মোদীর নামে বেঙ্গালুরুতে মসজিদ! আসল রহস্য কী?

গত মাসেই ভারতের জাতীয় নির্বাচনে বিরাট জয় পেয়ে ফের ক্ষমতায় আসেন হিন্দুত্ববাদী হিসেবে পরিচিত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। নির্বাচনে জয়লাভের পরেই কিছু অনুরাগী সোশ্যাল সাইটে দাবি করেন যে, মোদীর নামে দেশটির বেঙ্গালুরুতে একটি মসজিদ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এই দাবি ঘিরে রীতিমতো সাড়া পড়ে যায় সোশ্যাল সাইটে, মোদী এবং বিজেপি সরকার সাধারণত উগ্র হিন্দুত্ববাদী হিসেবেই পরিচিত। যদিও মোদী অনুরাগীদের এই দাবির পরেই প্রকৃত তথ্য সামনে আসে বিভিন্ন ওয়েবসাইটের মাধ্যমে। এই মসজিদটি প্রায় ১৭০ বছরের পুরনো, যেখানে মোদীর বয়স মাত্র ৬৯ বছর।

এই মসজিদের নামের সঙ্গে দেশটির প্রধানমন্ত্রীর কোনো যোগসূত্র নেই বলে সাফ দাবি করেন পূর্ব বেঙ্গালুরুর তাসকের শহরের মোদী মসজিদের ইমাম গুলাম রাব্বানি। তিনি প্রায় ২ দশক ধরে ওই মসজিদের পরিচর্যার দায়িত্বে আছেন। শুধু তাসকেরের এই মসজিদটিই নয়, বেঙ্গালুরুর ট্যানেরি রোডের কাছে মোদী মসজিদ নামে খ্যাত এরকম আরও ২টি মসজিদ আছে।

বেঙ্গালুরুর মোদী মসজিদের ইতিহাস

১৮৪৯ সালের দিকে যখন তাসকের শহরকে লোকে একটি সেনা ও নাগরিকদের স্থান বলেই জানতো তখন সেখানে বাস করতেন এক বর্ধিষ্ণু ব্যবসায়ী মোদী আবদুল গফুর। 'তিনিই ওই স্থানে একটি মসজিদের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন ও ১৮৪৯ সালে তারই উদ্যোগে সেখানে ওই মসজিদটি তৈরি হয়', বলে জানান মোদী মসজিদ কমিটির অন্যতম সদস্য আসিফ ম্যাকেরি। পরবর্তীতে মোদী আবদুল গফুরের পরিবারই বেঙ্গালুরুতে মোদী মসজিদ নামেই আরও দুটি মসজিদ নির্মাণ করেন। এমনকি বেঙ্গালুরুর ট্যানেরি এলাকার একটি রাস্তাও মোদী রোড বলে প্রচলিত হয়ে যায়।

২০১৫ সালে, ওই মোদী মসজিদটি ভেঙে ফেলে নতুন করে কিছু পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করে তৈরি করা হয়। নতুন রূপে তৈরি হওয়া সেই মসজিদটিই গত মাসে সাধারণের প্রবেশের জন্যে খুলে দেয়া হয়েছে। কাকতালীয়ভাবে আর ঠিক ওই সময়েই দ্বিতীয়বার দেশটির প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেন নরেন্দ্র মোদী। এর ফলেই সোশ্যাল সাইটে ওই মসজিদের কথা তুলে ধরে কিছু অনুরাগী দাবি করেন, প্রধানমন্ত্রী মোদীর নামে মসজিদটি তৈরি হয়েছে।

ওই মসজিদ নির্মাণ সংস্থার প্রধান স্থপতি হাসিবুর রহমান 'এনডিটিভি'কে জানিয়েছেন, 'ইন্দো-ইসলামিক স্থাপত্যেই ওই মোদী মসজিদটি তৈরি হয়েছে এবং প্রায় ৩০ হাজার বর্গ ফুট জায়গাজুড়ে সেটি পুনর্নির্মাণ করা হয়েছে। মসজিদের মেঝে নারীদের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করা হয়েছে যাতে সেখানে বসে তারা প্রার্থনা করতে পারেন'। মসজিদটির দেখভালের দায়িত্ব রয়েছে স্টেট ওয়াকফ বোর্ডের প্রশাসনের ওপর।