• মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩১ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

কানাডা থেকে ইস্পাত আমদানিতে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

১৮ মে ২০১৯, ১৫:৫২
ডোনাল্ড ট্রাম্প
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। (ছবিসূত্র : ভক্স)

উত্তর আমেরিকার দেশ কানাডার ওপর থেকে ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানিতে আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। শুক্রবার (১৭ মে) এক যৌথ বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডা কর্তৃপক্ষ এ তথ্য নিশ্চিত করে।

যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কানাডা থেকে যে স্টিল আমদানি করবে এর ২৫ শতাংশ এবং অ্যালুমিনিয়ামে ১০ শতাংশ শুল্ক কমানোর বিষয়ে দেশগুলো একমত হয়েছে। যা আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কার্যকর হবে।

এটি ব্যাপকভাবে প্রত্যাশিত যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকার খুব শিগগিরই এ বিষয়ে তাদের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবে। এর আগে গত বছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যুতে দেশটির এসব পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করেছিল। এই চুক্তির আওতায় এখন থেকে এই দেশগুলো থেকে কেনা স্টিল বা অ্যালুমিনিয়ামের আমদানিতে শুল্ক থাকবে না।

যদিও যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডা এখন থেকে তাদের এই পণ্য আমদানির ওপর নজরদারি বাড়াবে। যদি কোনো দেশ এসব পণ্য কেনার জন্য খুব বেশি দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ হয় তাহলে তারা অন্যান্য দেশের সঙ্গে পরামর্শের মাধ্যমে পুনরায় তা আমদানি করতে পারে।

এর আগে গত বছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো এবং কানাডা ইউএমএমসিএ নামে একটি বাণিজ্য চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিল। যাকে এতদিন এই সঙ্কট থেকে পরিত্রাণের প্রধান বাধা হিসেবে উল্লেখ করেছিল বিশ্লেষকরা।

কানাডার পণ্য

কানাডার উৎপাদিত অ্যালুমিনিয়ামের পণ্য। (ছবিসূত্র : দ্য গ্লোবাল নিউজ)

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো এবং কানাডায় লিভিজ উত্তোলনের চুক্তি ঘোষণার মাধ্যমে ওয়াশিংটন এবং মেক্সিকো সিটি এই ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম সরবরাহ করতে পারবে। যদিও তারা ইউএমএমসিএ নামে এই চুক্তিটি বাস্তবায়নের জন্য নিজ নিজ সরকারের প্রতি অনুরোধ জানাবে।

এর পাশাপাশি কানাডা এও ঘোষণা করেছে যে, এই শুল্ক প্রত্যাহারের মাধ্যমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের ইস্পাত এবং অ্যালুমিনিয়ামের আমদানি আরও বৃদ্ধি করতে পারবে। যা হবে অতি কম খরচে।

‘বিবিসি নিউজে’র ব্যবসায় প্রতিনিধি মিচেল ফ্লেরির নিউইয়র্ক থেকে বিষয়টি বিশ্লেষণ করেছেন। তিনি বলেন, ‘বর্তমানে স্পট লাইটে রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং চীন মধ্যকার বাণিজ্য সম্পর্ক। সুতরাং এমন এক সময়ে কানাডা এবং মেক্সিকো থেকে আসা ইস্পাত এবং অ্যালুমিনিয়ামের ওপর দরপত্র উত্তোলনের বিষয়ে আমেরিকার এই সিদ্ধান্তটি ছিল সুখবর।’

মিচেল ফ্লেরির এও বলেছেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন চীনের সঙ্গে অনেক বেশি ঘনিষ্ঠ বাণিজ্য চুক্তির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। ইউএসএমসিএ বাণিজ্য চুক্তি মানে কিন্তু এনএএফটিএ প্রতিস্থাপন নয়।’

‘প্রায় এক বছর যাবত এই চুক্তির অনুমোদনের অপেক্ষায় ছিল। কেননা এতদিন কানাডা এবং মেক্সিকো এই শুল্ক চুক্তির বিষয়ে নিজেদের এগিয়ে আনতে অঙ্গীকার জানিয়েছিল। তাছাড়া কংগ্রেসের কয়েকজন সদস্যও এ বিষয়ে প্রকাশ্যে বিরোধিতা করেছিলেন।’

বিশ্লেষকদের দাবি, চুক্তিটি এখন উত্তর আমেরিকাতে বাণিজ্য সম্প্রসারণের জন্য এক নতুন যুগের উদ্বোধন করে। যা শেষ সীমারেখাটি অতিক্রমের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী বৈষম্য বাড়ায়। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বিভিন্ন দেশে এই শুল্কারোপের বিষয়ে এতটাই আগ্রহী যে অনেক সময় তিনি নিজেকে একজন 'ট্যারিফ ম্যান' বা ‘শুল্ক মানব’ বলেও ডাকেন।

এর আগে গত শুক্রবার (১৭ মে) কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেছিলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের এই শুল্কারোপ সীমান্তের উভয় পাশে থাকা শ্রমিক ও ভোক্তাদের ব্যাপকভাবে ক্ষতি করছে। আমরা নতুন এনএএফটিএ’র সঙ্গে এগিয়ে যাওয়ার বিষয়ে নজর দিচ্ছি।’

ট্রুডো

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। (ছবিসূত্র : দ্য পলিটিকো)

এ দিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ইস্পাত এবং অ্যালুমিনিয়াম রপ্তানিকারক দেশগুলোর পক্ষে এখন ইউরোপীয় ইউনিয়ন তাদের সহবস্থান জানিয়েছে। তবে এই দুইয়ের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক স্থাপনের জন্য বেশ কিছু ভাল খবর রয়েছে। আর তা হলো গত শুক্রবারই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দেশটির সকল গাড়ি এবং এর যন্ত্রাংশ আমদানির ওপর চাপ প্রয়োগের সিদ্ধান্ত বিলম্বিত করেছে।

এর অংশ হিসেবে হোয়াইট হাউস ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং জাপানের সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনায় আরও বেশি সময় দেওয়ার জন্য অন্তত ছয় মাসের সিদ্ধান্ত দিয়েছে। যেখানে আমদানিকৃত গাড়ি ও এর যন্ত্রাংশগুলোতে মোট ২৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক প্রত্যাহারের বিবেচনা করা হয়েছে।

অপর দিকে মার্কিন বাণিজ্য বিভাগের একটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, বিদেশে তৈরি গাড়ি এবং স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রাংশ যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি করা দেশটির জাতীয় নিরাপত্তার জন্য এক হুমকির কারণ। শুক্রবারে ট্রাম্পের সেই ঘোষণায় এও বলা হয়, মার্কিন প্রযুক্তিবিদের তাদের গবেষণা ও উন্নয়ন বিনিয়োগের জন্য রাজস্বের ওপর নির্ভরশীল নয়।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, ‘মার্কিন মালিকানাধীন প্রযোজকরা আর & ডি ব্যয়ের নতুনত্বকে আরও বেশি দুর্বল করে দিচ্ছে। আর এতে আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা ক্ষতিগ্রস্ত করার হুমকি দেয়।’

ডোনাল্ড ট্রাম্প আরও বলেন, ‘আমি এই গবেষণার সঙ্গে একমত যে আমদানি করা গাড়ি এবং ট্রাকগুলো আমাদের অভ্যন্তরীণ অর্থনীতিকে দুর্বল করে দিচ্ছে।’

কানাডা এবং ইইউর সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি, একইসঙ্গে জাপানী গাড়িসহ এর স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রাংশ উচ্চ হারে ক্রয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের বৃহত্তম অর্থনীতিকে হুমকির মুখে ফেলেছে।

আরও পড়ুন :- যে পথে হাঁটছে চীন-মার্কিন বাণিজ্য সম্পর্ক

যার অংশ হিসেবে গত সোমবার বেইজিং ও ওয়াশিংটন মধ্যকার বাণিজ্য আলোচনা যায়। যে কারণে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প চীনা পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ২০০ বিলিয়ন ডলার মূল্যের শুল্কারোপ করে। মূলত এসবের প্রেক্ষিতে দেশ দুটির মধ্যে এক রকম বৈরী সম্পর্কের শুরু হয়। যা এখনো অব্যাহত আছে।

সূত্র : 'বিবিসি নিউজ'

ওডি/কেএইচআর

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড