• রোববার, ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৩ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

এইচআইভি পজিটিভ দম্পতির পক্ষে কি সন্তান নেওয়া সম্ভব?

  সাদিয়া ইসলাম বৃষ্টি

২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১০:৩৮
এইচআইভি পজিটিভ
এইচআইভি পজিটিভ দম্পতিরা কি পারেন সন্তান জন্ম দিতে?

এইডস বা এইচআইভি পজিটিভ ব্যক্তিকে আমাদের সমাজে সবসময়ই নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখা হয়েছে। নানারকম কুসংস্কার, ভুল ধারণা শুরু থেকেই রোগটির সাথে জড়িয়ে ছিল। আর তাই, এইচআইভি পজিটিভ ব্যক্তিও যে সন্তানের বাবা-মা হতে পারেন, নাকি পারেন না- সেটা নিয়ে অনেকেরই কোনো ধারনা নেই। সত্যিই কি এমন হতে পারে? এইচআইভি পজিটিভ হওয়ার পরও কি সুস্থ সন্তানের বাবা-মা হতে পারেন কোনো দম্পতি?

এসব প্রশ্নের উত্তর আপনি তখনই পাবেন, যখন এইচআইভি পজিটিভ ব্যাপারটি আসলে কী সেটা সম্পর্কে জানতে পারবেন। তো, তাহলে আর দেরী কীসের! চলুন, জেনে নেওয়া যাক!

এইচআইভির বর্তমান পরিস্থিতি

২০০০ সালের পর থেকে বৈশ্বিক এইচআইভি আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা কমে গিয়ে ৩৫ শতাংশে নেমেছে। শিশুদের ভেতরে এর হার ৫৮% কমে গিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র এবং আফ্রিকার সেসব অঞ্চল যেগুলোতে আগে এইচআইভির পরিমাণ অনেক বেশি ছিল, সেখানেও এই হার অনেক কমে এসেছে। মূলত, মানুষের মধ্যকার সচেতনতা বৃদ্ধি, উন্নত চিকিৎসা এবং দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার কারনেই এই ব্যাপারটি সম্ভব হয়েছে।

জন্মনিয়ন্ত্রণের নানা উপায় সম্পর্কেও মানুষ আগের চাইতে অনেক বেশি সচেতন হয়েছে। এই ব্যাপারটিও এক্ষেত্রে অনেক সাহায্য করেছে। বর্তমানে আমরা এমন এক পৃথিবীতে বাস করছি, যেখানে এইচআইভি খুব সহজেই চিহ্নিত করা যায়। আক্রান্ত হওয়ার সাত দিনের মধ্যেই চিকিৎসকেরা সেটি বুঝে ফেলতে সক্ষম হন। ঠিক এই সময়েই ভাইরাস মানুষের শরীরের কোষে প্রবেশ করতে শুরু করে। এছাড়া ২১ দিনের দিন করা অ্যান্টিজেন-অ্যান্টিবডি অ্যাসে পুরোপুরিভাবে এই ভাইরাসের উপস্থিতি প্রকাশ করতে পারে।

ইতিপূর্বে চিকিৎসকেরা শুধুমাত্র ভাইরাসের উপরিভাগের অংশ হিসেবে কাজ করা অ্যান্টিজেনের খোঁজ পেতে পারতো। বর্তমানে প্রযুক্তির সহযোগিতায় এই অ্যান্টিজেনের পরিপ্রেক্ষিতে শরীর থেকে নিঃসরিত রোগ প্রতিরোধক অ্যান্টিবডিগুলোকেও চিহ্নিত করা সম্ভব হয়। এতে করে অনেকসময় শরীরে এইচআইভি ভাইরাস থাকলেও আগে যেমন চিহ্নিত করা সম্ভব হতো না, এখন সেটা আর ঘটবে না। বরং, খুব সহজেই এইচআইভি চিহ্নিত করে ফেলা যাবে।

আরও পড়ুন:

ওভারিয়ান ক্যান্সারের কারণ হতে পারে ট্যালকম পাউডার!

পিরিয়ডের প্রচণ্ড ব্যথা কি গর্ভধারণের জন্য ক্ষতিকর?

এইচআইভির চিকিৎসা : কতটা সম্ভব?

সাধারণত এইচআইভির চিকিৎসায় হাইলি অ্যাক্টিভ অ্যান্টি-রেট্রোভাইরাল থেরাপি ব্যবহার করা হয়। এতে করে শরীর ওষুধের প্রতিরোধক তৈরি করতে পারে না। অন্যথায়, শরীর যদি ধীরে ধীরে ওষুধের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে শুরু করে, সেক্ষেত্রে চিকিৎসা কোনো কাজেই আসবে না। চিকিৎসার মাধ্যমে এইচআইভি পজিটিভ ব্যক্তি এটা নিশ্চিত করতে পারেন যেন তার শরীরে ভাইরাস খুব বেশি মাত্রায় ছড়িয়ে না যেতে পারে। এখন পর্যন্ত এই চিকিৎসা ব্যবহারের মাধ্যমে ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তিরাও সুস্থ জীবনে ফিরে যেতে পেরেছেন।

চিকিৎসা পদ্ধতিতে প্রতিদিন একটি করে ওষুধ সেবন করার কথা বলা হয়। এই চিকিৎসা আক্রান্ত ব্যক্তিকে শুধু পারিবারিক জীবনেই ফিরে যেতে সাহায্য করে না, একইসাথে, শারীরিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে হতে পারা সম্ভাব্য নানারকম সমস্যাকেও দূরে রাখতে পারে। এই চিকিৎসা ব্যবহার করছেন এমন এইচআইভি পজিটিভ দম্পতি সুস্থ শিশুর জন্ম দিয়েছেন- এমন উদাহরণ অনেক। ওষুধ নিয়মিত সেবন করলে ভাইরাস ছড়ানোর সম্ভাবনা অনেক কমে যায়।

তাই, আপনি যদি এইচআইভি পজিটিভ হয়ে থাকেন এবং প্রাথমিক পর্যায়ের রোগ চিহ্নিত করে ফেলেন, সেক্ষেত্রে নিয়মিত চিকিৎসকের সাথে পরামর্শের মাধ্যমে চলুন। এতে করে আপনিও সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারেন। আর সন্তান? হ্যাঁ, আপনার এই ইচ্ছেটাও পূরণ হওয়া অসম্ভব নয়!

লেখক: ডক্টর লিওং হোং নাম, মাউন্ট এলিজাবেথ হসপিটাল

স্বাস্থ্য-ভোগান্তি, নতুন পরিচিত অসুস্থতার কথা জানাতে অথবা চিকিৎসকের কাছ থেকে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত পরামর্শ পেতেই-মেইলকরুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব এবং সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য সমস্যার পরামর্শ দেবার প্রচেষ্টা থাকবে আমাদের।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড