বলছেন।

সেই ১৯৮১ সাল থেকে তিনি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ দলটির নেতৃত্ব দিয়ে আসছে। যে দলটি তার পিতার হাতে প্রতিষ্ঠিত, ১৯৭৫ সালে কিছু বিপথগামী সেনাসদস্য দেশটির এই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানকে নির্মমভাবে হত্যা করে। সেই ভয়াল ১৫ আগস্টে তার একমাত্র বোন বাদে পরিবারের সবাইকে হত্যা করে, বিদেশ থাকার সুবাদে তারা দুই বোন প্রাণে রক্ষা পেয়েছিলেন।

ক্ষমতাসীন দলটি বিগত কয়েকটি নির্বাচনে শক্তিশালী সমর্থন লাভ করলেও কিন্তু বিরোধী দলীয় কর্মী ও মানবাধিকার সংগঠন সম্ভাব্য পোলিং জালিয়াতি ও ভয়ঙ্কর কৌশল সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ক্ষমতাসীন দলটি টানা ২ বারের জন্য ৫ বছর মেয়াদে ক্ষমতায় থাকার পরেও বিশ্লেষকরা কিছু ভোটারদের মধ্যে একটি সুস্পষ্ট 'বিরোধী ক্ষমতার' মনোভাবের দিকে প্রতীয়মান হয়। তবুও অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে অনেকেই একমত যে ক্ষমতাসীন দলের বিজয় আরও উন্নয়নকে সমর্থন করবে।

ছবি : সংগৃহীত

হংকং-ভিত্তিক ব্রোকারেজ প্রতিষ্ঠান 'সিএলএসএ'র ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান কৌশলবিদ ড. ক্রিস্টোফার উড বলেন, 'যদি জনমত জরিপ পাস করে যায় ও খুব বেশি দ্বান্দ্বিক অবস্থার সৃষ্টি না হয় তাহলে এই উন্নয়নের ধারায় বাংলাদেশ একটি আকর্ষণীয় দীর্ঘমেয়াদি গল্প রচনা করতে পারবে।'

ঢাকার কেন্দ্রে অবস্থিত প্রধানমন্ত্রীর আবাসিক কার্যালয়ে বসে তিনি তার বিরুদ্ধে একনায়কতন্ত্রের স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক মহলের অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে তা প্রত্যাখান করেন। তিনি তার দলকে নিয়ে জোর দিয়ে বলেন, 'বাংলাদেশের গণতন্ত্র রক্ষায় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ'।

শুধুমাত্র স্থিতিশীলতার জন্য হলেও ব্যবসা মূলত ক্ষমতাসীন দলের পক্ষেই মনে হবে। ঢাকায় সাম্প্রতিক সাক্ষাতকারে, নির্বাহী ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা এই পরামর্শকে প্রত্যাহার করেছেন যে, রাজনৈতিক অশান্তি দেশের প্রবৃদ্ধির পথকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।

ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারারস অ্যান্ড এক্সপোর্টারস এসোসিয়েশনের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট, জায়ান্ট গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারুক হাসান বলেন, 'সব রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে তাতেই আমরা স্বস্তি বোধ করছি। আমরা ইতিবাচক অনুভব করছি এই কারণে যে, রাজনৈতিক পার্থক্য সত্ত্বেও অর্থনৈতিক বিষয়গুলোকে আমরা বিচ্ছিন্ন রেখে চালিয়ে যেতে পারছি। যদিও আমরা জানি যে রাজনৈতিক স্থায়িত্ব ছাড়াই আপনি অর্থনীতিকে প্রসারিত করতে পারবেন না উল্টো তা আন্তর্জাতিক গ্রাহকদের জন্য ভীতিকর হতে পারে'।

তৈরি পোশাক শিল্প দেশের অসাধারণ সফলতার গল্পের একটি মূল কারণ। শিল্পটি দেশের বৃহত্তম কর্মসংস্থানের উৎস, প্রায় ৪৫ লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র। ২০১৮ সালে বাংলাদেশের মোট পণ্যদ্রব্য রপ্তানির প্রায় ৮০ শতাংশই এই সেক্টরের।

২০১৩ সালে রানা প্লাজা দুর্যোগের পর এটির উন্নয়ন ঢেকে গিয়েছিল। তখন বহুতল গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি কমপ্লেক্সটি ভেঙে পড়ে ১ হাজার ১৩০ কর্মী মারা গিয়েছিল। পরবর্তীতে, কারখানা আপগ্রেড, পরিদর্শন এবং কর্মীদের উন্নত অবস্থানসহ ব্যাপক সংস্কারগুলো বাস্তবায়নের জন্য আন্তর্জাতিক পোশাক ব্রান্ডগুলো এই শিল্পকে বাধ্য করে।

ছবি : সংগৃহীত

জায়ান্টের হাসান বলেন, 'আমাদের সমগ্র শিল্প এপ্রিল ২০১৩ সালে মাত্র ৯০ সেকেন্ডেই পরিবর্তিত হয়েছে, সাধারণত এটি ভালো কিছুর জন্যে। আমরা প্রকৃতপক্ষে শতভাগ অটোমেশন চাই না। আশা করি আমরা শ্রমিকদের আরও মান-সংযোজিত ক্ষেত্রগুলো যেমন, সেলিক, সূচিকর্ম ইত্যাদিতে স্থানান্তরিত করে এটির প্রভাব হ্রাস করতে পারব।'

বাংলাদেশের পোশাক শিল্প প্রতিযোগিতামূলক থাকা যদি আরও বিনিয়োগ প্রয়োজন। তিনি বলেন, 'বাংলাদেশে এখনও আরও মৌলিক পণ্য এবং তুলা দ্বারা আধিপত্য বিস্তার করা হয়েছে, যেখানে বিশ্বব্যাপী মানুষের তৈরি তন্তুর ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই তুলনায় তুলার শার্ট না তৈরির জন্য আরও বেশি বিনিয়োগের প্রয়োজন।'

দীর্ঘদিন ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্য যুদ্ধ চলায় বাংলাদেশ টেক্সটাইল শিল্পের জন্য লাভ হচ্ছে। কিন্তু অন্যান্য পোশাক শিল্প নির্ভর দেশ যেমন, ভিয়েতনাম, তুরস্ক, মায়ানমার এবং ইথিওপিয়া চীনের দুর্বলতার সুযোগ নিচ্ছে।

ছবি : সংগৃহীত

বিজিএমইএর মতে, আন্তর্জাতিক তীব্রতর প্রতিযোগিতা বাংলাদেশের পোশাক শিল্পে একীকরণের ঝুঁকি তৈরি করেছে যা ইতোমধ্যেই গত পাঁচ বছরে কারখানার হার ২২ শতাংশ কমিয়ে ৪ হাজার ৫৬০ টিতে নামিয়ে এনেছে।

সিএলএসএ'র উড বিশ্বাস করে যে, গার্মেন্টস সেক্টরের ওপর বাংলাদেশের নির্ভরতা ভবিষ্যতের বৃদ্ধির ক্ষেত্রে একটি সম্ভাব্য বাধা। তিনি বলেন, '১০ বছরের দৃশ্যে এই সেক্টরটি সস্তা মজুরি বিকল্পের মধ্যে আফ্রিকা, অটোমেশন এবং করমুক্ত বাজারে প্রবেশের সুযোগ হ্রাসের মতো ঝুঁকির মুখোমুখি। যদি বাংলাদেশ এলডিসি স্ট্যাটাস থেকে ২০২৪ সালের নির্ধারিত সময়সূচি বের হতে হয় তাহলে এর বিকল্প সেক্টর খুঁজতে হবে।'

তিনি বলেন, 'এখন চ্যালেঞ্জ হচ্ছে অন্যান্য খাতকে বিকশিত করতে হবে যার মধ্যে ফার্মাসিউটিক্যালস এবং বিজনেস প্রসেস আউটসোর্সিং অঙ্গীকারবদ্ধ দুটি ক্ষেত্র। তবে এতে আরও বিদেশি বিনিয়োগের প্রয়োজন হবে।'

ছবি : আকিরা কোদাকা, নিক্কেই এশিয়ান রিভিউ

এফডিআই বাংলাদেশের শক্তিশালী উৎস নয় যদিও হাসিনার ক্ষমতা গ্রহণের নয় বছর মধ্যে এটি প্রায় তিনগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা ২০০৮ সালের অর্থবছরের ৯৬১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে ৩০ জুনে প্রায় ৩ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। যদিও এটি ভিয়েতনাম ও মায়ানমারসহ অন্যান্য এশিয়ান দেশগুলোর সাথে তুলনামূলকভাবে কম।

সরকারি কর্মকর্তারা আংশিকভাবে বিশ্বব্যাংকের বার্ষিক 'ইজ অফ ডুয়িং বিজনেস' জরিপে দেশটির ক্রমাগত নিম্ন র‍্যাংকিং নিয়ে উদ্বিগ্ন যা তাদের বিদেশি বিনিয়োগকারীদের ভীত করতে পারে। ডিসেম্বরে প্রকাশিত সর্বশেষ জরিপটিতে ১৯০টি দেশের মধ্যে ১৭৬তম স্থানে বাংলাদেশ, অতিরিক্ত লাল টেপ, দুর্বল অবকাঠামো ও অযোগ্য পরিবহন খাতকে দোষারোপ করা হয়।

সিঙ্গাপুরে এবং ভিয়েতনামের অনুরূপ পরিষেবাগুলোর প্রতিলিপি করার উদ্দেশ্যে 'এক-স্টপ' বিনিয়োগকারীর পরিসেবা তৈরির সাথে সরকার বিনিয়োগ প্রক্রিয়াটি সুদৃঢ় করতে চলেছে। কিন্তু এই গতি এখনও অর্জন করতে পারেনি।

ছবি : আকিরা কোদাকা, নিক্কেই এশিয়ান রিভিউ

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষা অর্জন করা, দক্ষ প্রযুক্তিবিদ, একজন মুখ্য উপদেষ্টা হিসেবে তার পুত্র জয়ের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতে উদ্বোধনী ট্যাক্স বিরতি এবং সারা দেশে ১২ টি হাই-টেক পার্ক নির্মাণের পরিকল্পনা চালু করে হাসিনার ডিজিটাল ধাক্কাকে আরও সফল করেছে।

ঢাকায় আইটি উদ্যোক্তাদের একটি নতুন প্রজন্ম ভারতকে টপকাবার কথা বলেছে - যা কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা, রোবোটিক্স এবং বিঘ্নিত প্রযুক্তির ওপর মনোযোগ দেয় যারা মৌলিক আউটসোর্সিং শিল্পের মাধ্যমে বিশ্ব মানচিত্রে উঠে আসে।

আইটি সেবা ও সফটওয়্যার পণ্য রপ্তানি করে চলতি বছর ৩০ জুনের মধ্যে বাংলাদেশ ৮০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করে যা অর্থনৈতিক বছরের শেষনাগাদ ১ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক স্পর্শ করে। সফটওয়্যার কোম্পানি টেকনোহেভেনের সিইও হাবিবুল্লাহ করিম এবং বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশনের সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের সহপ্রতিষ্ঠাতা হাবিবুল্লাহ করিম বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে আইসিটি-সম্পর্কিত রপ্তানি আয় ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য সরকারের গৃহীত 'টেকনোলজি, খুব চ্যালেঞ্জিং কিন্তু অর্জনযোগ্য'।

করিম আরও বলেন, '৮০০ মিলিয়ন ডলার থেকে ৫ বিলিয়ন ডলার, অর্থাৎ তিন বছরে ছয়গুণ বৃদ্ধি। এটি নিজের পক্ষে কঠিন। দ্বিতীয় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে বিশ্বব্যাপী আউটসোর্সিং বাজার আসলে সংকীর্ণ। অনেকগুলো কাজ, যেমন এয়ারলাইন এবং হোটেল রিজার্ভেশন এবং বীমা দাবি এখন সম্পূর্ণরূপে স্বয়ংক্রিয়।'

দেশটির রাইড শেয়ারিং পরিসেবা পাঠাও, যাতে ইন্দোনেশিয়ান ইউনিকর্ন গো-জেক প্রতিষ্ঠান থেকে ২ মিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ পেয়েছে এবং মোবাইল আর্থিক পরিসেবা গোষ্ঠী বিকাশের কাছ থেকেও বিনিয়োগ পেয়েছে। এছাড়া আলিবাবা গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান আলিপাই প্রতিষ্ঠানটির ২০ শতাংশ শেয়ারের মালিক।

কিন্তু ফ্রন্টিয়ার ফান্ড, দেশের একমাত্র ব্যক্তিগত ইক্যুইটি ফান্ড পরিচালনাকারী ব্রামার অ্যান্ড পার্টনার্স (বাংলাদেশ) এর সিইও এবং সহ-প্রতিষ্ঠাতা খালিদ কাদির বলেন, তবে অগ্রসর হওয়া শিল্পগুলোকে খারাপভাবে আরও অর্থায়ন দরকার। তিনি যুক্তি দেন যে উদ্ভাবনগুলো একটি শক্তিশালী ব্যক্তিগত ইকুইটি শিল্পে বৃদ্ধি পায় যা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ সংস্থার কাছে তহবিল চ্যানেল এবং তাদের তালিকাতে সহায়তা করতে পারে।

ছবি : আকিরা কোদাকা, নিক্কেই এশিয়ান রিভিউ

'আমরা যোগাযোগ অবকাঠামো, পোশাক এবং ফার্মাসিউটিক্যালসে কয়েক বছরে প্রায় ২০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছি। এটির প্রবৃদ্ধির সুযোগের তুলনায় এক মহাসাগরে একটি ফোটা জলের মতোই। তবে এই ধরনের আরও মূলধন আকৃষ্ট করার জন্য, নিয়ন্ত্রণকে আরও বিনিয়োগকারী-বান্ধব কোরতে হবে। তিনি বলেন, নতুন তালিকাভুক্ত কোম্পানি বিনিয়োগের ওপর তিন বছরের লকআপ বিধান উদ্ধৃত।

আইটি কোম্পানি ইজেনারেশনের চেয়ারম্যান এবং বেসিসের সাবেক প্রধান শামীম আহসান আইটি সেক্টরকে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ সেক্টর হিসেবেই দেখছেন। 'চল্লিশ বছর আগে, গার্মেন্টস শিল্প কয়েকটি কোম্পানির সাথে শুরু হয়েছিল। এখন বাংলাদেশ ৩০ বিলিয়ন প্লাস মূল্যের গার্মেন্টস পণ্য রপ্তানি করছে এবং চীনের পরে ২য় অবস্থানেই রয়েছে। আমরা আইটি শিল্পেও একই কাজ করতে চাই।'

বাংলাদেশও ফার্মাসিউটিক্যালস ক্ষাত্রে ভারতকে চ্যালেঞ্জ করার আশা করছে।'স্বল্পোন্নত দেশ'র পর্যায় থেকে উত্তীর্ণে দেশটি ঔষধ শিল্পের পেটেন্টগুলি থেকে স্বত্বত্যাগ উপভোগ করেছে। এটি জেনেরিক ও বাল্ক ওষুধের ক্ষেত্রে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে তীব্র প্রতিযোগিতামূলক জ্বালানি তৈরি করেছে। স্থানীয় তারকা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস, বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম জেনারিক্স প্রস্তুতকারক, যা ৬০ টি দেশে ওষুধ রপ্তানি করে।

ছবি : আনকটাড

ইনসেপ্টার সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার সৈয়দ বিল্লাহ বলেন, 'যখন আপনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপে দেখেন, তাদের উত্পাদন উদ্ভিদগুলি বন্ধ হচ্ছে এবং তারা এশিয়ার কাছে আসছে। কেন? মানসম্পন্ন, সাশ্রয়ী ওষুধের কারণে। আমাদের আন্তর্জাতিক নিয়ন্ত্রক সংস্থার গুণগত মান এবং উত্তম মান হিসেবে স্বীকৃত। কিন্তু (বাল্ক ওষুধ), আমরা অনেক পিছিয়ে রয়েছি এবং চীনের কাছ থেকে প্রযুক্তির সন্ধান করছি।'

বাংলাদেশের প্রতিযোগিতামূলক ক্ষতির একটি তার দুর্বল অবকাঠামো, এবং সাহায্যের জন্যে চীনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। চীনের বেল্ট ও রোড ইনিশিয়েটিভের অধীনে দেশটি বাংলাদেশের বিভিন্ন মেগাপ্রোজেক্টের অর্থায়ন করেছে, যার মধ্যে প্রায় ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পদ্মা সেতু রেল সংযোগ করায় ব্যয় হবে। যা দেশের দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে দেশের উত্তরাঞ্চল ও পূর্বাঞ্চলের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করবে। সবশেষে, চীন ঋণ, অনুদান ও অন্যান্য সহায়তাবাবদ দেশটিতে ৩৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করেছে।

চীনের ভারী অবকাঠামো বিনিয়োগ পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কাসহ অন্যান্য দেশে তার 'ঋণ কূটনীতি'র জন্য সমালোচিত হয়েছে। কিন্তু স্থানীয় অর্থনীতিবিদরা এই ধরনের উদ্বেগকে প্রত্যাহার করেছে।

ছবি : আকিরা কোদাকা, নিক্কেই এশিয়ান রিভিউ

একটি স্বাধীন থিংক ট্যাঙ্ক, বাংলাদেশ এন্টারপ্রাইজ ইন্সটিটিউটের সিনিয়র ডিরেক্টর গবেষক ফয়েজ সোবহান বলেন, 'আমি মনে করি না যে পাকিস্তান বা শ্রীলংকার মতো চীন এর কক্ষপথে বাংলাদেশকেও অনেক দূরে টেনে নেয়া হচ্ছে। চীনের সঙ্গে আমরা জাপানি অবকাঠামো বিনিয়োগের ওপর বিশ্বাস রাখি।

শেখ হাসিনা বলেন, চীন, জাপান এবং আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলির মতো আন্তর্জাতিক অংশীদারদের পাশাপাশি অর্থায়নে আরও সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে সরকার। দীর্ঘমেয়াদী অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য আমরা ব্যাংকিং খাতে প্রায় ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের নিজস্ব সার্বভৌম সম্পদ তহবিল প্রতিষ্ঠা করছি। এটি সম্ভব, কারণ ১০ বছর আগে ৭ দশমিক ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখন ৩২ বিলিয়ন ডলারের বেশি দাঁড়িয়েছে।

২০১৮ সালের মধ্যে চীনের বিনিয়োগকারীদের ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ২৫ শতাংশ কিনে ফেলেছে এবং বাংলাদেশ এখন পাকিস্তানের পর চীনের সামরিক শক্তির দ্বিতীয় বৃহত্তম আমদানিকারক।

কেউ কেউ বেইজিং থেকে এত বিনিয়োগের প্রশ্ন করতে পারে, তবে হাসিনা বলেন, 'এটি কেবল একটি সত্য যে চীন এই অঞ্চলে একটি বড় ভূমিকা পালন করতে প্রস্তুত। আমাদের বিদেশী নীতি খুব পরিষ্কার: প্রত্যেকের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। চীন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কী করছে, এটি তাদের বিষয়।'

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড