• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৪০ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

ডেঙ্গু থেকে মুক্তি মিলবে পেঁপে পাতার রসে

  স্বাস্থ্য ডেস্ক

২৮ জুলাই ২০১৯, ১৯:২৬
পেঁপে পাতা
পেঁপে পাতার রসে রয়েছে রক্তে প্লাটিলেট বৃদ্ধিকারী উপাদান। (ছবি : সংগৃহীত)

সারা দেশে বেড়েই চলেছে ডেঙ্গু রোগের প্রাদুর্ভাব। প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে মশাবাহিত প্রাণঘাতী এই রোগটিতে। ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তদের রক্তে প্লাটিলেটের পরিমাণ কমে যাওয়ার কারণে মৃত্যুমুখে পতিত হওয়ার মতো ঘটনা ঘটছে অনেক। ডেঙ্গু জ্বরাক্রান্তদের প্লাটিলেট বৃদ্ধির জন্য প্রাকৃতিক কিছু উপায় রয়েছে। নতুন একটি গবেষণায় জানা গেছে, পেঁপে পাতার রস পান করা সহজতম একটি উপায়। চলুন জেনে নেওয়া যাক ডেঙ্গু জ্বর হলে পেঁপে পাতার রসের মাধ্যমে কীভাবে বাড়াবেন প্লাটিলেটের সংখ্যা।

পেঁপে পাতার রস নিয়ে বেশ গবেষণা করেছেন পুষ্টিবিদরা। সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় দেখা গেছে পেঁপে পাতার রসে থ্রম্বোসাইটিস বা প্লাটিলেট উৎপাদনে সক্ষম এমন উপাদানের পরিমাণ বেশি। গবেষণাটি পরিচালনা করেন মালয়েশিয়ার এআইএমএসটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ডক্টর এস. কাঠিরেসান।

তিনি জানান, 'ডেঙ্গুর মধ্যে যে ভাইরাস রয়েছে তা মূলত আমাদের রক্তের প্লাটিলেট কমিয়ে দেয়। সাধারণত প্লাটিলেটের জীবনকাল ৫ থেকে ১০ দিন। এই সময়ের মধ্যে আবার নতুন করে প্লাটিলেট উৎপন্ন হয় শরীরে। শরীরের একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া এটি। কিন্তু ডেঙ্গু রোগের ভাইরাস এই প্রক্রিয়াটিকে বাধাগ্রস্ত করে। ফলে দ্রুততায় কমতে থাকে প্লাটিলেটের সংখ্যা।'

গবেষণায় জানা গেছে, ডেঙ্গুর ভাইরাস শরীরে যতদিন পর্যন্ত কার্যকর থাকে ততদিন পর্যন্ত নতুন প্লাটিলেট উৎপাদন হয় খুবই কম। শরীরে নতুন প্লাটিলেট উৎপাদনের ক্ষমতা নষ্ট করে দিতে ভূমিকা রাখে ডেঙ্গু ভাইরাস। একজন সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের রক্তে স্বাভাবিক প্লাটিলেটের পরিমাণ প্রতি মাইক্রো লিটারে দুই লাখ থেকে সাড়ে তিন লাখ।

গবেষকদের মতে, প্লাটিলেট লেভেল এক লাখের কম হয়ে গেলে তা মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে একজন মানুষের জন্য। প্লাটিলেটের পরিমাণ যদি ৫০ হাজারে নেমে আসে তাহলে থ্রমবোসাইটোপেনিয়া হয়ে যায়। ফলে অনেক সময় রোগীর মৃত্যু হতে পারে। আর এসব ক্ষেত্রে বেশ কাজে দেয় পেঁপে পাতার রস।

পেঁপে পাতায় কিমোপাপিন ও পাপেইন নামে দুটি এনজাইম আছে। এই উপাদান দুটি প্লেটলেট উৎপাদন বাড়ায় এবং রক্ত জমাট বাঁধা রোধ করে। অতি পরিচিত এই গাছের পাতাটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়াতে সাহায্য করে। এর ফলে ডেঙ্গু রোগ সেরে যায় অনেক দ্রুত। এই বিষয়টি নিয়ে ২০০৮ সালে শ্রীলঙ্কান জার্নাল অফ ফ্যামিলি ফিজিশিয়ান্স এ গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছিলেন ডাক্তার সানাথ হেট্টিগ।

ডাক্তার হেট্টিগের গবেষণা থেকে জানা যায়, পেঁপে পাতায় পাপেইন এবং কিমোপাপেইন নামে দুটি অ্যানজাইম রয়েছে। এই উপাদান দুটি প্লাটিলেটের উৎপাদন বাড়ায় এবং রক্তকে জমাট বাঁধার হাত থেকে বাঁচায়। এছাড়াও পেঁপে পাতায় প্রচুর পরিমাণে কমপ্লেক্স ভিটামিন রয়েছে যা বোন ম্যারোকে প্লাটিলেট উৎপাদনে সহায়তা করে।

যেভাবে খাবেন :

সানাথ হেট্টিগের গবেষণায় জানা গেছে, পেঁপে পাতার রস খেতে মোটামুটি কচি পাতা বেছে নেয়া উচিত। এবার এই পাতা ভালোমতো ধুয়ে নিতে হবে। এরপর পাটায় বেটে, হামান দিস্তায় ছেঁচে কিংবা ব্লেন্ডারে দিয়ে রস করতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে এর সাথে কোনো চিনি বা লবণ যেন দেওয়া না হয়। প্রাপ্ত বয়স্করা ৮ ঘণ্টার বিরতিতে দিনে দুবার পেঁপে পাতার রস খাওয়া উচিত। ৫ -১২ বছরের শিশুদের ক্ষেত্রে ৫ মিলি লিটার পরিমাণ এবং ৫ বছরের কম বয়সীদের ২.৫ মিলি লিটার পেঁপে পাতার রস খাওয়া উচিত।

ওডি/এসএম

স্বাস্থ্য-ভোগান্তি, নতুন পরিচিত অসুস্থতার কথা জানাতে অথবা চিকিৎসকের কাছ থেকে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত পরামর্শ পেতেই-মেইলকরুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব এবং সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য সমস্যার পরামর্শ দেবার প্রচেষ্টা থাকবে আমাদের।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড