• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৯ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

পাণ্ডুলিপির কবিতা

এরপর কুয়াশারা ভারী হলো ক্যালেন্ডারের পাতায়

  তামান্না হাসান

২৭ জানুয়ারি ২০২০, ১২:৪৩
প্রচ্ছদ
প্রচ্ছদ : কাব্যগ্রন্থ ‘দেখা হলো না এই শরতেও’

কোথায় তুমি

খুব ধোঁয়াশে ঝিরিঝিরি বৃষ্টি পড়ছে আমার শহরে অনেক অনেকদিন পর সেই বৃষ্টিতে ভিজলাম বৃষ্টি ছুঁয়ে যাচ্ছে আমার গাল চিবুক ঠোঁট কাঁপা কাঁপা স্পর্শে আমি হারিয়ে যাচ্ছিলাম একটু একটু করে বৃষ্টির ফোঁটায় আচ্ছা রাত্রির আকাশের কান্না কি আমার কান্নার চেয়েও বেশী কষ্টের হয়তো হয়তো বা না ভাবনারা আড়ষ্ট হয়ে ভেঙে পড়ে তারপর আমার অশ্রুরা লুকিয়ে থাকেনি আর অঝোরে ঝরে ঝরে পড়ছিল তুমি পাশে নেই থাকলে নিশ্চয় আমাকে কাঁদতে দিতে না হাত ছুঁয়ে জড়িয়ে নিতে তোমার উষ্ণতায় তখন আমি কি তোমার বুকে মুখ লুকাতাম? জানি না, রাত বাড়ছে,, বৃষ্টিও ঝরছে কিন্ত তুমি যে পাশে নেই কোথায় তুমি?

দেখা হলো না এই শরতেও

দেখা হল না এই শরতেও আঙুল গুনে রোজ দেখি শীতের আর কতদিন বাকী। কাশফুলের শরীর বেয়ে নিখাদ ঢং এ রোজ এলোপাথাড়ি হাসের দল একবারে নিশ্চুপ হয়ে ঘরমুখো হয়। লাঠির আগায় ঘুড়ির সুতো একবারে ঠেসে কাবু হয়ে আছে। থাকুক ওটা শেষ স্মৃতির শখের জলাঞ্জলি হয়ে, তখনও এক পা করে পেছন থেকে আচমকা চমকে দিতে তুমি বৈঞ্চব সেজে সত্যি আমাকে বোকা বানিয়েছিলে। আমি গেরুয়া বাতাসে লাল জিলাপির সুবাস পেয়ে হিড়হিড় করে টানতে টানতে রমেশ কাকার চৌহদ্দিতে হাজিরা দিলাম। ততক্ষণে তোমার মুখ ভয়ে পাণ্ডুর দশা, বৈঞ্চব মঞ্চের কুটিকুটি বিসর্জন। কানে কানে একটি কথাই বলেছিলে, ‘রেবতী তোর চুল থাকবে তো?’ রমেশ কাকার জিলাপির রসে অর্ধেক খাওয়া তখন শেষ। আচঁল বাঁধলাম আঁধার শঙ্কায়, কাঁপা কণ্ঠে কেবল একটি শব্দ কদমাপাড়ে প্রতিধ্বনি হল ‘অনিমেষ’ এরপর কুয়াশারা ভারী হল ক্যালেন্ডারের পাতায়। আমি চুল খুলি, আচঁল বিছাই আর সংখ্যার ধারাপাত নিয়ে রোজ বসি। অংক শিখি। যোগ বিয়োগ ভাগ গুনের, কিন্ত শরতের পরে শীত আসে এটার হিসেবে যত গণ্ডগোল, মিলাই কেমনে। আজও আধখোঁপার সন্ধ্যা নামে কদমাপাড়ে, আমি গেরুয়া বাতাসে তখন জিলাপির সুবাস পাই চোখ বুজে সেই ঘ্রাণ নিতে নিতে তোমার অবয়ব খুঁজি। কিন্ত কিছুই দেখি না কেবল ঝাপসা একটা সন্ধ্যে আর একটা রাত ছাড়া।

তুমি নেই

এই শহরে তুমি নেই, নেই এক চিলতে আনন্দ রোদ্দুর, এই শহরে তুমি নেই নেই কবিতার এলোমেলো অক্ষর সাজানোর অপেক্ষার আয়োজন, এই শহরে তুমি নেই এই শহরে তোমার কথারা নেই, নেই তোমার ভালবাসাও।

আছে কেবল অপেক্ষার সময়, কারণ অপেক্ষারা জেগে রয়, জেগে থাকবে, শুধু তোমার অপেক্ষায়।

দাঁড়িকমা

একটি শহর কবিতার শহরে ছেয়ে যাক দুর্দান্ত কালির আঁচড়ে, তারপর জন্ম হোক অজস্র কবিতার দাঁড়িকমার ভারসাম্যে।

অক্ষর বৃন্তে নিষিদ্ধ হোক তোমার আমার আলাপন।

কবিতারা হেঁটে বেড়াক হেঁটে বেড়াক দিন থেকে রাতে।

হাঁটতে থাকুক বায়ান্ন গলির তিপ্পান্ন নম্বরের সংখ্যা ধাঁধায়, রমনার ঘাস ফুলে কড়া পারফিউমের নেশালু ঘ্রাণে কবিতারা থমকে দাঁড়াক থমকে দাঁড়াক কালের সাক্ষী হয়ে থাকা কাগুজে নোটের বিকিকিনির উৎসবে। এলোমেলো শাড়ির লুটানো আঁচল কবিতার আড়ালে মুখ লুকাক কবিতারা এখানে নিষিদ্ধ হয় নিষিদ্ধ হয় আজীবনের জন্য।

অনুকবিতা

তুমি যখন পুরুষ হয়ে উঠো আমার অভয়ারণ্যে, নিয়মের সংখ্যালঘুরা আমায় তখন বাঁধা দেয়, তবুও আমি নারী হয়ে উঠি অস্পৃশ্য অভিশাপের দায়বদ্ধতায়।

আরও পড়ুন- পুরুষের নিকট সাহসের কথা জানতে নেই

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড