• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৩ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

ওজন কমাতে ব্যারিয়াট্রিক সার্জারি!

  সাদিয়া ইসলাম বৃষ্টি

০৭ ডিসেম্বর ২০১৯, ০৯:১৫
ব্যারিয়াট্রিক সার্জারি
ছবি : প্রতীকী

ব্যারিয়াট্রিক সার্জারি স্থূলতা কমাতে কার্যকরী। অন্য কোনো উপায় কাজ না করলে সেক্ষেত্রে চিকিৎসকেরা রোগীর ক্ষেত্রে ব্যারিয়াট্রিক সার্জারি ব্যবহার করে থাকেন। কিন্তু, সব স্থূলতার বেলায়ই এই উপায়টি অবলম্বন করতে পারেন না তারা। কেমন এই ব্যারিয়াট্রিক সার্জারি? কতটা কার্যকরী? কীভাবে এই সার্জারির উপযোগী হওয়া যায়? চলুন, জেনে নেওয়া যাক-

ব্যারিয়াট্রিক সার্জারি কী?

ওজন কমানোর জন্য স্থূল ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে চিকিৎসকেরা যে সার্জারি ব্যবহার করেন, সেগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি হলো ব্যারিয়াট্রিক সার্জারি। আমাদের বডি ফ্যাট একটি নির্দিষ্ট মাত্রা ছাড়িয়ে গেলে সেক্ষেত্রে সেটাকে স্থূলতা বলা যায়। আগে থেকেই এ ব্যাপারে যথাযথ পদক্ষেপ না নিলে সেক্ষেত্রে স্বাস্থ্য এবং জীবনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়তে পারে এটি।

মেটাবলিক সিনড্রোম থেকে শুরু করে রক্তে সুগারের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া, রক্তচাপ ও রক্তে কোলেস্টোরলের পরিমাণ বৃদ্ধির মতো ব্যাপারগুলো এক্ষেত্রে হয়ে থাকে। ব্যারিয়াট্রিক সার্জারির ক্ষেত্রে আমাদের খাদ্য গ্রহণের প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন আনা হয়। এতে করে আমরা কতটা খাব এবং এর কতটুকু আমাদের শরীরের কাজে লাগবে সেটা পরিবর্তিত হয়।

এটি একটি দীর্ঘমেয়াদী সার্জারি। এর ফলাফলটাও আমাদের শরীরে বড় সময়ের জন্য ধরেই পড়ে থাকে। যখন স্বাভাবিকভাবে স্থূলতা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব হয় না, সেক্ষেত্রে এই সার্জারি ব্যবহার করা হয়।

আপনি কি ব্যারিয়াট্রিক সার্জারির মধ্য দিয়ে যেতে পারবেন?

ব্যারিয়াট্রিক সার্জারির ক্ষেত্রে বডি মাস ইনডেক্স বড় ভূমিকা রাখতে পারে। সাধারণত, একজন ব্যক্তির বডি মাস ইনডেক্স বের করা যায়- প্রতি কেজি ওজন/২(প্রতি মিটার উচ্চতা)

আপনার ক্ষেত্রে বিএমআই ২০-২৩ এর মধ্যে থাকলে আপনি নিজেকে সুস্থ বলে মনে করতে পারেন। ২৩-২৭ এর মধ্যে সংখ্যাটা গেলে সেক্ষেত্রে আপনাকে অতিরিক্ত ওজনসম্পন্ন ব্যক্তি এবং ২৭-৪০ এর মধ্যে গেলে স্থূল ব্যক্তি বলে ধরে নেওয়া যায়। আপনার বিএমআই ৪০ এর বেশি হয়ে গেলে সেক্ষেত্রে আপনি ব্যারিয়াট্রিক সার্জারির মধ্য দিয়ে যেতে পারেন।

ওজন কমানোর জন্য কোন রকমের ব্যারিয়াট্রিক সার্জারি করা বেশি ভালো?

নানারকম উপায়েই স্থূলতা কমিয়ে আনা যায়। এটি যেমন- ওপেন হার্ট সার্জারির মাধ্যমে করা সম্ভব, তেমনই ইনভেসিভ ল্যাপ্রোস্কোপিক সার্জারির মাধ্যমে করা সম্ভব। ল্যাপ্রোস্কোপিক সার্জারির ক্ষেত্রে খুব ছোট্ট একটি অংশ কাটা হয় শরীরে। আর সেখান থেকে একটি নল প্রবেশ করিয়ে, ক্যামেরার মাধ্যমে সঠিকভাবে দেখে অপারেশন সঠিকভাবে পরিচালনা করা হয়।

যেহেতু কাটা ছোট হয়, তাই এটি ঠিক হয়ে যায় খুব দ্রুত। উল্লেখ্য, ব্যারিয়াট্রিক সার্জারির প্রক্রিয়া কেমন হবে, কত দ্রুত সেটি কাজ করবে- এই পুরো ব্যাপারটি কাজ করে কোন পদ্ধতিতে সার্জারি করা হচ্ছে তার ওপর। মোট তিনটি প্রক্রিয়া এক্ষেত্রে কাজ করে-

রেস্ট্রিকটিভ প্রোসিডিউর-

এক্ষেত্রে পেটের ওপরের অংশে ব্যান্ড প্রবেশ করানো হয়। এতে করে ব্যক্তি কম খাবার গ্রহণ করেন এবং কার্যকরীভাবে চিকন হয়ে যান। এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অনেক কম এবং ইচ্ছা করলেই ব্যান্ড সরিয়ে ফেলা যায়।

ল্যাপারোস্কোপিক স্লীভ গ্যাস্ট্রোক্টোমি-

ল্যাপারোস্কোপিক স্লীভ গ্যাস্ট্রোক্টোমির ক্ষেত্রে পেটে হালকা কেটে, সেখান থেকে পাকস্থলীর প্রায় ৭৫ শতাংশ অংশ বের করে আনা হয়। এই সার্জারির পর পাকস্থলীর আকৃতি দেখতে অনেকটা শার্টের হাতার মতো হয়ে যায়। আর সেজন্যই এই সার্জারির নাম ল্যাপারোস্কোপিক স্লীভ গ্যাস্ট্রোক্টোমি। পেটের আকৃতি কম করে দেওয়ায় রোগী এক্ষেত্রে বেশি খাবার গ্রহণ করতে পারেন না এবং ধীরে ধীরে চিকন হয়ে যান। অবশ্য, একটা সময় গিয়ে পেট নিজ থেকে আবার আকৃতি বাড়িয়ে ফেলে। এই সার্জারির ক্ষেত্রে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অনেক কম ঘটে থাকে।

ম্যালাবসর্বটিভ-

এক্ষেত্রে রোগীর পেটে একটি বাড়তি অন্ত্র প্রবেশ করানো হয়। ফলে খাবার গ্রহণ ও হজমের একটি অংশ থেকে রোগীর স্বাভাবিক অন্ত্র রেহাই পায়। অন্যান্য সার্জারির তুলনায় নেতিবাচক ফলাফল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকলেও এই সার্জারি ডায়াবেটিস বা অন্য কোনো শারীরিক সমস্যার ভুক্তভোগীদের জন্য বেশি কার্যকরী।

টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে অনেকে ব্যারিয়ার্ট্রিক সার্জারি করার কথা ভেবে থাকেন। তবে এখনো এটি পরীক্ষিত নয়। তাই, হুট করে ব্যারিয়াট্রিক সার্জারির কথা ভাববেন না। প্রথমে চিকিৎসকের কাছ থেকে এটা নিশ্চিত হয়ে নিন যে এই সার্জারির আপনার জন্য প্রয়োজনীয় এবং নিরাপদ। আর তারপর সিদ্ধান্ত নিন সার্জারি নিয়ে।

সূত্র- মাউন্ট এলিজাবেথ হসপিটাল

ওডি/এনএম

স্বাস্থ্য-ভোগান্তি, নতুন পরিচিত অসুস্থতার কথা জানাতে অথবা চিকিৎসকের কাছ থেকে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত পরামর্শ পেতেই-মেইলকরুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব এবং সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য সমস্যার পরামর্শ দেবার প্রচেষ্টা থাকবে আমাদের।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড