সাদিয়া ইসলাম বৃষ্টি
আমরা সুস্থ থাকার জন্য অনেক রকমের উপায়ের কথাই তো বলি। সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, চিরাচরিত এই উপায়গুলো আমাদের সত্যিই আরও অনেকগুলো দিন অসুস্থতা ছাড়াই ভালোভাবে বাঁচতে সাহায্য করে।
এখানে শুধু বেঁচে থাকার কথাই কিন্তু বলা হয়নি। অনেকেই দীর্ঘসময় বেঁচে থাকলেও এর মধ্যেই ডায়াবেটিস, হৃদপিণ্ডের সমস্যাসহ নানাবিধ সমস্যায় ভুগে থাকেন। বয়স যত বাড়তে থাকে, শরীর নানাবিধ রোগের আক্রমণে আরও বেশি আক্রান্ত হয় এবং দুর্বল হয়ে পড়ে। রোগকে প্রতিরোধ করার মতো শক্তি খুব কম থাকে শরীরের।
সম্প্রতি গবেষকরা সুস্থভাবে অনেকটা সময় বেঁচে থাকার জন্য কিছু নির্দিষ্ট ব্যাপারকে গুরুত্ব দিয়েছেন। আর সেগুলো হলো- ধূমপান না করা, ওজন কমানো, খাদ্যাভ্যাস ঠিক রাখা, শরীরচর্চা করা এবং মদ্যপান না করা। গবেষকদের মতে, উপরোক্ত কারণগুলোই একজন মানুষের জীবনসীমা ৭ দশমিক ৪ থেকে শুরু করে ১৭ বছর পর্যন্ত কমিয়ে আনে। অনেকে যতদিন বাঁচার আছে তার মধ্যে থেকে মাত্র ৬০ শতাংশ সময় বাঁচেন।
উপরের এই অভ্যাসগুলোর মধ্যে থেকে কিছু অভ্যাস বাদ দিয়ে চলা এবং কিছু অভ্যাস গড়ে তোলা যে আমাদের সুস্থ রাখতে সাহায্য করে তা অনেক আগে থেকেই আমরা সবাই জানি। তবে এগুলোর মাধ্যমে যে নিজেকে আরও বেশি সুস্থ রাখা সম্ভব, তা সঠিকভাবে বের করে আনার জন্য নতুন এক গবেষণা চালিয়েছেন গবেষক দলটি।
জীবনযাপন পদ্ধতির এই দিকগুলোর কিছুটা আগপিছ করায় আমাদের জীবনসীমা কতটা কমতে পারে এবং অসুস্থতার পরিমাণ বাড়তে পারে তা নিয়েই করা হয় গবেষণাটি। তথ্য নির্ভর গবেষণাটির তথ্যগুলো নেওয়া হয় ৭৩ হাজার ১৯৬ জন নারী নার্স এবং ৩৮ হাজার ৩৬৬ জন পুরুষ সেবকের কাছ থেকে।
গবেষকরা প্রতিটি মানুষের জীবনসীমা ০-৫ বছর ধরে হিসেব করেন। স্বাস্থ্যকর ওজন, ধূমপান না করা, মদ্যপান না করা, দিনে অন্তত ৩০ মিনিট শরীরচর্চা করা এবং মানসম্পন্ন খাদ্যাভ্যাস- এই কয়েকটি ব্যাপারের ওপর নির্ভর করে এই স্কোর নির্ধারণ করা হয়।
এই মানুষগুলোকে অনেক বছর ধরে অনুসরণ করেন গবেষকেরা। তাদের মধ্যে কতজন ক্যানসারে আক্রান্ত, কতজন হৃদপিণ্ডের অসুখ আক্রান্ত- এই সবকিছু পর্যবেক্ষণ করেন তারা। শুধু তাই নয়। এই সময়ে এই মানুষগুলোর পারিবারিক মেডিক্যাল হিস্ট্রি, বয়স ইত্যাদি সম্পর্কেও জানা হয়।
এতে দেখা যায় যে, যেসব নারীর বয়স ৫০ এবং উপরের ব্যাপারগুলোর যে কোনো একটি বা কয়েকটি মেনে চলেছেন, তাদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা আরও ২৪ বছর বেড়ে যায়। এই সময় ক্যানসার, টাইপ ২ ডায়াবেটিস ইত্যাদি সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনাও তাদের মধ্যে কম দেখা যায়। আর সবগুলো ব্যাপার মেনে চলেছে যারা তাদের ক্ষেত্রে বেঁচে থাকার এই পরিমাণ বেড়ে গিয়ে দাড়ায় ৩৪ বছর।
পুরুষদের ক্ষেত্রেও ব্যাপারটি একইরকম। তবে সবগুলো ব্যাপার মেনে চললে তাদের বাঁচার সম্ভাবনা ৩১ বছর বেড়ে যায়। অন্যদিকে, যেসব পুরুষ গড়ে প্রতিদিন ১৫টি সিগারেট খেয়েছেন এবং স্থূলতার শিকার, তাদের ক্ষেত্রে ৫০ বছর বয়সের পর থেকেই অসুস্থতার পরিমাণ অসম্ভব বেড়ে যায়।
আরও পড়ুন : সকাল সকাল উচ্চ রক্তচাপ : কতটা ক্ষতির কারণ?
তবে গবেষকরা এখনো এই ফলাফলটিকেই সর্বশেষ এবং নিশ্চিত বলতে চাচ্ছেন না। কারণ, সবসময় নানারকম ব্যাপারকে নিয়ন্ত্রণ করলেও কিছু দিক মানুষের হাতের বাইরে থেকেই যায়। তবে হ্যাঁ, উপরে বর্ণিত সবগুলো কৌশলই আপনাকে সুস্থ থাকতে সাহায্য করবে।
তাই, পুরোপুরি নিশ্চয়তা না পেলেও এই পদ্ধতিগুলোর মাধ্যমে আপনি যে অন্যদের চাইতে তুলনামূলকভাবে সুস্থ থাকবেন সেটা বলাই যায়।
সূত্র- মাউন্ট এলিজাবেথ হসপিটাল
ওডি/এনএম
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড