• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৬ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

বৈরুত বিস্ফোরণের পেছনে রাসায়নিক বোঝাই রুশ জাহাজ!

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

০৭ আগস্ট ২০২০, ০৯:০১
বৈরুত বিস্ফোরণের পেছনে রাসায়নিক বোঝাই রুশ জাহাজ!
বিস্ফোরণে বিধ্বস্ত জাহাজ (ছবি : প্রতীকী)

বৈরুতে বিস্ফোরণের কারণ অনুসন্ধানে লেবাননের তদন্ত এখনো চলতে থাকলেও সম্ভাব্য একটি কারণের প্রতি ইঙ্গিত করেছেন দেশটির কর্মকর্তারা। সেটি হচ্ছে কৃষিকাজে সার তৈরিতে ব্যবহৃত বিপজ্জনক অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটের বিশাল একটি চালান।

স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বলছে, বারবার সতর্ক করা হলেও নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা ছাড়াই বিস্ফোরক বোঝাই ওই চালানটি কয়েক বছর ধরেই বৈরুত বন্দরে আটকে থেকেছে।

মার্কিন মিডিয়া সিএনএন বলছে, রাশিয়ার মালিকানাধীন জাহাজটি ২০১৩ সালে সেখানে পৌঁছালেও আর্থিক জটিলতায় সেখানে আটকে পড়ে। এনিয়ে এমভি রোসেস নামের জাহাজটির রাশিয়ান ও ইউক্রেনের কর্মীদের মধ্যে অস্থিরতা তৈরি হলেও সেটি কখনো নিজের গন্তব্য মোজাম্বিকের উদ্দেশে যাত্রা করতে পারেনি।

বৈরুতে গত মঙ্গলবারের (৪ আগস্ট) ভয়াবহ বিস্ফোরণের জন্য দায়ী বিস্ফোরকের উৎস হিসেবে এমভি রোসেসের কথা সরাসরি উল্লেখ করেনি লেবাননের কর্তৃপক্ষ। তবে দেশটির প্রধানমন্ত্রী হাসান দিয়াব বলেছেন, এই বিস্ফোরণের কারণ দুই হাজার ৭৫০ মেট্রিক টন অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট। আর এই পরিমাণ অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট নিয়েই বৈরুত বন্দরে পৌঁছায় এমভি রোসেস।

আরও পড়ুন : যে কারণে ইরানকে দেখা মাত্রই দুর্বল হয়ে পরে যুক্তরাষ্ট্র!

হাসান দিয়াব জানিয়েছেন, গত ছয় বছর ধরে কোনো নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা ছাড়াই ওই বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরণ উপযোগী পদার্থ বন্দরের গুদামে পড়ে ছিল।

দুনিয়া জুড়ে সার তৈরি এবং খনিতে বিস্ফোরণের কাজে ব্যবহার হয়ে থাকে অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট। এমভি রোসেস এর ক্যাপ্টেন বোরিস প্রোকোসেভ জানিয়েছেন, ২০১৩ সালে জাহাজটি জর্জিয়ার বাতুমি বন্দর থেকে দুই হাজার ৭৫০ মেট্রিক টন অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট নিয়ে মোজাম্বিকের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে। তেল নিতে গ্রিসে একবার থামে জাহাজটি। তখন জাহাজটির মালিক এর রাশিয়ান ও ইউক্রেনীয় কর্মীদের জানিয়ে দেন তার টাকা শেষ আর পরিবহন খরচ তুলতে হলে অতিরিক্ত পণ্য বোঝাই করতে হবে। তখন জাহাজটি বৈরুতে নিয়ে যাওয়া হয়।

আরও পড়ুন : যে কারণে ভয়াবহ বিস্ফোরণের শিকার লেবানন (ভিডিও)

বৈরুতে পৌঁছানোর পর ‘জাহাজ পরিচালনার নিয়ম মারাত্মক লঙ্ঘনের’ দায়ে সেটি আটক করে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। রুশ নাবিকদের প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠন আইটিএফ জানিয়েছে, রাশিয়ান ও ইউক্রেনীয় কর্মীদের অভিযোগ দায়ের এবং বন্দরের ফি পরিশোধে ব্যর্থতার কারণে জাহাজটি আটক করে লেবাননের কর্তৃপক্ষ। পরে বেতন না পেলেও রুশ কর্মীদের নিজ দেশে ফেরত নেওয়া হয়। কিন্তু জাহাজটি পুনরায় তার যাত্রা শুরু করতে ব্যর্থ হয়।

আরও পড়ুন : দখলকৃত নতুন ভূখণ্ডের মানচিত্র জাতিসংঘ-গুগলে পাঠাচ্ছে নেপাল

লেবাননের কাস্টমস পরিচালক বদরি দাহের জানিয়েছেন, বৈরুতে পৌঁছানোর পর আর কখনো এমভি রোসেস এই বন্দর ছেড়ে যায়নি। যদি তিনি এবং অন্যান্য কর্মকর্তা বারবার জাহাজটিকে ‘ভাসমান বোমা’ আখ্যা দিয়ে কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করেছেন। ২০১৬ সালে দাহেরের স্থলে কর্মরত তখনকার কর্মকর্তা শফিক মেরহি এই মামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এক বিচারককে চিঠি দিয়ে সতর্ক করেন।

আরও পড়ুন : রামমন্দির নির্মাণে ফাঁকা মাঠে কেবল ‘মোদী আর মোদী’

চিঠিতে তিনি লেখেন, অনুপযুক্ত আবহাওয়া পরিস্থিতিতে এতে (এমভি রোসেস জাহাজে) মজুতকৃত পণ্য যে মারাত্মক বিপদ তৈরি করছে, সেকারণে বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে আমাদের অনুরোধ পুনর্ব্যক্ত করছি যে, বন্দর এবং এখানে কর্মরতদের নিরাপত্তা বজায় রাখতে জরুরিভাবে এসব পণ্য আবারও রফতানি করে দেওয়া হোক।

লেবাননের বেসামরিক সুরক্ষা প্রধানও জানিয়েছেন, কয়েক বছর আগেই ‘মারাত্মক বিস্ফোরণ উপযোগী পণ্য’ বাজেয়াপ্ত করা হয় আর তা গুদামে মজুত করা হয়। ওই গুদামটি ছিল বৈরুতের ব্যস্ততম এলাকা থেকে মাত্র কয়েক মিনিটের দূরত্বে। গত মঙ্গলবারের বিস্ফোরণে বৈরুতে অন্তত ১৩৭ জন নিহত এবং অন্তত পাঁচ হাজার মানুষ আহত হয়।

আরও পড়ুন : নেপালের সমর্থনে ভারতের আরেক অঞ্চল দখলে নিল চীন

বুধবার (৫ আগস্ট) লেবাননের তথ্যমন্ত্রী মানাল আবদেল সামাদ নাজদ বলেছেন, ২০১৪ সালের যেসব কাগজপত্র ও নথি পাওয়া যাচ্ছে তাতে দেখা যাচ্ছে লেবানন কর্তৃপক্ষ পণ্য বাজেয়াপ্ত করা নিয়ে তথ্য বিনিময় করেছে। দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত টিভি চ্যানেল আল মামলাকায় তিনি বলেন, এই তথ্য বিনিময়ের সঙ্গে বৈরুতের প্রাণঘাতী বিস্ফোরণের সম্ভাব্য কারণ বলে বিবেচিত হচ্ছে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড