• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৯ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে দীর্ঘ অপেক্ষা

  নিজস্ব প্রতিবেদক

২৫ আগস্ট ২০২০, ১২:২২
বাংলাদেশে শরণার্থীদের ঢল
বাংলাদেশে শরণার্থীদের ঢল (ছবি: সংগৃহীত)

বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলিমদের উপর যে নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞের জেরে বাংলাদেশে শরণার্থীদের ঢল নেমেছিলো তার তিন বছর পূর্তি হচ্ছে আজ। ২০১৭ সালের ২৫শে অগাস্ট রাখাইনের রোহিঙ্গাদের ঢল শুরু হয়েছিলো বাংলাদেশের টেকনাফ সীমান্তে।

মিয়ানমারের নৃশংস হত্যাযজ্ঞে ৩ বছর আগে প্রায় সাড়ে ৭ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আশ্রয় নেয়। এরমধ্যে তাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসন নিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে অনেক আলোচনা হয়েছে। তবে আজ পর্যন্ত একজন রোহিঙ্গাও নিরাপদে দেশে ফিরতে পারেনি।

বাংলাদেশ সরকার বেশ কয়েকবার আনুষ্ঠানিকভাবে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রচেষ্টা চালিয়েছিল। তবে তা ব্যর্থ হয়েছে। কারণ, রোহিঙ্গাদের আশঙ্কা তাদেরকে মিয়ানমারে নিপীড়নের শিকার হতে হবে। আর সেকারণে তারা দেশে ফিরতে রাজি হয়নি।

জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা বলেছে, রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতি এখনও রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায়, নিরাপদে ও মর্যাদাপূর্ণভাবে ফিরে যাওয়ার উপযোগী নয়।

সাদেক হোসেন নামের এক রোহিঙ্গা বলেন, আমাদের অধিকার নিশ্চিত করলেই কেবল আমি মিয়ানমারে ফিরে যাব।

শামিমা নামের আরেক রোহিঙ্গা বলেন, আমাদের ওপর যে নির্যাতন চালানো হয়েছে তার পুনরাবৃত্তি না হওয়ার নিশ্চয়তা পেলেই কেবল আমরা দেশে ফিরে যেতে পারব।

তবে নিরাপদ বোধ করার কোনও কারণ সেখানে নাই। প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে রোহিঙ্গারা রাখাইনে থাকলেও মিয়ানমার তাদের নাগরিক বলে স্বীকার করে না। উগ্র বৌদ্ধবাদকে ব্যবহার করে সেখানকার সেনাবাহিনী ইতিহাসের বাঁকে বাঁকে স্থাপন করেছে সাম্প্রদায়িক অবিশ্বাসের চিহ্ন। ছড়িয়েছে বিদ্বেষ। ৮২-তে প্রণীত নাগরিকত্ব আইনে পরিচয়হীনতার কাল শুরু হয় রোহিঙ্গাদের।

এরপর কখনও মলিন হয়ে যাওয়া কোনও নিবন্ধনপত্র, কখনও নীলচে সবুজ রঙের রশিদ, কখনও ভোটার স্বীকৃতির হোয়াইট কার্ড, কখনও আবার ‘ন্যাশনাল ভেরিফিকেশন কার্ড’ কিংবা এনভিসি নামের রং-বেরঙের পরিচয়পত্র দেওয়া হয়েছে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মানুষকে। ধাপে ধাপে মলিন হয়েছে তাদের পরিচয়। ক্রমশ তাদের রূপান্তরিত করা হয়েছে রাষ্ট্রহীন বেনাগরিকে।

মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর দেশটির সেনাবাহিনীর অত্যাচার নির্যাতনের ভয়াল চিত্র উঠে এসেছিলো জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনানের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক কমিশনের রিপোর্টে। ওই রিপোর্টে রোহিঙ্গাদের বিশ্বের সর্ববৃহৎ দেশহীন সম্প্রদায় বলে বর্ণনা করে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্বের পথ সুগম করতে মিয়ানমার সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছিলো ওই কমিশন।

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের নারীদের ব্যাপকহারে ধর্ষণ ও নির্যাতনের অভিযোগ ওঠার পর জাতিসংঘের কর্মকর্তারা একে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ হিসেবে অভিহিত করেন।

আরও পড়ুন : চলে গেলেন বীর উত্তম সি আর দত্ত

২০১৭ সালের ডিসেম্বরে যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানায় যে তারা স্যাটেলাইটে তোলা ছবি বিশ্লেষণের করে নিশ্চিত হয়েছে যে রাখাইনে অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে ৪০টি গ্রামের ভবনসহ বহু ঘরবাড়ি ধ্বংস করা হয়েছে বলে সংস্থাটি দেখতে পেয়েছে। এ নিয়ে ৩৫৪টি গ্রাম আংশিক বা পুরোপুরি পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে বলে দাবি করে সংস্থাটি।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড