• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৩ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

সার্জারির মাধ্যমে ডায়াবেটিস দূর করা কি আদৌ সম্ভব?

  সাদিয়া ইসলাম বৃষ্টি

২৬ এপ্রিল ২০১৯, ১৩:০৮
মেটাবলিক সার্জারি
ছবি : প্রতীকী

মেটাবলিক সার্জারি নিয়ে অনেকেরই খুবই স্বল্প ধারণা রয়েছে। অনেকেরই ব্যাপারটি নিয়ে অনেক প্রশ্ন আছে এবং বেশিরভাগ টাইপ টু ডায়াবেটিসে আক্রান্তরা মেটাবলিক সার্জারিকে আরোগ্যের উপায় বলে মনে করেন। আসলেই কি টাইপ টু ডায়াবেটিস নিরাময়ে মেটাবলিক সার্জারি কাজে আসে? মেটাবলিক সার্জারি মূলত কী? চলুন, আলোচনা করা যাক-

মেটাবলিক সার্জারি কী? আমার মেটাবলিক সিনড্রোম আছে কিনা বুঝবো কীভাবে?

মূলত, মেটাবলিক ডিজিজের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা একটি পদ্ধতিকে মেটাবলিক সার্জারি বলা হয়। এটি টাইপ টু ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে করা হয়। হজমে সমস্যা হওয়ার কারণে যে ব্যাপারগুলো ঘটে থাকে সেগুলোকে একসাথে মেটাবলিজম সিনড্রোম বলা হয়। এটি স্থূলতা, শরীরচর্চা না করা, বয়স এবং জিনগত কারণে হয়ে থাকে। মেটাবলিজম সিনড্রোমের কারণে ডায়াবেটিস, হাইপারটেনশন, স্ট্রোক ইত্যাদি সমস্যাগুলো দেখা দেয়।

মেটাবলিক সার্জারি

এক্ষেত্রে, রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে সেটাকে ডায়াবেটিস বলা হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই, স্থুলতার কারণে ডায়াবেটিস হয়ে থাকে।

আমার কি মেটাবলিক সার্জারি করতে হবে?

মজার ব্যাপার হলো, ডায়াবেটিসে আক্রান্ত অনেকে বুঝতেই পারেন না যে তাদের ডায়াবেটিস আছে। ফলে অন্ধত্ব, কিডনি, স্নায়ু ও হৃদপিণ্ডে সমস্যাসহ আরও নানারকম ব্যাপারে আক্রান্ত হন তারা। এক্ষেত্রে সবচাইতে কার্যকরী কাজটি হলো সঠিক খাবার গ্রহণ ও শরীরচর্চা করা।

মেটাবলিক সার্জারি

কিন্তু অনেকেই আছেন যারা শরীরচর্চা করার মতো অবস্থায় নেই। ফলে ওষুধ সেবনের পরেও তাদের অবস্থা অপরিবর্তিত থাকে। আবার অনেকে পাকাপাকিভাবে ডায়াবেটিসের হাত থেকে রেহাই চান। এসব ক্ষেত্রে, মেটাবলিক সার্জারি করেন তারা। অবশ্য, মেটাবলিক সার্জারি করা মানেই নিজের জীবনযাত্রাকে বদলে ফেলা। এই সার্জারির পর স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে আপনাকে নানাবিধ নিয়ম মেনে চলতে হবে।

মেটাবলিক সার্জারি কত রকমের হয়?

সাধারণত, ল্যাপারোস্কোপিক স্লিভ গ্যাস্ট্রেক্টোমি এবং ল্যাপারোস্কোপিক গ্যাস্ট্রিক বাইপাস- এই দুই ধরনের মেটাবলিক সার্জারি করা হয়ে থাকে। স্থূলতা কমানোর ক্ষেত্রেও এই একই রকমের সার্জারি ব্যবহার করা হয়।

ল্যাপারোস্কোপিক স্লিভ গ্যাস্ট্রেক্টোমির ক্ষেত্রে পাকস্থলীতে যেন কম খাবার যায় সেটা নিশ্চিত করা হয়। আর ল্যাপারোস্কোপিক গ্যাস্ট্রিক বাইপাসের বেলায় পাকস্থলীর বাইরেই খাবার হজম করার পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়। দুই ক্ষেত্রেই রোগী কম খাবার গ্রহণ করেন এবং তার স্থূলতা হ্রাস পায়। মেটাবলিক সার্জারির সুবিধা কী?

এই সার্জারির মাধ্যমে পরবর্তী ১৮-২৪ মাসের মধ্যে রোগী ৭০-৮০ শতাংশ ওজন কমাতে সক্ষম হন। এছাড়া, এটি রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ কমিয়ে ডায়াবেটিসকেও ঠিক রাখতে সাহায্য করে। ডায়াবেটিস সংক্রান্ত শারীরিক সমস্যাগুলো চলে যায় এই সার্জারির মাধ্যমে। মূলত, টাইপ টু ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে এই সার্জারি অনেক ভালো কাজ করে।

মেটাবলিক সার্জারি

সার্জারির আগে আমাকে কোনো বাড়তি প্রস্তুতি নিতে হবে?

এই ব্যাপারটি নানারকম পরীক্ষার মাধ্যমে আপনার চিকিৎসক আপনাকে জানিয়ে দিবেন। রক্ত পরীক্ষা, আল্ট্রাসাউন্ড এবং গ্যাস্ট্রোস্কোপি করার প্রয়োজন হবে এসময়।

সার্জারির পর সেরে উঠতে কতটা সময় লাগবে?

সাধারণ অ্যানেস্থেশিয়া ব্যবহার করা হয় এই সার্জারির সময়। তাই ঘণ্টা দুয়েকের মধ্যেই আপনি জ্ঞান ফিরে পাবেন এবং আপনার সার্জারি শেষ হয়ে যাবে। এই সার্জারির পর সাধারণত ৩-৫ দিন হাসপাতালে থাকতে হয়। তবে দুই সপ্তাহের মধ্যেই আপনি আপনার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে পারবেন।

আপনি যদি আপনার জীবনকে আরও একটু সুন্দর করে গুছিয়ে নিতে চান এবং ডায়াবেটিসকে সরিয়ে দিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে চান, তাহলে মেটাবলিক সার্জারি আপনার জন্য একদম যুৎসই একটি ব্যাপার। এর কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও নেই। খুব কম চেষ্টাতেই ডায়াবেটিসকে হারিয়ে দিতে সক্ষম হবেন আপনি।

তবে হ্যাঁ, এক্ষেত্রে সার্জারির পরে আপনি যেন আবার স্থূল না হয়ে যান সেটা নিশ্চিত করতে নির্দিষ্ট কিছু স্বাস্থ্যসংক্রান্ত নিয়মও মেনে চলতে হবে।

মূল লেখক- লুক ছী মেং মেলভিন, পার্কওয়ে ইস্ট হসপিটাল।

ওডি/এনএম

স্বাস্থ্য-ভোগান্তি, নতুন পরিচিত অসুস্থতার কথা জানাতে অথবা চিকিৎসকের কাছ থেকে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত পরামর্শ পেতেই-মেইলকরুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব এবং সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য সমস্যার পরামর্শ দেবার প্রচেষ্টা থাকবে আমাদের।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড