• মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৭ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

জাবি শিক্ষকের বিরল কৃতিত্ব অর্জন 

  জাবি প্রতিনিধি

১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০৮:৪৬
জাবি
অধ্যাপক ড. এ. এ. মামুন (ছবি : সংগৃহীত)

বাংলাদেশে কর্মরত প্রথম বিজ্ঞানী হিসেবে গুগল স্কলারসে ১২ হাজার স্কলারস সাইটেশনের মাইলফলক অতিক্রম করে এক বিরল কৃতিত্ব অর্জন করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক ড. এ. এ. মামুন (আবদুল্লাহ আল মামুন)।

২০১৫ সালের মে মাসে গুগলের এক রিপোর্ট অনুযায়ী, সারা পৃথিবীর বিজ্ঞানী এবং গবেষকদের গবেষণার সাইটেশন গুগল স্কলারে (গুগল স্কলার সাইটেশনস পাবলিক প্রোপাইল) এই বাংলাদেশি বিজ্ঞানী এবং গবেষকদের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

গুগল স্কলারসের সর্বশেষ (৯ ফেব্রুয়ারি ’১৯) তথ্যমতে, অধ্যাপক মামুনের সাইটেশন সংখ্যা ১২ হাজার ১২টি। গবেষণা পর্যবেক্ষকরা বলছেন, পদার্থবিজ্ঞান তো বটেই, অন্যান্য ডিসিপ্লিনেও বাংলাদেশে কর্মরত বিজ্ঞানীদের মধ্যে এখন পর্যন্ত কেউ ১২ হাজার সাইটেশন লাভ করেছেন বলে তাদের জানা নেই। বিজ্ঞান গবেষণায় অধ্যাপক মামুনের এই অর্জন মাতৃভূমি বাংলাদেশকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যাবে এবং গবেষকদের গবেষণায় লেগে থাকতে অনুপ্রেরণা জোগাবে বলে তারা মনে করেন।

সাইটেশন হচ্ছে যে কোনো তথ্যের তথ্যসূত্র। কোনো গবেষকের একটি গবেষণাকর্ম অন্য যত সংখ্যক গবেষণাকর্মে উদ্ধৃত হয়েছে, তাকে ওই গবেষণাকর্মের ‘সাইটেশন’ সংখ্যা বলে। একজন গবেষকের সব গবেষণাকর্মের ‘সাইটেশন’ সংখ্যার যোগফলকে ওই গবেষকের ‘সাইটেশন ইনডেক্স’ বলে।

অধ্যাপক এ এ মামুন বলেন, ‘এরকম কাজের স্বীকৃতি পেলে তা খুবই ভালো লাগে। এটা আমার পাশাপাশি দেশের জন্য গর্বের। আমাদের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বিশ্বমানের গবেষণা করতে বা করাতে হলে নিজ নিজ ক্ষেত্রের জার্নালগুলোর মান এবং পৃথিবীর অন্যান্য গবেষকদের তুলনায় নিজের গবেষণাকর্মের মান জানাটা অতি জরুরি। বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশ্বমানের গবেষণার পরিবেশ গড়ে তুলতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় নামতে হবে।’

কিছুদিন পূর্বে আরজি স্কোর- অনুযায়ী ৪৪ দশমিক ৯৭ পয়েন্ট নিয়ে দেশসেরা পদার্থবিজ্ঞানীর অবস্থানে রয়েছেন জাবির এই অধ্যাপক।

প্রসঙ্গত, অধ্যাপক ড. এ এ মামুন ১৯৬৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। এসএসসি, এইচএসসিতে প্রথম বিভাগ পেয়ে ভর্তি হন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে। এখানে বিএসসি এবং এমএসসিতে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হন। এমএসসিতে সব বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে বেশি নম্বর পেয়েছিলেন তিনি। এরপর ১৯৯৩ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে প্রভাষক পদে যোগ দেন।

সে বছরের সেপ্টেম্বরে কমনওয়েলথ স্কলারশিপ নিয়ে ব্রিটেনের সেন্ট অ্যান্ডুজ ইউনিভার্সিটিতে পিএইচডি করতে চলে যান। এখান থেকে তিনি প্লাজমা পদার্থবিজ্ঞানের ওপর পিএইচডি লাভ করেন। মামুন পরবর্তীতে জার্মানি এবং যুক্তরাজ্য থেকে পোস্ট ডক্টরাল অধ্যয়ন করেন। দেশে ফিরে তিনি নিজ বিভাগে যোগ দেন।

তিনি দুই শতাধিক গবেষণামূলক নিবন্ধ প্রকাশ করেন। ইনস্টিটিউট অব ফিজিক্স (লন্ডন) ডাস্টি প্লাজমার ওপর তার পাঠ্যবইকে প্রকাশ করে। ২০১৩ সালে ৩৯টি, ২০১৪ সালে ৩৮টি ও পরের বছর আন্তর্জাতিক জার্নালগুলোয় তার ৪৪টি গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়। দেশের সবচেয়ে বেশি গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশের স্বীকৃতি হিসেবে ড. এ এ মামুন ২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ সালে সায়েন্টিফিক বাংলাদেশের ‘সায়েন্টিফিক পাবলিকেশন উইথ বাংলাদেশ অ্যাফিলেশন ইন ২০১৫’ জরিপে পর পর তিন বছর ‘বর্ষসেরা গবেষক’ নির্বাচিত হন।

২০০৪ সালে বাংলাদেশ বিজ্ঞান অ্যাকাডেমি থেকে তিনি পদার্থবিজ্ঞানে স্বর্ণপদক (জুনিয়র), ২০১১ সালে বাংলাদেশ বিজ্ঞান অ্যাকাডেমি কর্তৃক স্বর্ণপদক (সিনিয়র) এবং ২০০৯ সালে আলেকজান্ডার ভন হামবোল্ডট ফাউন্ডেশন থেকে ফ্রেডরিখ উইলহেম বিসেল রিসার্চ সম্মাননা লাভ করেন।

আরও পড়ুন : প্রথমবারের মতো আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় ক্রিকেটে পাবনা প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড