• মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩০ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

তুরস্কের সেনা অভিযান

সিরিয়ায় কুর্দি রাজনীতিবিদসহ ৯ জনকে নির্মমভাবে হত্যা

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

১৪ অক্টোবর ২০১৯, ০৯:০৪
সিরিয়ায় তুর্কি অভিযান
সিরিয়ায় অভিযান পরিচালনা করছে তুর্কি সেনারা। (ছবিসূত্র : দ্য সান)

মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ সিরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে তুরস্কের চলমান অভিযানে নিহতের সংখ্যা ক্রমশ বেড়েই চলছে। শনিবার (১২ অক্টোবর) পর্যন্ত অন্তত ৪১৫ জন কুর্দি সেনাকে ‘নিউট্রালাইজ’ করেছে তুরস্ক। কোনো সন্ত্রাসীকে হত্যা, আটক বা কোনো সন্ত্রাসী আত্মসমর্পণ করলে তুরস্ক নিউট্রালাইজ শব্দটি ব্যবহার করে। তুর্কি জাতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে পাঠানো বিবৃতিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।

অঞ্চলটির কুর্দি নিয়ন্ত্রিত সীমান্তবর্তী শহরে তুর্কি হামলার অংশ হিসেবে এরই মধ্যে স্থানীয় কুর্দি রাজনীতিবিদসহ ৯ জনকে গুলি চালিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে মানবাধিকার পর্যবেক্ষণকারী একটি সংগঠন। তাদের মতে, এসব লোকদের নিজ বাড়ি থেকে গাড়ি করে তুলে নিয়ে হত্যা করা হয়েছে। নিহতদের তালিকায় হেভরিন খালাফ (৩৫) নামে এক কুর্দি রাজনীতিবিদের নামও রয়েছে।

মানবাধিকার সংস্থাটির এক কর্মকর্তা জানান, তুরস্কপন্থি মিলিশিয়া সেনারা তাদের গাড়িতে করে তুলে নিয়ে একটি মহাসড়কের ওপর সেই ৯ জনকে গুলি করে হত্যা করেছে। নির্মম এই হত্যাকাণ্ডের দৃশ্য কোনো এক মোবাইল ফোনের ক্যামেরায় ধরা পড়েছে। তাছাড়া আঙ্কারার মিত্র সিরিয়ার আরবরা দেশটির সর্বত্র ছড়িয়ে রয়েছে। যে কারণে তাদের সঙ্গে ভৌগলিক সম্পর্কের এক বিরোধ রয়েছে কুর্দি বাহিনীর।

ব্রিটেনভিত্তিক সিরিয়ান মানবাধিকার পর্যবেক্ষণকারী সংস্থাটির মতে, তেল আবিয়াদ শহরের দক্ষিণাঞ্চলে বিভিন্ন সময় সেই ৯ জনকে গুলি ভালিয়ে হত্যা করা হয়।’

যদিও কুর্দি বাহিনীর পক্ষ থেকে এরই মধ্যে নিশ্চিত করা হয়, গত শনিবার (১২ অক্টোবর) যেসব সিরিয়ানদের হত্যা করা হয় তাদের মধ্যে কুর্দি রাজনৈতিক হেভরিন ও তার গাড়িচালক ছিলেন। ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়া সেই ঘটনার ভিডিওতে দেখা যায়, কয়েকজন ব্যক্তি সড়কের অন্য প্রান্ত থেকে গুলি চালাচ্ছে। এ সময় বিভিন্ন অপমানজনক শব্দ উচ্চারণ করে হত্যাকারীদের চিৎকার করতে শোনা গেছে। তারা বেশ কিছু অত্যাধুনিক সামরিক অস্ত্র দিয়ে গুলি চালিয়েছে। তাছাড়া প্রকাশিত সেই ভিডিও ফুটেজটি সঠিক হতে পারে বলে এরই মধ্যে মত দিয়েছেন মার্কিন কর্মকর্তারা।

এ দিকে অবিলম্বে এই সেনা অভিযান বন্ধ করার জন্য তুর্কি প্রশাসনকে এরই মধ্যে অনুরোধ জানিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের তেল সমৃদ্ধ দেশ ইরান। তাছাড়া তুরস্কের এই আগ্রাসন ভালোভাবে নিচ্ছে না ভারত, ইতালির মতো বহু দেশ। এমনকি সংযত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রও। তবে এশিয়ার মুসলিম অধ্যুষিত রাষ্ট্র পাকিস্তানের সমর্থন কিন্তু তুর্কি প্রশাসনের প্রতিই আছে।

এত কিছুর পরও এরদোগান কিন্তু একরোখা। নিজের টুইট পোস্টে ‘পিস স্প্রিং’ (শান্তির বসন্ত) আনার কথা উল্লেখ করে সিরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে অবস্থানরত কুর্দি বাহিনীর বিরুদ্ধে সেনা অভিযান শুরু করেছেন তিনি।

কোনো দেশের পরোয়া না করে গত শুক্রবার (১১ অক্টোবর) উল্টো ইউরোপীয় ইউনিয়নকে (ইইউ) হুমকি দিয়ে তুর্কি প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ‘তুরস্কের এই অভিযানকে আগ্রাসনের তকমা দেওয়া হলে আঙ্কারা থেকে অবিলম্বে ৩৫ লক্ষাধিক শরণার্থীকে সরাসরি ইউরোপেই ফেরত পাঠানো হবে।’

অপর দিকে সিরিয়ার কুর্দি নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোতে তুর্কি হামলা অব্যাহত থাকায় দেশটির ওপর অচিরেই এক বড় ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে বলে জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। এমনকি ন্যাটো বাহিনীতে তুরস্কের সদস্য পদ থাকা নিয়েও এবার আলোচনা শুরু হয়েছে বলে এরই মধ্যে দাবি করেছে ইউরোপের দেশ ফ্রান্স। খবর ‘ব্লুমবার্গে’র।

আরও পড়ুন :- হামলায় অনড় এরদোগান, এবার হুমকি দিলেন ইউরোপকেও

এর আগে গত বুধবার (৯ অক্টোবর) সিরিয়ায় অবস্থানরত মার্কিন সমর্থিত কুর্দি বাহিনীর ওপর সশস্ত্র অভিযান শুরু করে তুরস্ক। যা এখনো অব্যাহত আছে।

ওডি/কেএইচআর

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড