• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩০ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

কাঠের গল্পে সাজানো কাঠকুড়ুনি’র ঘর

  নাবিলা বুশরা

২২ অক্টোবর ২০১৮, ১০:০৯
কাঠকুড়ুনি
কাঠকুড়ুনি'র গল্প

গল্পগুলো সাজানো। কোথাও আছে কাশফুলের গল্প, কোথাও নয়নতারা, কাঠগোলাপ, পদ্ম, শাপলা, অপরাজিতা অথবা আছে গোলাপের গল্প। আরও আছে মেঘের উপর বাড়ি, শ্রাবণ মেঘের দিনের গল্প, ভ্রমণের গল্প, চায়ের গল্প, বৃষ্টি- মেঘের গল্প, নানা ধরনের ইমোজির গল্প, পাখির গল্প, নানা ধরনের নকশার গল্প, দেশের গল্প, প্রেমের গল্প-আরও যে কত গল্প।

এই গল্পগুলো সাজানো আছে কাঠের গায়ে। অবাক হচ্ছেন? বলছিলাম কাঠকুড়ুনি’র কথা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া তিন বন্ধু আফসানা মিমি, ডালিয়া আক্তার জ্যোতি আর মামুনুর রশিদ তৌসিফের ছোট্ট প্রয়াসে শুরু হয়েছিল কাঠকুড়ুনি। শুরুর গল্পগুলো বেশিরভাগ প্রকৃতির মাঝে থাকলেও এখন তা ছড়িয়েছে অনেক কিছু নিয়ে। এখন কাঠের গায়ে নানা গল্প ফুটে উঠে। কিছুদিন আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনের গল্প ছিল কাঠকুড়ুনির আংটির গায়ে।

কাঠকুড়ুনি‘র রিকশা অঙ্কন

কাঠকুড়ুনি’র সব কাজ হাতে করা। কাঠের গায়ে আঁচড় লাগানো থেকে শুরু করে রঙ-তুলির কাজ সবই তারা করেন নিজের হাতে।

কীভাবে এই কাজের শুরু হল সে বিষয়ে কাঠকুড়ুনির তিনজনই একই উত্তর দেন। তারা বলেন, ছবি আঁকাতে ভালো লাগত আগে থেকেই। নিজেদের এই ভালো লাগাকে সবার কাছে কীভাবে পৌঁছে দেওয়া যায় তার চেষ্টাতেই কাঠকুড়ুনি’র যাত্রা। এখন অনলাইনে এ ধরনের অনেক কাজ হচ্ছে তার মাঝে সবাই আমাদের কীভাবে গ্রহণ করবে সে নিয়ে একতা দ্বিধা কাজ করলেও এখন আর সে ভয়টা নেই।

তাদের যারা গ্রাহক আছেন সবাই অনেক বেশি ভালো। তাদের কাজকে প্রচুর ভালোবাসেন আর উৎসাহ দেন। এই উৎসাহটাই তাদের জন্য অনেক বড় প্রেরণা এখন।

এই যে এত এত গল্প রোজ কাঠের ওপর নানা আল্পনায় উঠে আসে এ গল্পগুলো কোথায় খুঁজে পান?

এবারও তিন জনের একই জবাব। প্রতিদিনের গল্প থেকে। যেমন ধরুন, অপরাজিতা আর নয়নতারা ফুল। আমাদের সবার খুব পরিচিত আর ভালোলাগার ফুল। হঠাৎ করে ফুলগুলো গাছে দেখলে চোখ জুড়িয়ে যায়। ভালোও লাগে অনেক। তো সেই ভালো লাগা যদি এখন আমরা সব সময় হাতে রাখি তাহলে সেটা কীভাবে করা যায়? খুব সহজেই করা যায়। আংটি অথবা মালার গায়ে সাজিয়ে দিলাম অপরাজিতা অথবা নয়নতারা। ব্যস ভালো লাগাটুকু জড়িয়ে রইল গায়ে। এভাবেই গল্পের তৈরি হয়।

কাঠকুড়ুনি‘র আঁকানো গল্পগুলো

এছাড়াও হুমায়ূন স্যারের কিছু বইয়ের নাম আর সবার পরিচিত হিমু-রূপার গয়না পাবেন কাঠকুড়ুনিতে। এগুলোর মাঝে কিছু কাজ আছে কাস্টমাইজড। আমাদের কিছু আপু আছেন তারা আমাদের বিশ্বাস করে তাদের পছন্দমত ডিজাইন দিয়ে দেন। আমরা সেগুলো তাদের হাতে পৌঁছে দেওয়ার পর তাদের যে আনন্দ দেখতে পাই সেটা আসলে ভোলার নয়। প্রতিদিনের শত শত গল্প এভাবেই তৈরি হয়। সবার সাথে ভালো লাগার একটা বন্ধন এরই মধ্যে তৈরি হয়ে গেছে কাঠকুড়ুনি’র।

কাঠকুড়ুনি‘তে অপরাজিতা

কাঠকুড়ুনির প্রধান কাজ কাঠ নিয়ে। এখানে আছে নানা ডিজাইনের আংটি, মালা, চুড়ি, খোপার কাটা, কানের দুল। কাঠের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের চার্ম দিয়ে তৈরি নানা ধরনের গয়নাও আছে তাদের কাছে। তবে রঙের কাজেই তাদের প্রাধান্য বেশি।

ভালো লাগার এ কাজের অনুপ্রেরণা কে এ উত্তরে কাঠকুড়ুনি’র জবাব, অনুপ্রেরণা অবশ্যই আমাদের আব্বু আম্মু, আমাদের পরিবার আর বন্ধুরা। আর একদম যাদের কথা না বললেই নয় তারা আমাদের ক্যাম্পাসের বড় ভাই বোন আর আমাদের শ্রদ্ধাভাজন ইউনিভার্সিটির শিক্ষকগণ, বিশেষ করে ডিপার্টমেন্টের শিক্ষকেরা।

অফলাইনে কখনো কাজ করা হয়নি কাঠকুড়ুনি’র। তবে অবশ্যই তাদের ইচ্ছা আছে অনলাইনের এই কাঠকুড়ুনিকে একটা বড় জায়গায় নিয়ে যাওয়া। যেখানে শুধু তারা তিনজন নন, কাজ করবে আরও অনেকেই।

কাঠকুড়ুনি আরও অনেকদূর এগিয়ে যাক। তাদের জন্য রইল অনেক অনেক শুভকামনা।

কাঠকুড়ুনি পেইজের লিংক: https://www.facebook.com/Kathkuruni/

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড