সাদিয়া ইসলাম বৃষ্টি
মানুষ নানা কারণে অ্যালার্জিতে ভোগে। কখনো ফুলের রেণু, কখনো ধুলা বা ঘাস- এমন নানা কারণেই অ্যালার্জিক অ্যাটাকে ভোগেন আক্রান্তরা। এর ফলে অনেকসময় নাকে প্রদাহ তৈরি হয়। যাকে চিকিৎসকেরা বলে থাকেন অ্যালার্জিক রাইনাইটিস।
অনেকে এর কারণে হওয়া লক্ষণগুলোকে সাইনাস বলে থাকে। অনেক অঞ্চলে ‘হে ফিভার’ নামে পরিচিত এই অ্যালার্জির আক্রমণ হয় শরীরের সংস্পর্শে। সে ক্ষেত্রে শরীর ‘হিস্টামিন’ নামক একটি রাসায়নিক পদার্থ নিঃসরণ করে এবং সেখান থেকেই তৈরি হয় অ্যালার্জিক রাইনাইটিস। চলুন এ ব্যাপারে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
অ্যালার্জিক রাইনাইটিস কেন হয়?
যে কোনো মানুষেরই অ্যালার্জিক রাইনাইটিস হতে পারে। তবে পরিবারে আগে কারও এমন সমস্যা থাকলে বা কোনো ব্যক্তির একজিমা বা অ্যাজমা বা দুটোই একত্রে থাকলে সে ক্ষেত্রে তার অ্যালার্জিক রাইনাইটিস হতে পারে।
অ্যালার্জিক রাইনাইটিসের লক্ষণ কী কী?
অ্যালার্জিক রাইনাইটিসের লক্ষণ অন্যান্য অ্যালার্জির মতোই। তবে কিছু ক্ষেত্রে ভিন্নতা দেখা যায়। মূলত, এ ক্ষেত্রে যে লক্ষণগুলো দেখতে পাওয়া যায় সেগুলো হলো-
সর্দি নাক আটকে থাকা হাঁচি দেওয়া ও নাক চুলকানো চোখ চুলকানো এবং চোখ দিয়ে পানি পড়া ইত্যাদি
অ্যালার্জিক রাইনাইটিস শনাক্ত এবং সারিয়ে তোলা হয় কীভাবে?
খুব বেশি খারাপ অবস্থা না হলে ভিন্ন ভিন্ন উপাদান ত্বকে রেখে সেটার প্রভাব জেনে এবং ছোটখাটো পরীক্ষার মাধ্যমেই অ্যালার্জিক রাইনাইটিস শনাক্ত করা হয়। বাড়াবাড়ি খারাপ অবস্থায় সরাসরি ইএনটি বিশেষজ্ঞের সাথে পরামর্শ করাটা ভালো। আর এটি সারিয়ে তোলার ক্ষেত্রে চিকিৎসকেরা কিছু নির্দিষ্ট পদ্ধতি অবলম্বন করেন। অ্যালার্জিক রাইনাইটিস সম্পূর্ণ সারিয়ে তোলা সম্ভব না হলেও এটি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। অ্যালার্জিক রাইনাইটিস ঠিক করতে চিকিৎসকেরা সাধারণত অ্যান্টিহিস্টামিন এবং ন্যাজাল ডিকনজেস্টেন্ট দিয়ে থাকেন। তবে পাকাপাকিভাবে অনেকদিনের জন্য সুস্থতা পেয়ে স্টেরয়েড বা অ্যালার্জি শটও ব্যবহার করে থাকেন তারা।
স্টেরয়েড নেওয়াটা কি ভালো?
অবশ্যই। অনেকেই ভাবেন শরীরের পেশি তৈরি করতে স্টেরয়েড নেওয়া হয়। অনেকে আবার ভাবেন, স্টেরয়েড নিলে রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা কমে যায়। বাস্তবে এমন কিছুই হয় না। বরং, স্টেরয়েড গ্রহণ করলে অ্যালার্জিক রাইনাইটিসের সমস্যা অনেকটা কমে আসে। আর এটি অনেক স্বাস্থ্যকরও।
অ্যালার্জিক রাইনাইটিস কখনোই পুরোপুরি ঠিক করে ফেলা সম্ভব নয়। তবে নিয়মিত ওষুধ এবং স্টেরয়েড নিলে এই সমস্যা অনেকটা চলে যাবে। এছাড়াও, সম্প্রতি ক্ষুদ্র আকারে শুরু হওয়া ইমিউনোথেরাপি রয়েছে, যেটি অ্যালার্জিক রাইনাইটিসের জন্য বেশ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। তবে শুধু ওষুধ নয়। এছাড়াও, খেয়াল রাখুন যেন আপনার যে কারণে অ্যালার্জি তৈরি হয় সেটার সংস্পর্শে বেশি না যাওয়া হয়। প্রয়োজনে বিছানার চাদর, আসবাব ইত্যাদিও নিয়মিত পরিষ্কার করুন।
আপনার এই সচেতনতাটুকুই হয়তো আপনাকে অ্যালার্জিক রাইনাইটিসের মতো সমস্যা থেকে অনেকটা সময়ের জন্য মুক্তি দিতে পারবে।
সূত্র- মাউন্ট এলিজাবেথ হসপিটাল
ওডি/এনএম
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড