• শনিবার, ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৬ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

শুভ্রতায় মোড়ানো শরৎ

  রবিউল ইসলাম

০১ অক্টোবর ২০১৯, ১৫:২৭
কাশফুল
বাতাসে দোল খায় কাশফুলের বন (ছবি : সংগৃহীত)

নীল আকাশে সাদা মেঘের ওড়াউড়ি। নিচে বাতাসে দোল খায় কাশফুলের বন। কখনো রোঁদ, কখনো আবার ঝমঝমিয়ে নামে বৃষ্টি। তবে নেই বজ্রপাত ও মেঘের গর্জন। ব্যাপসা গরমের বদলে বইছে মিষ্টি বাতাস। আহ কী অপরূপ! বর্ষা বিদায় নিয়ে শরৎ এসেছে এ বঙ্গে। তারই জানান যেন দিচ্ছে প্রকৃতি।

অপূর্ব রূপ ও অফুরন্ত সম্ভার নিয়ে এখানে একের পর এক আবর্তিত হয় ছয়টি ঋতু। ষড়ঋতুর এ দেশে বর্ষার পরই আসে শরৎ। ভাদ্র ও আশ্বিন—এই দুই মাস নিয়ে শরৎকাল। কিন্তু ভাদ্রের মাঝামাঝিতেও দখল ছাড়তে নারাজ বর্ষা। যে শরতের দেখা পেয়ে আমরা মুগ্ধ হই। সেই অপরূপ ঋতুর সঠিক রূপটির দেখা মেলে কিন্তু আশ্বিনে।

শরৎ মানে নীল আকাশে সাদা মেঘের ভেলা। শরৎ মানে মেঘ–রোঁদের লুকোচুরি খেলা। ক্ষণে ক্ষণে রূপ বদলায় শরৎ। কখনো রোঁদ, কখনো বৃষ্টি। নীল আকাশে সাদা তুলোর মতো দিনভর উড়ে বেড়ায় মেঘেরে মেলা। গোধূলিলগ্নে সোনারঙে রঙিন হয়ে উঠে পশ্চিম আকাশ।

সব ঋতুর মধ্যে সবচেয়ে পরিচ্ছন্ন কিন্তু শরৎ। কেননা বর্ষা প্রকৃতিকে ধুয়ে মুছে সাফ করে দেয়। কোথাও থাকে না এক ফোঁটা ধুলো-বালি। শরতে প্রকৃতি হয়ে ওটে ঝকঝকে তকতকে। গাছ-পালা, রাস্তা-ঘাট বর্ষার পানিতে নেয়ে উঠে। বিলে ফোটে শাপলা। দল বেধে শাপলা-শালুক তুলতে বের হয় গাঁয়ের দামাল ছেলের দল। পানিতে ভাসে কচুরিপানা ফুল। এ ঋতুতেই ফোটে অপরূপ শুভ্র কাশফুল। বাতাসে নদীর ঢেউয়ের মতো ঢেউ উঠে কাশবনে। মন নেচে উঠে সেই তালে। জুড়িয়ে যায় দুচোখ। এ ঋতুর রং-রূপে মুগ্ধ হয়ে লেখকরা লিখেছে গল্প-উপন্যাস। কবিরা লিখেছে কবিতা। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথও একে বন্দনা করেছেন তার কবিতায় :

‘আহা কি তোমার মধুর মূরতি

হেরিনু শারদ প্রভাতে!

হে মাতা বঙ্গ, শ্যামল অঙ্গ

ঝলিছে অমল শোভাতে।

পারে না বহিতে নদী জলধার

মাঠে মাঠে ধান ধরে নাক আর…

ডাকিছে দোয়েল গাহিছে কোয়েল

মাঝখানে দাঁড়িয়ে তুমি জননী,

শরৎকালের প্রভাতে।’

বর্ষার পানিতে টৈটম্বুর হয়ে ওঠা নদী-নালা, খাল-বিলের পানি কমতে শুরু করে। পাট পচার গন্ধে মৌ মৌ করে গ্রামের পরিবেশ। গাঁয়ের ছেলেরা পাটকাঠি আর নায়লন সুতা দিয়ে বড়শি বানায়। সারি বেঁধে আদুল গায়ে ধান ক্ষেতে মাছ ধরে। ট্যাংরা, পুটি, কৈ। বর্ষাকে বিদায় জানিয়ে শীতের আগমণী বার্তা শোনা যায় এ ঋতুতে। সারাদিন মিষ্টি বাতাস বয়। গুমোট গরম বিদায় নিয়ে আসে ঠান্ডা আভাস। কখনো রোঁদ, কখনো ঝমঝমিয়ে নামে বৃষ্টি। নীল আকাশ জুড়ে কার্পাস তুলার মতো সাদা মেঘের ভেলা উড়ে বেড়ায়। নিচে ফোটে সাদা কাশফুল। এরপরই কুয়াশার চাদর মুড়ি দিয়ে আসে হেমন্ত। তারপরই আসে শীত।

ওডি/আরএআর

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড