• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৯ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

কারা বিশ্বের শীর্ষ সামরিক শক্তি এবং কেন?

ইসরায়েলের চেয়ে ইরান এগিয়ে

  এস এম সোহাগ

২১ জুলাই ২০১৯, ১৯:৪১
সামরিক শক্তির তালিকা
ছবি : সংগৃহীত

যুদ্ধই জীবন যুদ্ধই সার্বজনীন, বিশ্বের সর্বাধিক পরিচিত খলনায়ক এডলফ হিটলারের এই উক্তি যেন মানব ইতিহাসের সবচেয়ে সত্য এক কথা। আইনস্টাইন একবার বলেছিলেন, বিশ্বের সার্বভৌম রাষ্ট্রগুলো যত বেশি মহাশক্তি হতে যাবে, যুদ্ধ ততই অনিবার্য হবে। সেই আদিম মানব ইতিহাসে শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই ছিল, এই আধুনিক ইতিহাসেও তা বর্তমান।

বিশ্ব শক্তিগুলো পাল্লা দিয়ে শক্তি সঞ্চয় ও বৃদ্ধি করছে। যুদ্ধের ধরন পাল্টালেও তার ফলাফল এখন অনেকটা আগে থেকেই অনুমিত। অর্থাৎ, যুদ্ধে কারা জয়লাভ করবে বা কারা পরাজিত হবে, তা আগে থেকেই ধারণা করা যায়। আর তা সম্ভব হয়েছে তথ্যের কারণে, কোনো দেশ সামরিকভাবে কতটা সমর্থ্য কিংবা কাদের অস্রাগার বেশি সক্ষম শত্রুপক্ষকে কুপোকাত করতে, তা এখন স্পষ্ট। চলুন জেনে নেয়া যাক, সামরিক সক্ষমতায় বিশ্বে কারা শীর্ষে অবস্থান করছে?

চলতি বছর শুরুর দিকে, সাম্রাজ্যবাদের মতো ক্ষুদ্রাকৃতির ক্রিয়াকলাপ থেকে সরে রাশিয়া বা চীনের মতো প্রতিদ্বন্দ্বীর সঙ্গে সম্ভাব্য যুদ্ধের দিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্থান পরিবর্তনের মতো ঘটনাকে কেন্দ্র করে জাতীয় প্রতিরক্ষা কৌশল তাদের প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

যে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা বলে হয়েছে যে, বিশ্বজুড়ে দেশগুলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো একই ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে, যা বড় আকারের সংঘর্ষের দিকে মনোযোগ দিতে বাধ্য করেছে।

তবে এই পরিবর্তনগুলোর মধ্যেও সামরিক শক্তি যাচাইয়ে দেশগুলোর মুখোমুখি তুলনা করা বেশ কঠিন। ২০১৮ সালে গ্লোবাল ফায়ার পাওয়া ১৩৬টি দেশের জন্য একটা তালিকা তৈরি করে। সেনাসংখ্যা, বাজেট, অস্ত্রসহ ৫৫টি ফ্যাক্টরের ওপর ভিত্তি করে সংস্থাটি দেশগুলোর র‍্যাংকিংয়ের একটি তালিকা প্রস্তুত করেছে।

র‍্যাংকিং প্রস্তুতকালে প্রতিটি দেশের অস্ত্রের বৈচিত্র্য মূল্যায়ন, জনশক্তির দিকে বিশেষ মনোযোগ, ভৌগলিক লজিস্টিক ক্ষমতা, প্রাকৃতিক সম্পদ এবং স্থানীয় শিল্পের অবস্থাও বিবেচনায় নেয়া হয়েছে।

ছবি : রোলিং স্টোন

বিশ্বের অনেক দেশেই পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে, তবে মাত্র ৮টি দেশই বিশ্বের স্বীকৃত পারমাণবিক শক্তিধর দেশ। অনেক দেশের পারমাণবিক অস্ত্র থাকলেও তারা স্বীকৃত নয়। ইসরায়েল গোপনে তাদের পারমাণবিক অস্ত্র প্রস্তুত ও বিকশিত করছে, ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র থাকার কথা মার্কিন কর্তৃপক্ষ বারবার বলেই আসছে। কোনো দেশের র‍্যাংকিংয়ে পারমাণবিক অস্ত্র মজুদ না থাকায় প্রভাব পড়বে না। জলসীমাব্যাতীত (ল্যান্ডলকড) রাষ্ট্রগুলোর নৌবাহিনী না থাকায় তারা অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে না।

ন্যাটোভুক্ত দেশগুলো কিছুটা বোনাস পাবে কারণ জোটটি তাত্ত্বিকভাবে প্রাকৃতিক উৎস ভাগাভাগি করে থাকে। সাধারণভাবে, কোনো দেশের বর্তমান রাজনৈতিক ও সামরিক নেতৃত্ব বিবেচনা করা হয়নি এই তালিকায়, যদিও দেশের আর্থিক অবস্থা এবং স্থিতিশীলতাকে মূল্যায়ন করা হয়েছে।

গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার অনুযায়ী সূচকের সবচেয়ে শক্তিশালী দেশের আদর্শ স্কোর হবে ০.০০০০, যা যেকোনো সামরিক শক্তির জন্য অর্জন 'বাস্তবিকভাবে অসাধ্য'। তবে, যেসব রাষ্ট্র এই সংখ্যার সবচেয়ে কাছে থাকবে তাই সবচেয়ে পরাক্রমশালী। এই মানদণ্ডের ভিত্তিতে বিশ্বের শীর্ষ ২০টি শক্তিশালী সামরিক বাহিনীর চিত্র তুলে ধরা হলো

২০ : ভিয়েতনাম

এশিয়ার এই দেশটির এমন এক ইতিহাস রয়েছে যা আমেরিকার জন্য সারাজীবনের এক গ্লানি। ষাটের দশকে উত্তর-দক্ষিণ ভিয়েতনামের দেড় যুগের যুদ্ধে মার্কিন জোট পরাজিত হয়ে এক সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র হয়েছিল ভিয়েতনাম। চীন-রাশিয়া সমর্থন করেছিল সমাজতান্ত্রিক উত্তরকে আর মার্কিন, দ.কোরিয়া, ফিলিপাইন ছিল দক্ষিণের পক্ষে, যার ফলে একে স্নায়ুযুদ্ধও বলা যায়। এই যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি যুদ্ধ করেও জয় লাভ করতে পারেনি। দেশটির বর্তমান সামরিক সক্ষমতা দেখে নেয়া যাক।

ছবি : সংগৃহীত

পরাক্রম সূচক রেটিং : ০.৪০৯৮

মোট জনসংখ্যা : ৯,৬১,৬০,১৬৩

মোট সামরিক সদস্যসংখ্যা : ৫৪,৮৮,৫০০

সর্বমোট বিমান শক্তিমত্তা : ২৮৩

যুদ্ধবিমান : ৭৬

যুদ্ধ ট্যাংক : ১,৫৪৫ মোট নৌ-শক্তি : ৬৫

সামরিক বাজেট : ৩ দশমিক ৩৬৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার

১৯ : স্পেন

ইউরোপের এই দেশটির রয়েছে সুদীর্ঘ ইতিহাস। গেল শতকে এক ভয়াবহ গৃহযুদ্ধে প্রাণ হারিয়েছিল ৫ লক্ষাধিক স্প্যানিশ। বর্তমানে দেশটি ক্লাব ফুটবল বিশ্বের এক সম্রাট হিসেবে পরিচিত।

ছবি : এপি

পরাক্রম সূচক রেটিং : ০.৪২০৩ (ন্যাটো সদস্য)

মোট জনসংখ্যা : ৪,৮৯,৫৮,১৫৯

মোট সামরিক সদস্যসংখ্যা : ১,৭৪,৭০০

সর্বমোট বিমান শক্তিমত্তা : ৫২৪

যুদ্ধবিমান : ১২২

যুদ্ধ ট্যাংক : ৩২৭ মোট নৌ-শক্তি : ৪৬ (একটি রণতরী রয়েছে)

সামরিক বাজেট : ১১ দশমিক ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার

১৮. উত্তর কোরিয়া

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বিশ্বে যে কয়েকটি গুরুতর যুদ্ধ হয়, তার মধ্যে কোরিয়া উপকূলের যুদ্ধ একটি। যুদ্ধের ফলে উত্তর-দক্ষিণে বিভক্ত হয়ে যায় কোরিয়া। সমাজতান্ত্রিক উত্তর কোরিয়া মার্কিন নিষেধাজ্ঞার ফল এখন এক বিচ্ছিন্ন রাষ্ট্র। যাদের পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এক আতঙ্কে বাস করে।

ছবি : রয়টার্স

পরাক্রম সূচক রেটিং : ০.৩৮৭৬

মোট জনসংখ্যা : ২,৫২,৪৮,১৪০

মোট সামরিক সদস্যসংখ্যা : ৬৪,৪৫,০০০

সর্বমোট বিমান শক্তিমত্তা : ৯৪৪

যুদ্ধবিমান : ৪৫৮

যুদ্ধ ট্যাংক : ৫,২৪৩ মোট নৌ-শক্তি : ৯৬৭

সামরিক বাজেট : ৭ দশমিক ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার

১৭. পাকিস্তান

দক্ষিণ এশিয়ার যে দুটো দেশ অনেক আগে থেকেই পারমাণবিক অস্ত্রধারী দেশ, তাদের মধ্য পাকিস্তান একটি। বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর সীমান্তের দেশও পাকিস্তান, যাদের আর্থিক অবস্থা শোচনীয় হলেও সামরিক শক্তি লোভনীয়।

ছবি : রয়টার্স

পরাক্রম সূচক রেটিং : ০.৩৬৮৯

মোট জনসংখ্যা : ২০,৪৯,২৪,৮৬১

মোট সামরিক সদস্যসংখ্যা : ৯,১৯,০০০

সর্বমোট বিমান শক্তিমত্তা : ১,২৮১

যুদ্ধবিমান : ৩২১

যুদ্ধ ট্যাংক : ২,১৮২ মোট নৌ-শক্তি : ১৯৭

সামরিক বাজেট : ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার

১৬. ইসরায়েল

পৃথিবীর একমাত্র ইহুদি এই রাষ্ট্রটিকে নিয়ে রয়েছে অনেক জল্পনা কল্পনা। ১৯৪৮ সালে ফিলিস্তিনের কাছে জাতিসংঘের দানকৃত জমিতে, তৎকালীন বিশ্বের সবচেয়ে নির্যাতিত মাত্র ৬ শতাধিক জনসংখ্য নিয়ে বসতি স্থাপন করেছিল। যারা এখন ওই অঞ্চলের বাদশাহ, ফিলিস্তিনের অধিকাংশ দখল, আরব দেশকে ৪টি যুদ্ধে হারিয়ে এক মহাশক্তি হয়ে গেছে। দুর্ধর্ষ গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সহযোগিতায় আর মার্কিন সমর্থনে দেশটি এখন বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী রাষ্ট্র।

ছবি : রয়টার্স

পরাক্রম সূচক রেটিং : ০.৩৪৪৪

মোট জনসংখ্যা : ৮২,৯৯,৭০৬

মোট সামরিক সদস্যসংখ্যা : ৬,১৫,০০০

সর্বমোট বিমান শক্তিমত্তা : ৫৯৬

যুদ্ধবিমান : ২৫২

যুদ্ধ ট্যাংক : ২,৭৬০ মোট নৌ-শক্তি : ৬৫

সামরিক বাজেট : ২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার

দেশটি গোপনে পারমাণবিক অস্ত্রের মজুদ বাড়াচ্ছে বলে অনেক অভিযোগ রয়েছে।

১৫. ইন্দোনেশিয়া

হাজার হাজার দ্বীপের সমন্বয়ে গঠিত ইন্দোনেশিয়া প্রাকৃতিক সম্পদে পরিপূর্ণ এক দেশ। তব, প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে মুসলিম দেশটি পরিপূর্ণ। তাদের সামরিক সক্ষমতা দেখে নেয়া যাক।

ছবি : এপি

পরাক্রম সূচক রেটিং : ০.৩২৬৬

মোট জনসংখ্যা : ২৬,০৫,৮০,৭৩৯

মোট সামরিক সদস্যসংখ্যা : ৯,৭৫,৭৫০

সর্বমোট বিমান শক্তিমত্তা : ৪৭৮

যুদ্ধবিমান : ৪১

যুদ্ধ ট্যাংক : ৪১৮ মোট নৌ-শক্তি : ২২১

সামরিক বাজেট : ৬ দশমিক ৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার

১৪. ব্রাজিল

আয়তনে বিশ্বের বৃহত্তম এই দেশটি মূলত ফুটবলের জন্যেই পরিচিত। দক্ষিণ আমেরিকার একমাত্র দেশ যাদের শাসন করেছে পর্তুগাল। দেশটির সামরিক শক্তির মাত্রাটা দেখে নেই।

ছবি : রয়টার্স

পরাক্রম সূচক রেটিং : ০.৩১৯৮

মোট জনসংখ্যা : ২০,৭৩,৫৩,৩৯১

মোট সামরিক সদস্যসংখ্যা : ১৯,৮৭,০০০

সর্বমোট বিমান শক্তিমত্তা : ৭২৩

যুদ্ধবিমান : ৪৩

যুদ্ধ ট্যাংক : ৪৬৯ মোট নৌ-শক্তি : ১১০

সামরিক বাজেট : ২৯ দশমিক ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার

১৩. ইরান

চলমান বিশ্বের সবচেয়ে আলোচিত রাষ্ট্রের নাম ইরান, পারস্য উপসাগর-হরমুজ প্রণালী নিয়ে পশ্চিমা বিশ্ব ও সৌদি-আমিরাত, ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধ করছে ইসলামি প্রজাতন্ত্রের এই দেশটি। এটিই পৃথিবীর একমাত্র ইসলামিক রাষ্ট্র যারা মার্কিন, ইউরোপকে তোয়াক্কা না করে নিজেদের নিজেরাই উন্নত করে চলেছে।

ছবি : রয়টার্স

পরাক্রম সূচক রেটিং : ০.৩১৩১

মোট জনসংখ্যা : ৮,২০,২১,৫৬৪

মোট সামরিক সদস্যসংখ্যা : ৯,৩৪,০০০

সর্বমোট বিমান শক্তিমত্তা : ৫০৫

যুদ্ধবিমান : ১৫০

যুদ্ধ ট্যাংক : ১,৬৫০ মোট নৌ-শক্তি : ৩৯৮

সামরিক বাজেট : ৬ দশমিক ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার

১২. মিশর

মানব সভ্যতার প্রাচীন এক সভ্যতার নাম মিশরীয় সভ্যতা। পিরামিডের এই দেশটি আধুনিককালে এসে যেন কেমন দিক হারিয়ে ফেলেছে। ইসরায়েলের সঙ্গে আরব যুদ্ধে পরাজয়, আরব বসন্ত, মুরসিকাণ্ডসহ নানাবিধ কারণে দেশটির অবস্থা নড়বড়ে। তবুও, সামরিক দিক থেকে বেশ শক্তিশালী অবস্থায় আছে তারা।

ছবি : এএফপি

পরাক্রম সূচক রেটিং : ০.২৭৫১

মোট জনসংখ্যা : ৯,৭০,৪১,০৭২

মোট সামরিক সদস্যসংখ্যা : ১৩,২৯,২৫০

সর্বমোট বিমান শক্তিমত্তা : ১,১৩২

যুদ্ধবিমান : ৩০৯

যুদ্ধ ট্যাংক : ৪,৯৪৬ মোট নৌ-শক্তি : ৩১৯ (দুটি রণতরী রয়েছে)

সামরিক বাজেট : ৪ দশমিক ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার

১১. ইতালি

রোমান সভ্যতার দেশ ইতালির রয়েছে এক দীর্ঘ সমর ইতিহাস। ২য় বিশ্বযুদ্ধে হিটলারের অন্যতম প্রধান সহযোগী ছিল ইতালি। ঋণের চাপে দেশটি পিছিয়ে থাকলেও সামরিক সক্ষমতায় খুব একটা খারাপ অবস্থায় নেই তারা।

ছবি : রয়টার্স

পরাক্রম সূচক রেটিং : ০.২৫৬৫ (ন্যাটো সদস্য)

মোট জনসংখ্যা : ৬,২১,৩৭,৮০২

মোট সামরিক সদস্যসংখ্যা : ২,৬৭,৫০০

সর্বমোট বিমান শক্তিমত্তা : ৮২৮

যুদ্ধবিমান : ৯০

যুদ্ধ ট্যাংক : ২০০ মোট নৌ-শক্তি : ১৪৩ (দুটো রণতরী রয়েছে)

সামরিক বাজেট : ৩৭ দশমিক ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার

১০. জার্মানি

পৃথিবির ইতিহাসে অন্যতম জাতীয়তাবাদী রাষ্ট্র, যারাই দুটো বিশ্বযুদ্ধের পেছনের মূল ভিলেন। বিংশ শতকে শ্রেষ্ঠত্বের প্রমাণ রাখতে বিশ্বে তাণ্ডব চালায় দেশটি। সর্বশেষ হিটলারের নেতৃত্বে বিশ্বে ইহুদিমুক্ত করে ফেলেছিল, দখল করে নিয়েছিল ইউরোপের অর্ধেক ও বিশ্বের নানান প্রান্ত। দুটো যুদ্ধে পরাজয়ের পর অতি মেধাবী ও দক্ষ জার্মানরা নিজেদের গঠন করেছে আর্থিক-প্রাযুক্তিক পরাশক্তি হিসেবে। সামরিকভাবেও জার্মানরা খুব একটা পিছিয়ে নেই বোধহয়।

ছবি : রয়টার্স

পরাক্রম সূচক রেটিং : ০.২৪৬১ (ন্যাটো সদস্য)

মোট জনসংখ্যা : ৮,০৫,৯৪,০১৭

মোট সামরিক সদস্যসংখ্যা : ২,০৮,৬৪১

সর্বমোট বিমান শক্তিমত্তা : ৭১৪

যুদ্ধবিমান : ৯৪

যুদ্ধ ট্যাংক : ৪৩২ মোট নৌ-শক্তি : ৮১

সামরিক বাজেট : ৪৫ দশমিক ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার

৯. তুরস্ক

ইউরেশিয়ার দেশ তুরস্ক, ইতিহাসের প্রাচীন অধ্যয়েই নিজেদের যুদ্ধবাজ আচরণে খ্যাতি অর্জন করেছে তুর্কিরা। সর্বশেষ অটোমান সাম্রাজ্যের পতনের পর কিছুটা স্তিমিত হলেও এরদোয়ানের দক্ষ নেতৃত্বে আবারও বিশ্বের এক পরাশক্তি হয়ে উঠেছে তুর্কিরা।

ছবি : রয়টার্স

পরাক্রম সূচক রেটিং : ০.২২১৬ (ন্যাটো সদস্য)

মোট জনসংখ্যা : ৮,০৮,৪৫,২১৫

মোট সামরিক সদস্যসংখ্যা : ৭,১০,৫৬৫

সর্বমোট বিমান শক্তিমত্তা : ১০৫৬

যুদ্ধবিমান : ২০৭

যুদ্ধ ট্যাংক : ২,৪৪৬ মোট নৌ-শক্তি : ১৯৪

সামরিক বাজেট : ১০ দশমিক ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার

৮. জাপান

১৯৪১ সালে অক্ষশক্তি জাপান আকস্মিক বোমা বর্ষণের মার্কিন পার্ল হার্বরকে তলিয়ে দিয়ে যে ভুল করেছে তার জরিমানা এখনও গুণতে হচ্ছে জাপানিদের। বিশ্বে এখন পর্যন্ত একমাত্র পারমাণবিক হামলার শিকার জাপান, ২য় বিশ্বযুদ্ধ অবসানের পর সরাসরি আর তেমন কোনো সংঘর্ষে জড়ায়নি জাপান। যদিও, সামরিকভাবে দেশটি বেশ উন্নত, দখল করে নিয়েছে অষ্টম শক্তিধর দেশের স্থান।

ছবি : জোহা

পরাক্রম সূচক রেটিং : ০.২১০৭

মোট জনসংখ্যা : ১২,৬৪,৫১,৩৯৮

মোট সামরিক সদস্যসংখ্যা : ৩,১০,৪৫৭

সর্বমোট বিমান শক্তিমত্তা : ১,৫০৮

যুদ্ধবিমান : ২৯০

যুদ্ধ ট্যাংক : ৬৭৯ মোট নৌ-শক্তি : ১৩১ (৪টি রণতরী রয়েছে)

সামরিক বাজেট : ৪৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার

৭. দক্ষিণ কোরিয়া

পুঁজিবাদী রাষ্ট্র হিসেবে বিচ্ছিন্ন কোরিয়ার দক্ষিণ অংশের যাত্রা শুরু অনেক আগে থেকেই। এশিয়ায় অন্যতম শক্তিশালী মার্কিন জোট হিসেবেও তারা পরিচিত। প্রযুক্তির সঙ্গে সামরিকভাবেও বিশ্বে বেশ ক্ষমতাধর তারা। বিপজ্জনক কিমের পাশে থাকতে নিজেদের ক্ষমতা যে বাড়াতেই হতো মুনের দেশটিকে।

ছবি : এপি

পরাক্রম সূচক রেটিং : ০.২০০১

মোট জনসংখ্যা : ৫,১১,৮১,২৯৯

মোট সামরিক সদস্যসংখ্যা : ৫৮,২৭,২৫০

সর্বমোট বিমান শক্তিমত্তা : ১,৫৬০

যুদ্ধবিমান : ৪০৬

যুদ্ধ ট্যাংক : ২,৬৫৪ মোট নৌ-শক্তি : ১৬৬ (একটি রণতরী রয়েছে)

সামরিক বাজেট : ৪০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার

৬. যুক্তরাজ্য

আধুনিক গণতন্ত্রের পথিকৃৎ ব্রিটিশরা ৫ শতক ধরে বিশ্বের প্রায় অর্ধেক দেশকে শাসন করেছে। এত দীর্ঘকাল ধরে এতগুলো দেশকে একসঙ্গে কেউই আর শাসন করতে পারেনি। উনবিংশ শতকে এসে তাদের কাছ থেকে এই ঐতিহ্য কেড়ে নেয় তাদের কাছ থেকেই স্বাধীন হওয়া রাষ্ট্র যুক্তরাষ্ট্র। পারমাণবিক শক্তিধর দেশটি সামরিক সক্ষমতায় এখন ৬ষ্ঠ স্থানে।

ছবি : বিবিসি

পরাক্রম সূচক রেটিং : ০.১৯১৭ (ন্যাটো সদস্য)

মোট জনসংখ্যা : ৬,৪৭,৫৯,৪৫২

মোট সামরিক সদস্যসংখ্যা : ২,৭৯,২৩০

সর্বমোট বিমান শক্তিমত্তা : ৮৩২

যুদ্ধবিমান : ১০৩

যুদ্ধ ট্যাংক : ২২৭ মোট নৌ-শক্তি : ৭৬ (দুটো রণতরী রয়েছে)

সামরিক বাজেট : ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার

৫. ফ্রান্স

নেপোলিয়ানের দেশ ফ্রান্স, ব্রিটিশদের পাশাপাশি বিশ্ব শাসনে এদের অংশীদারিত্বও কম নয়। শাসন করেছে অনেক দেশ, এমনকি ব্রিটিশদের সঙ্গে যুদ্ধও করেছে শত্রুরাষ্ট্র হিসেবে পরিচিতরা। রয়েছে পারমাণবিক অস্ত্র, যারা এখন ৫ম স্থানে।

ছবি : এএফপি

পরাক্রম সূচক রেটিং : ০.১৮৬৯ (ন্যাটো সদস্য)

মোট জনসংখ্যা : ৬,৭১,০৬,১৬১

মোট সামরিক সদস্যসংখ্যা : ৩,৮৮,৬৩৫

সর্বমোট বিমান শক্তিমত্তা : ১,২৬২

যুদ্ধবিমান : ২৯৯

যুদ্ধ ট্যাংক : ৪০৬ মোট নৌ-শক্তি : ১১৮(৪টি রণতরী রয়েছে)

সামরিক বাজেট : ৪০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার

৪. ভারত

দক্ষিণ এশিয়ার পরাশক্তি ও বিশ্বের ২য় বৃহত্তম জনবহুল দেশ ভারত এখন এক বৈশ্বিক মহাশক্তি। চীন-পাকিস্তানের মাঝে অবস্থানকারী দেশটি নিজেদের সামরিক শক্তি বৃদ্ধিতে মনোযোগ দিচ্ছে ঈর্ষণীয়ভাবে। দরিদ্রতায় জর্জরিত থাকার পরেও নিজেদের এখন গ্লোবাল প্লেয়ার হিসেবে উপস্থিত করছে ভারত, পারমাণবিক শক্তিধর দেশটির অবস্থান ৪র্থ।

ছবি : রয়টার্স

পরাক্রম সূচক রেটিং : ০.১৪১৭

মোট জনসংখ্যা : ১২৮,১৯,৩৫,৯১১

মোট সামরিক সদস্যসংখ্যা : ৪২,০৭,২৫০

সর্বমোট বিমান শক্তিমত্তা : ২,১৮৫

যুদ্ধবিমান : ৫৯০

যুদ্ধ ট্যাংক : ৪,৪২৬ মোট নৌ-শক্তি : ২৯৫ (একটি রণতরী রয়েছে)

সামরিক বাজেট : ৪৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার

৩. চীন

মাত্র অর্ধশতকের মধ্যে বিশ্বে সবচেয়ে উন্নতি লাভ করা রাষ্ট্রের নাম চীন। বিশ্বের সবচেয়ে বড় জনসংখ্যার দেশটি সার্বিকভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ স্থান দখলে সবার আগে রয়েছে। অর্থনৈতিক বিপ্লবের সঙ্গে সামরিকভাবেও বৈপ্লবিক উন্নতি সাধন করেছে সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রটি। আগামীর বিশ্ব হবে এশিয়ার, আর তার নেতৃত্ব দিবে চীন। এটা এখন বৈশ্বিক রাজনীতির সবচেয়ে পরিচিত ভবিষ্যদ্বাণী।

ছবি : এসসিএমপি

পরাক্রম সূচক রেটিং : ০.০৮৫২

মোট জনসংখ্যা : ১৩৭,৯৩,০২,৭৭১

মোট সামরিক সদস্যসংখ্যা : ২৬,৯৩,০০০

সর্বমোট বিমান শক্তিমত্তা : ৩,০৩৫

যুদ্ধবিমান : ১,১২৫

যুদ্ধ ট্যাংক : ৭,৭১৬ মোট নৌ-শক্তি : ৭১৪ (একটি রণতরী রয়েছে)

সামরিক বাজেট : ১৫১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার

২. রাশিয়া

আয়তনে বিশ্বের দীর্ঘতম রাষ্ট্রটি ইউরোপের অধিকাংশজুড়ে আর এশিয়ার কিছু নিয়ে অবস্থিত। সামরিক দিক থেকেও রাশিয়াকে খাটো করে দেখার মতো দুঃসাহস হিটলার ছাড়া কেউ বোধহয় করেনি আর। হিটলার যদিও সেই ভুলের শাস্তি পেয়েছে নির্মমভাবে, রাশিয়া শুধু এক পরাশক্তির নামই নয়, পুতিনের সমাজতান্ত্রিক দেশটিকে বলা হয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ব নিয়ন্ত্রণে নেয়ার প্রধান অন্তরায় হিসেবেই।

ছবি : তাস

পরাক্রম সূচক রেটিং : ০.০৮৪১

মোট জনসংখ্যা : ১৪,২২,৫৭,৫১৯

মোট সামরিক সদস্যসংখ্যা : ৩৫,৮৬,১২৮

সর্বমোট বিমান শক্তিমত্তা : ৩,৯১৪

যুদ্ধবিমান : ৮১৮

যুদ্ধ ট্যাংক : ২০,৩০০ মোট নৌ-শক্তি : ৩৫২ (একটি রণতরী রয়েছে)

সামরিক বাজেট : ৪৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার

১. মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র

অষ্টাদশ শতকে স্বাধীন, বিংশ শতকে এসে বিশ্বের অজেয় পরাশক্তি হিসেবে আবির্ভূত রাষ্ট্রের নাম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। মেক্সিকো এবং দক্ষিণ আমেরিকার কিছু রাজ্যের দখল নিয়ে একটি স্বাধীন রাজ্য কলম্বিয়াসহ ৫১ প্রদেশের দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। অর্থনৈতিক, সামরিক, রাজনৈতিক এমন কোন ক্ষেত্র নেই যেখানে যুক্তরাষ্ট্র ২য় অবস্থানে। বিশ্বের যেকোন প্রান্তের যেকোন দ্বন্দ্বের সঙ্গে একটা রাষ্ট্রের সম্পৃক্ততা বের হয়ে আসে, তা হলো নব্য সাম্রাজ্যবাদের সম্রাট। যাদের রয়েছে চোখধাধানো সামরিক শক্তি।

ছবি : সংগৃহীত

পরাক্রম সূচক রেটিং : ০.০৮১৮ (ন্যাটো সদস্য)

মোট জনসংখ্যা : ৩২,৬৬,২৫,৭৯১

মোট সামরিক সদস্যসংখ্যা : ২০,৮৩,১০০

সর্বমোট বিমান শক্তিমত্তা : ১৩,৩৬২

যুদ্ধবিমান : ১,৯৬২

যুদ্ধ ট্যাংক : ৫,৮৮৪ মোট নৌ-শক্তি : ৪১৫ (২০টি রণতরী আছে)

সামরিক বাজেট : ৭১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড