• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৯ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

বিজেপি সরকারে নতুন স্পিকার ওম বিড়লা

রাম-রহিমকে মিলিয়ে সংসদ অধিবেশন শুরু কংগ্রেসের

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

১৯ জুন ২০১৯, ১৫:৪৭
লোকসভা সংসদ
ভারতের লোকসভার সংসদে কংগ্রেস দলনেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী। ছবি : সংগৃহীত

ভারতে লোকসভা নির্বাচনে জয়ের পর সংসদ অধিবেশনে কংগ্রেস দলনেতা হিসেবে বক্তব্য রাখেন অধীররঞ্জন চৌধুরী। দলের পর্যাপ্ত সাংসদের অভাবে বিরোধী দলনেতার মর্যাদা না পেলেও, বুধবার (১৯ জুন) লোকসভার প্রথম দিনের ভাষণেই কংগ্রেস দলনেতা বুঝিয়ে দিলেন, বিনা যুদ্ধে তিনি ছাড়বেন না সূচ্যগ্র মেদিনীও। কোনো রকমের আপোস করবেন না ধর্মনিরপেক্ষতার প্রশ্নে। রাম আর রহিম দুই-ই তার কাছে সমান। এ দিনের ভাষণে সকলেরই মন জয় করে নেন অধীর।

ভারতের সংসদে বিজেপি সরকারে নতুন স্পিকার ওম বিড়লা এ দিন তার আসনে বসার পরেই সভায় প্রথম বলার সুযোগ দেন দেশটির নব-নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। তার পরেই বলার সুযোগ পান কংগ্রেস দলনেতা অধীর চৌধুরী। স্পিকার তার নাম ঘোষণা করেন দুবার।

ভাষণে একটি শায়েরিকে উদ্ধৃত করে অধীর বলেন, 'দেশটা এমন হোক, আমাদের সমাজটা এমন হোক যাতে একজন মুসলিম মসজিদে গিয়ে রামকে খুঁজে পান। একজন পণ্ডিত (হিন্দু) যেন মন্দিরে গিয়ে খুঁজে পান রহমানকে। বিভেদে যেন খণ্ডিত না হয়ে যায় দেশ। মানুষ যেন মানুষকেই খুঁজে পান। কোনো ধর্মের রং প্রকট না হয়ে ওঠে যেন। ধর্ম যেন হয়ে ওঠে ঐক্য, সংহতির চালিকাশক্তি। সমাজটাকে আমাদের সেইভাবেই গড়ে তুলতে হবে।'

তার আগে ভাষণ দিতে গিয়ে মোদী বলেন, 'আমি কারও পক্ষে যেতে চাই না। যেতে চাই না কারও বিপক্ষেও। আমি নিরপেক্ষ থাকতে চাই।'

অধীর প্রধানমন্ত্রীর সেই মন্তব্যের উল্লেখ করে নতুন স্পিকারকে বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী আজ যে কথা বলেছেন, আমি চাই, সেই মতো আপনিও লোকসভায় কোনো আলোচনা, বিতর্কে কারও পক্ষে বা কারও বিপক্ষে না গিয়ে নিরপেক্ষ থাকুন পুরোপুরি। সেটাই ভারতীয় গণতন্ত্র, ভারতীয় সংবিধানের মর্ম কথা।'

আর সে ক্ষেত্রে কংগ্রেস যে আদর্শ বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করবে, সেই অঙ্গীকারও করেন অধীর। স্পিকারের উদ্দেশে বলেন, 'আপনার কোটার (রাজস্থানের কোটায় লোকসভা আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছেন নতুন স্পিকার) কচুরি খুব বিখ্যাত। খুব সুস্বাদু। আমি চাই, আপনার সভাপতিত্বে এই সভার আলোচনা, বিতর্কও যেন সুস্বাদু থাকে সব সময়। তা যেন খিচুড়ি না হয়ে যায়। আমরা বিরোধীরা সেই দিকে কড়া নজর রাখব।'

তার প্রথম দিনের ভাষণে স্পিকারকে দেশটির সবচেয়ে বড় সমস্যাটির কথাও মনে করিয়ে দিতে ভুল হয়নি অধীরের। কৃষকদের সমস্যার কথা তুলতেই অবশ্য কিছুটা প্রতিবাদের মুখে পড়েন কংগ্রেস দলনেতা। তবু সেই সব উপেক্ষা করে বিনীতভাবেই অধীর বলে চলেন, 'জানি, আপনি একজন সমাজসেবী। একজন কৃষি বিশেষজ্ঞও। সেই ভরসাতেই বলব, আমাদের দেশের কৃষকদের সমস্যাগুলো যাতে লোকসভার আলোচনায় গুরুত্ব পায়, আপনি সেই দিকে নজর রাখবেন।'

ভারতীয় গণতন্ত্রের গভীরতা কতটা বোঝাতে এবার লোকসভা ভোটে একটি ঘটনার উল্লেখ করেন লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা। বলেন, 'মালে গাঁও বলে একটা জায়গা রয়েছে অরুণাচল প্রদেশে। সেটা একটা পাহাড়ি গ্রাম। সেখানে ভোটার ছিলেন একজন। তিনি যাতে ভোট দিতে পারেন, সেজন্য ২ দিন ধরে পাহাড়ে ৬ কিলোমিটার পথ বেয়ে ৬ জন নির্বাচনি কর্মকর্তা গিয়েছিলেন সেই ভোটারের গ্রামে। তার ভোট নিয়ে এসেছিলেন। দেশের মোট ৯০ কোটি ভোটারের ৬৭ শতাংশ এবার ভোট দিয়েছেন। এটাও খুব গুরুত্বপূর্ণ। এতে প্রমাণিত হয়, দেশের জনসংখ্যার সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশই ভোটে সামিল হয়েছেন।'

সপ্তদশ লোকসভায় কংগ্রেসের ভূমিকা কী হবে? স্পিকারকে অধীর বলেছেন, 'আপনার মাধ্যমে আমি প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়ে দিতে চাই, আমার দল যে নীতিতে এত দিন বিশ্বাস করে এসেছে, সেই ডিবেট (আলোচনা), ডিসেন্স (সহবত) ও ডিসিশন (সিদ্ধান্তকে মর্যাদা)-এর আদর্শেই অটল থাকবে। তবে, লোকসভার মর্যাদা রক্ষার যাবতীয় দায়িত্ব আপনারই। আপনিই সভার প্রিসাইডিং অফিসার। সভার প্রহরী।'

লোকসভার কাজকর্মকে আরও গতিশীল ও ফলপ্রসূ করে তুলতে কী কী করণীয়, এ দিন সেই ব্যাপারেও পরামর্শ দিয়েছেন কংগ্রেস দলনেতা। বলেছেন, 'সংসদীয় স্ট্যান্ডিং কমিটিগুলোকে অযথা বেশি বড় না করাটাই ভালো। সংসদে যত বেশি আলোচনা, বিতর্ক চলে ততই সাধারণ মানুষের উপকার হয়। তাদের সমস্যাগুলো সামনে আসে।'

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড