করোনায় ৫১ লাখ ৯১ হাজার মৃত্যু দেখল বিশ্ব

চলমান মহামারি করোনা ভাইরাসের ভয়াল থাবায় বিশ্বজুড়ে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা ক্রমে বৃদ্ধি পাচ্ছে। একই সঙ্গে আগের দিনের তুলনায় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাড়ল প্রাণঘাতী ভাইরাসে নতুন সংক্রমিত রোগীর সংখ্যাও। গেল ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে কোভিড শনাক্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন সাড়ে সাত হাজারের বেশি মানুষ। নির্ধারিত এই সময়ের মধ্যে নতুন করে রোগটিতে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা বেড়ে প্রায় সোয়া ছয় লাখে পৌঁছেছে।

সর্বশেষ এক দিনে বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ও মৃত্যুর ঘটনা ঘটল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। এ দিকে দৈনিক মৃত্যুর তালিকায় এরপরই রয়েছে যথাক্রমে রাশিয়া, ইউক্রেন, তুরস্ক, মেক্সিকো, জার্মানি এবং পোল্যান্ডের নাম। এতে বিশ্বব্যাপী কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা ২৫ কোটি ৯৬ লাখের ঘর ছাড়িয়েছে। আর মৃতের সংখ্যাও এরই মধ্যে ৫১ লাখ ৯১ হাজারে দাঁড়িয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৫ নভেম্বর) বাংলাদেশ সময় সকাল ১০টা পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে মৃত্যু, আক্রান্ত ও সুস্থতার হিসাব রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডো মিটারস থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, শেষ ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে কোভিড সংক্রমিত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন সাত হাজার ৭২৯ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যা চার শতাধিক বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে বিশ্বজুড়ে প্রাণ হারানোদের সংখ্যা ৫১ লাখ ৯১ হাজার ৩০৬ জনে পৌঁছে গেছে।

নির্ধারিত এই সময়ের মধ্যে প্রাণঘাতী ভাইরাসটিতে নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ছয় লাখ ২৪ হাজার ৩৫৬ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা প্রায় ৮৫ হাজার বেড়েছে। এতে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত রোগটিতে আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা বেড়ে ২৫ কোটি ৯৬ লাখ ৮১ হাজার ২০ জনে দাঁড়িয়েছে।

আরও পড়ুন : অভিনন্দন ইস্যুতে ভুয়া গল্প ফেঁদেছে ভারত, বলছে পাকিস্তান

অপর দিকে গেল ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বে করোনার থাবায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ও মৃত্যুর ঘটনা ঘটল মার্কিন ভূখণ্ডে। একই সময়ের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে নতুন করে মহামারি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন এক লাখ দুই হাজার ৭৬৭ জন। আর মারা গেছেন এক হাজার ৫৫৮ জন। প্রাণঘাতী ভাইরাসটিতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এই রাষ্ট্রে এখন পর্যন্ত চার কোটি ৮৯ লাখ ৬৭ হাজার ৯৬৩ জন সংক্রমিত হয়েছেন। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে সাত লাখ ৯৮ হাজার ২০৭ জনের।

অন্য দিকে দৈনিক প্রাণ হারানোদের তালিকায় এরপরই রয়েছে রাশিয়ার নাম। শেষ এক দিনে দেশটিতে করোনার থাবায় আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন এক হাজার ২৪০ জন। আর নতুন করে রোগটিতে সংক্রমিত হয়েছেন ৩৩ হাজার ৫৫৮ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এ পর্যন্ত মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে ৯৪ লাখ ৩৪ হাজার ৩৯৩ জনে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে দুই লাখ ৬৭ হাজার ৮১৯ জনের।

শেষ ২৪ ঘণ্টায় ব্রিটেনে নতুন করে মহামারি করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন ৪৩ হাজার ৬৭৬ জন। আর মারা গেছেন ১৪৯ জন। একই সময়ে ইউরোপের দেশ জার্মানিতে নতুন করে প্রাণঘাতী ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছেন ৭৩ হাজার ৯৬৬ জন। এর মধ্যে মারা গেছেন ৩২১ জন। ইউক্রেনে নতুন করে কোভিড সংক্রমিত আক্রান্ত হয়েছেন ১৪ হাজার ৩২৫ জন। এছাড়া মৃত্যুবরণ করেছেন ৫৯৫ জন।

আরও পড়ুন : আফগান টিভি নাটকে এবার নারীরা নিষিদ্ধ

করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে তৃতীয় ও প্রাণ হারানোদের সংখ্যায় তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ল্যাটিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল। শেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে কোভিড আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১৭৬ জন। আর নতুন করে রোগটিতে সংক্রমিত হয়েছেন চার হাজার ৬৮৬ জন। অপর দিকে মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এ পর্যন্ত মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে দুই কোটি ২০ লাখ ৪৩ হাজার ৪১৭ জনে দাঁড়িয়েছে। আর মারা গেছেন ছয় লাখ ১৩ হাজার ৪১৬ জনের।

এ দিকে কোভিড আক্রান্তদের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার ঘনবসতিপূর্ণ দেশ ভারত। যদিও ভাইরাসটিতে শনাক্ত হয়ে মৃতের সংখ্যার তালিকায় দেশটির অবস্থান এখন তৃতীয়। মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এ পর্যন্ত মোট সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা বেড়ে তিন কোটি ৪৫ লাখ ৪১ হাজার ৩৪৯ জনে দাঁড়িয়েছে। আর মারা গেছেন চার লাখ ৬৬ হাজার ৫৮৪ জন।

এছাড়া করোনায় আক্রান্ত হয়ে শেষ এক দিনে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানে ৯৫ জন, ইউরোপের দেশ তুরস্কে ১৭৫ জন, ফিলিপাইনে ২০০ জন, পোল্যান্ডে ৪৬০ জন, রোমানিয়ায় ১৯৫ জন, হাঙ্গেরিতে ১৭৬ জন এবং ভিয়েতনামে ১২৫ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। অন্য দিকে নির্ধারিত ২৪ ঘণ্টায় উত্তর আমেরিকার দেশ মেক্সিকোতে প্রাণ হারিয়েছেন ৩২৬ জন। মহামারির শুরু থেকে দেশটিতে এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে দুই লাখ ৯২ হাজার ৮৫০ জনের।

আরও পড়ুন : ‘বাজে চরিত্রের’ সদস্যদের তাড়াবে তালেবান

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে এশিয়ার পরাশক্তি চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর গত বছরের ১১ মার্চ প্রাণঘাতী ভাইরাসটিকে ‘বৈশ্বিক মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি সংস্থাটি বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে।

ওডি/কেএইচআর