আব্দুল জব্বার
পহেলা মে রোহিঙ্গা ঢল নামার ৯ মাস পার হতে চলছে।রাখাইন রাজ্যে গত বছরের আগস্ট থেকে জাতিগত নিধন অভিযানে যখন বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের ঢল নামে, তখন মিয়ানমার সেনাবাহিনীর পরিকল্পিত ধর্ষণ ও যৌন সহিংসতার শিকার হওয়ার বিবরণ দিয়েছেন রোহিঙ্গা নারীরা। নারী ও শিশুদের নিয়ে কাজ করা দাতব্য সংস্থাগুলো এ সময়টার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। ধরপাকড়ের সময় যৌন সহিংসতার শিকার হয়ে গর্ভবতী হওয়া নারীরা আগামী কয়েক সপ্তাহে তাদের সন্তান জন্ম দেবেন। কারও কারও সন্তান জন্মও নিয়েছে। আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেন বলেছে, আগামী কয়েক মাসে মায়েদের পরিত্যক্ত সন্তানদের সংখ্যা বেড়ে যাবে। চিকিৎসকদের সংস্থা মেডিসিনস স্যানস ফ্রন্টিয়ার্স(এমএসএফ) কক্সবাজারে বিভিন্ন হাসপাতাল পরিচালনা করছে। সংস্থাটি জানিয়েছে, তারাও আক্রান্ত মায়েদের কাউন্সেল করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এসব মায়েরা ভাবছেন, তারা নবজাতকদের লালন-পালন করতে পারবেন না কিংবা তাদের লালনা করার উপায় উপকরণ তাদের কাছে নেই। মেডিসিনস স্যানস ফ্রন্টিয়ার্স বলেছে, এ সব মায়েদের অধিকাংশের বয়স ১৮ বছরের নিচে। অবাঞ্ছিতভাবে সন্তান গর্ভধারণের ক্ষেত্রে সামজিক কলঙ্কের চিন্তা তাদের মানসিক পীড়ন বাড়িয়ে দিয়েছে। কিন্তু এবারেই প্রথম তারা এভাবে সন্তান জন্ম দিচ্ছে না।২০১৬ সালের নভেম্বর থেকে রাখাইন রাজ্যে এমন ঘটনা অহরহ ঘটে আসছে।গর্ভপাতের এই অবৈধ প্রক্রিয়ার তার জীবন হুমকির মুখে পড়তে পারে বলে চিকিৎসকরা তাকে হুশিয়ারি করে দেন।এমএসএফ জানিয়েছে, ২৫ ফেব্রয়ারি পর্যন্ত যৌন সহিংসতার শিকার ২২৪ নারীকে তারা চিকিৎসা দিয়েছে। সংস্থাটি জানায়, এমন বহু নারী আছেন, যারা সহিংসতার শিকার হয়ে সামাজিক কলঙ্কের ভয়ে সাহায্য চাইতে আসেননি। জানুয়ারিতে এমএসএফের হাসপাতালে বহু নারীকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখা গেছে।ধাত্রীদের ধারনা, এসব নারীরা বাসায় গর্ভপাতের চেষ্টা চালিয়েছেন। মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের জরিপ বলছে, দুই তৃতীয়াংশ নারী যৌন সহিংসতার শিকার হলেও তারা কর্তৃপক্ষ কিংবা দাতব্য সংস্থার কাছে তা জানাননি। লজ্জা ও কলঙ্কের কথা মাথায় রেখে তারা এমনটা করছেন। মানবাধিকার কর্মী লিন বলেন, এমন পরিস্থিতির শিকার হয়ে যে সব শিশু জন্ম নিয়েছে বা ভবিষ্যতে নেবে, তাদের নিয়ে নেতিবাচক ধারণা পোষণের কোনো কারণ নেই। তিনি বলেন, পৃথিবীর অন্য নারীদের মতো পেটে ধারণ করে ১০ টি মাস যন্ত্রণা সহ্য করে রোহিঙ্গা মায়েরা তাদের জন্ম দেন।যতই অবাঞ্ছিত বলা হোক, এখন তারা রোহিঙ্গাদেরই সন্তান।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড