• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৯ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

দক্ষিণ এশিয়ার বন্যা পরিস্থিতি : নিহত ১৫৭, গৃহহারা ৬০ লক্ষাধিক

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

১৭ জুলাই ২০১৯, ০৯:৫৩
দক্ষিণ এশিয়ার বন্যা পরিস্থিতি
ছবি : সংগৃহীত

মৌসুমী বন্যায় সৃষ্ট ভারী বর্ষণ ও ভূমিধসে ভারত, নেপাল ও বাংলাদেশ প্লাবিত হয়ে এখন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছে ১৫৭ জন, গৃহহারা হয়েছে ৬০ লাখেরও বেশি। দক্ষিণ এশিয়ার অধিকাংশ নদী ভারত, বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার ফলে এই ৩টি দেশই এমনভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় প্রতি মৌসুমে, পাকিস্তানেও বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। ভারতের আসামে ও বিহারেই প্রাণ হারায় ৫৫ জন, উত্তরপ্রদেশে ১৪, নেপালে ৭৮ এবং বাংলাদেশে ১০ জন।

বাংলাদেশ সরকারের মতে, মৌসুমী বন্যায় নিম্নাঞ্চলের প্রায় দুই লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে। দেশের উত্তরাঞ্চল ও সিলেট এলাকায় বন্যায় মঙ্গলবার পর্যন্ত প্রাণ হারায় ৮ জন।

বাংলাদেশের বন্যায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত স্থানের একটি হচ্ছে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির। যা মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা সাড়ে ৭ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর আশ্রয়স্থল। বন্যার ফলে পানি বৃদ্ধি পেয়ে লক্ষাধিক উদ্বাস্ত রোহিঙ্গা ফের গৃহহারা হয়। বন্যা ও ভূমিধসে শিশুসহ দুজন প্রাণ হারায় মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানায়।

ভারতের আসাম ও বিহার রাজ্যে বন্যার সবচেয়ে বাজে ধাক্কাটা লাগে। সোমবার দেশটির প্রকাশিত এক সরকারী রিলিজ অনুযায়ী, গত ১০ দিনে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় প্রত্যন্ত এলাকাজুড়ে ক্রমবর্ধমান পানির কারণে আসামের প্রায় ৪৩ লাখ লোককে তাদের বাড়ি থেকে বিতাড়িত হয়েছে।

দেশটির টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে দেখা যায়, বিহারের সড়ক ও রেলপথের লাইনে বুক সমান পানিতে মানুষ মাথায় করে তাদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বয়ে নিয়ে যাচ্ছে। বিহার ও আসামের মানুষ বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

দক্ষিণ এশিয়ায় মৌসুমী বন্যার কারণে প্রতি বছর ব্যাপক স্থানান্তরণ, ক্ষয়ক্ষতি ও মৃত্যু ঘটে। চলতি মৌসুম, যা কেবল শুরু হলো এখনই তাতে নিহতের সংখ্যা কয়েকশ হয়ে গিয়েছে, বাস্তুচ্যুত হয়েছে ৬০ লক্ষাধিক মানুষ, আগামী সপ্তাহগুলোতে বন্যা অবস্থা বৃদ্ধি পাবে। ২০১৭ সালের মৌসুমী বন্যা নেপাল, ভারত ও বাংলাদেশে কমপক্ষে ৮০০ জন মানুষকে হত্যা এবং ফসল ও বাড়িঘর ধ্বংস করে দিয়ে যায়।

আসামে বন্যায় ব্রহ্মপুত্র নদীর পানি বৃদ্ধি পায়, যে নদীটি হিমালয় থেকে উৎপত্তি হয়ে আসামের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে প্রবাহিত হয়, নদীটির উপনদীগুলো এখন স্পষ্ট। আসামের কাসিরাঙ্গা জাতীয় উদ্যানের বেশিরভাগই তলিয়ে যায়, যেখানে বিশ্বের বিরল এক শৃঙ্গাকার রিনোর বাস। আসামের কর্মকর্তারা জানান, সোমবার সকালে এখানে চারজন মানুষ ডুবে মারা যায়।

আসামের মুখ্যমন্ত্রী সার্ববানন্দ সোনাওয়াল সাংবাদিকদের বলেন, বন্যায় ৩১-৩২টি জেলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা বন্যা পরিস্থিতির মোকাবিলার জন্য লড়াই করে যাচ্ছি। আসাম মূলত চা শিল্পের জন্য পরিচিত।

নেপালের প্রায় এক তৃতীয়াংশ জেলার সর্বত্র ভারী বৃষ্টিপাতের শিকার হয়েছে, যেখানে প্রায় ৭৮ জন নিহত ও ৩১ জন নিখোঁজ রয়েছে। বেশিরভাগই ভূমিধসে প্রাণ হারিয়েছে, পাহাড়ি দেশটিতে ভারী বর্ষণে পাহাড় ধসের ঘটনা স্বাভাবিক, এতে বাড়িঘর ও চাপা পড়েছে। বন্যার পানি ভাসিয়ে নিয়ে গিয়েছে অনেক অবকাঠামো। দক্ষিণ-পূর্ব নেপালের কোসি নদীতে পানির স্তর হ্রাস পেয়েছে বলে ভারতের কর্তৃপক্ষ জানায়। কোসি নদী নেপাল থেকে বিহারে প্রবাহিত হয়।

২০০৮ সালে কোসি নদীর তীর ভেঙে যায় এবং নদীটি তার দিক পরিবর্তন করে। যার ফলে বিপুল পরিমাণ জমি ভাসিয়ে নিয়ে যায় প্রবাহের সঙ্গে এবং এই ঘটনা ৫ শতাধিক মানুষ প্রাণ হারায় তখন। সানসারি জেলার সহকারী জেলা প্রশাসক চীরঞ্জীবী গিরি রয়টার্সকে বলেন, পানির চাপ এই মুহুর্তে হ্রাস পেয়েছে তাই আর বিপদের সম্ভাবনা নাই।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড