• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩১ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

পাণ্ডুলিপির কবিতা

আমি চোখবন্ধে শীত এড়িয়ে বসন্তভোগে চলি

  আলমগীর ইমন

০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১৩:২৪
কবিতা
যে প্রেম স্বর্গ থেকে পৃথিবী রাঙাতে আসে (সম্পাদিত)

স্বর্গীয় প্রেম

গ্রীষ্মের রোদেলা দুপুরে যদি ফাগুনসন্ধ্যা নেমে আসে, শীতল হাওয়া পরশ বুলিয়া যায় সর্বকায়া, হৃদয় থেকে শরীরে প্রশান্তি অনুভব করি- আমি বুঝি, প্রেম আমাকে ঘিরে রেখেছে; যে প্রেম স্বর্গ থেকে পৃথিবী রাঙাতে আসে।

প্রবল অসুস্থতা কিংবা দুঃচিন্তায় ভাঙে পড়ার মুহূর্তেও আমি যখন নিজেকে ভুলে থেকে সানন্দে রাতকে দিন আর দিনকে রাত বলতে পারি- আমি বুঝি, প্রেম আমাকে ঘিরে রেখেছে; যে প্রেম স্বর্গ থেকে পৃথিবী মাতাতে আসে।

কান্নার পাওয়ার অজস্র কারণ থাকা স্বত্ত্বেও আমি যখন নিঃসংকোচে হাসতে পারি, হৃৎভূমিতে নির্ভয়ে শৈল্পিক-রঙিন স্বপ্ন আঁকতে পারি- আমি বুঝি, প্রেম আমাকে ঘিরে রেখেছে; যে প্রেম স্বর্গ থেকে পৃথিবী সাজাতে আসে।

বসন্তযাপন

একটি প্রজাপতি অনেক দিনের পরিচিত বিচরণ নকশা উদ্ধার করেছি চর্যাপদীয় যুগে তবুও মাঝেমাঝে বড় অপরিচিত হয়ে উঠে একেক প্রশ্নে হ্যানসন রোবটিক’স- মানবীয় যন্ত্ররূপ উত্তর দিয়ে বসে তবু শব্দেরা রূপান্তরে কর্ণাগমন- শুনিয়ে যায় বসন্তের কথা আমি চোখবন্ধে শীত এড়িয়ে বসন্তভোগে চলি...

শূন্যতা অঙ্কন

ক্যানভাস সেট করা আমার হাতে রংতুলি উপস্থতি জনতার প্রত্যাশা- একটি সুন্দর দৃশ্যপট আঁকা হবে হাত চলছে রংতুলি সঙ্গে করে সময়ের পর সময় বয়ে যায়, ক্যানভাস রয়ে যায় সাদা! ক্ষোব্ধ দর্শক হতাশ, কিছু আঁকা হলো না আর আমি দেখছি, ক্যানভাস জুড়ে কি সুন্দর শূন্যতা আঁকা!

ক্ষণিকের অতিথি

সে তো হারিয়ে যাওয়া মেঘখ- কালো-শুভ্রতায় ভাসমান দূর দিগন্তে নীলিমার সঙ্গি। ক্ষণে ক্ষণে বজ্রধ্বনিতে- অস্তিত্ব নিশ্চিতকারী স্বপ্নের ডানা। শারতি কাশফুলে ভর করে ফিরে আসা ক্ষণিকের অতিথি আবার ক্ষণিকেই ঝরে যাওয়া ভোরের শিউলি।

বৃষ্টি এলেই ব্যস্ত হই

বৃষ্টি এলেই আমি ব্যস্ত হয়ে পড়ি। সব কাজ গুটিয়ে প্রস্তুত রই তোমার সাড়াদানে- যদি ডেকে বলো, ‘আজ বৃষ্টিতে ভিজবো দু’জন ছাদে ইচ্ছে মতো, রিমঝিম তালে নাচবো আমি, আজ আকাশের বেদনাশ্রুকে আনন্দাশ্রু করে ঝরাবো।’

বৃষ্টি এলেই আমি ব্যস্ত হয়ে পড়ি। সব কাজ গুটিয়ে প্রস্তুত রই তোমার সাড়াদানে- যদি ডেকে বলো, ‘কদমফুল নেবে আমি নীল-আঁচল বিলিয়ে দেবো ফুল কুঁড়াতে। খোঁপায় বেঁধে দেবে, চোখের কোণে চেয়ে চেয়ে দেখবো তোমার মুগ্ধতা।’

বৃষ্টি এলেই আমি ব্যস্ত হয়ে পড়ি। সব কাজ গুটিয়ে প্রস্তুত রই তোমার সাড়াদানে- যদি ডেকে বলো, ‘কোনো নির্জন পথে ভিজে ভিজে হাঁটবো দুজন ছন্দে ছন্দে। জরুরি পথিক হঠাৎ আমাদের দেখে ফিরে যাবে প্রথম প্রেমের স্মৃতি বিচরণে।’

বৃষ্টি এলেই আমি ব্যস্ত হয়ে পড়ি, সব কাজ গুটিয়ে প্রস্তুত রই, তোমার পথ চেয়ে।

বাসযোগ্য শহরের খোঁজে

যে শহরে তোমার কোনো ছোঁয়া থাকবে না; সকাল-সন্ধ্যা, রাত-দুপুর তোমার কথা মনে পড়বে না; তোমার ভাবনাহীন হবে প্রতিদিন সূর্যদয় আর সূর্যাস্ত। আমি এমন একটি শহর চাই, বসবাসের জন্য।

আমি এমন একটি শহর চাই- যে শহরে নিয়ন আলোয় একাকি হাটতে তোমার কথা মনে পড়বে না। জ্যোৎস্নারাতে চাঁদদেখা উৎসবে তোমার কথা মনে পড়বে না। সমুদ্রস্নানে গিয়ে তোমার কথা মনে পড়বে না। পাহাড়চূড়ায় মেঘ ছুতে গিয়েও তোমার কথা মনে পড়বে না।

আমি এমন একটি শহর চাই- যে শহর আমাকে তোমার কথা মনে করতে দেবে না। থাকবে না তোমার কোনো অবহেলা, থাকবে না অপ্রেম। ঘুমোতে গিয়ে তোমার শূন্যতায় অশ্রুতে বালিশ ভিজবে না। দিন-রাত্রির চিরনিয়মে চলমান তুমিহীন বাসযোগ্য একটি শহর।

আরও পড়ুন : আলো জন্মের বহু আগে থেকেই আমি অন্ধ

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড