• সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

তালিবান-মার্কিন শান্তিচুক্তি বাতিল করলেন ট্রাম্প

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০৮:৫২
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। (ছবিসূত্র : দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট)

যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানে চলমান সংকট নিরসনে সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন তালিবান নেতাদের সঙ্গে অনুষ্ঠিতব্য শান্তিচুক্তি বাতিল করা হয়েছে বলে ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। পরপর বেশ কয়েকটি টুইট বার্তায় তিনি এই সিদ্ধান্তের কথা জানান।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, 'রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) ক্যাম্প ডেভিডে তালিবান নেতাদের সঙ্গে আমার একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। যদিও কাবুল হামলায় এক মার্কিন সেনা নিহতের কারণে আমি সেই বৈঠক বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তাদের সঙ্গে এখন আর কোনো প্রকারের সমঝোতা হবে না।'

বিশ্লেষকদের মতে, নাইন ইলেভেনে টুইন টাওয়ারে চালানো বিধ্বংসী হামলার পর আফগানিস্তানে মার্কিন আগ্রাসন শুরু হয়। পরবর্তীতে মার্কিন সামরিক জোট ন্যাটো একের পর এক হামলার মাধ্যমে তালিবান নেতৃত্বাধীন সরকারকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করে। মূলত তখন থেকেই যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের মিত্র দেশগুলোর বিরুদ্ধে সশস্ত্র যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে গোষ্ঠীটি।

দীর্ঘ ১৮ বছরের যুদ্ধ পরিচালনার ফলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি এবং হতাহতের পর অবশেষে সংকট নিরসনের লক্ষ্যে গত বছরের জুন থেকে কাতারের রাজধানী দোহায় মার্কিন প্রতিনিধিদের সঙ্গে ধারাবাহিক আলোচনা শুরু করেন তালিবান নেতারা। টানা নয় দফা বৈঠক শেষে এরই ধারাবাহিকতায় চলতি সপ্তাহে আফগান ও মার্কিন কর্মকর্তাদের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ মধ্যস্থতাকারী জালমে খলিলজাদ ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা 'রয়টার্স'কে বলেছেন, 'আফগানিস্তানের মোট ৫টি সেনাঘাঁটি থেকে মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহারের বিষয়ে একটি খসড়া কাঠামো নিয়ে আমরা এরই মধ্যে একটি সমঝোতায় পৌঁছেছি।'

চলমান শান্তি আলোচনার অন্যতম মধ্যস্থতাকারী জালমায় খালিজাদ আরও বলেন, 'আগামী সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) তালিবান নেতাদের সঙ্গে মূল চুক্তিটি স্বাক্ষর হওয়ার কথা ছিল। যার অংশ হিসেবে পরবর্তী ২০ সপ্তাহের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র তাদের প্রায় ৫ হাজার চার শতাধিক সেনা প্রত্যাহার করে নিবে।'

তার মতে, যদিও গত বৃহস্পতিবারের (৫ সেপ্টেম্বর) সেই বিধ্বংসী হামলার পর থেকে আমাদের মধ্যে এক বিরাট শঙ্কা তৈরি হয়েছে যে; শান্তি চুক্তিটি স্বাক্ষরের পরও তারা (তালিবান) হামলা চালিয়ে যেতে পারে। মূলত এমন শঙ্কা থেকেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই চুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্তটি নিয়েছেন।'

এর আগে ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর হামলার পর তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের নির্দেশে আফগানিস্তানে শুরু হয় মার্কিন অভিযান। পরবর্তীতে ২০১৪ সালে যার আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়। যদিও এর পরও আফগান নিরাপত্তা বাহিনীকে সহায়তার অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র দেশটিতে তাদের সেনা মোতায়েন অব্যাহত রাখলেও সেখানকার অধিকাংশ এলাকার নিয়ন্ত্রণ রয়ে যায় তালিবানের হাতেই।

এমন প্রেক্ষাপটে ২০১৮ সালের অক্টোবর থেকে দেশটিতে সংঘাত বন্ধের নামে তালিবান নেতাদের সঙ্গে দফায় দফায় শান্তি আলোচনায় বসেছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। যদিও আফগান সরকারকে মার্কিন পুতুল হিসেবে আখ্যায়িত করে প্রথমে তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল তালিবান। তবে পরবর্তীতে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন চাপের কারণে অবশেষে বৈঠকে বসতে সম্মত হয় সকল পক্ষ।

আরও পড়ুন :- তীরে এসে তরী ডুবাল ভারতের ‘চন্দ্রযান-২’

ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা 'রয়টার্স' জানায়, যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানের মাত্র ৫৬ শতাংশ অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে সরকারের হাতে। যদিও ২০১৫ সাল পর্যন্ত এর পরিমাণ ছিল ৭২ শতাংশ। মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানে তালিবান যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত সরকারি বাহিনীকে হটিয়ে বহু এলাকার দখল নিজেদের করে নেয়।

ওডি/কেএইচআর

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড