• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৭ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

বুটেক্স উপাচার্যের কাছে শিক্ষার্থীর খোলা চিঠি

  ক্যাম্পাস ডেস্ক

১৩ মে ২০২০, ২২:১৪
বুটেক্স
ছবি : সম্পাদিত

শ্রদ্ধেয় উপাচার্য মহোদয়,

বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুটেক্স) একজন সাধারণ শিক্ষার্থী হতে আপনাকে সালাম। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে সাধারণ ছুটির এই সময়ে আপনাকে আমাদের এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য অফিস করতে হয় জেনে আপনার প্রতি সম্মান, ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা আরও বেড়ে গেল। একজন যোগ্য অভিভাবকের মতোই আপনি নিজেকে উজাড় করে দিচ্ছেন।

কর্মব্যস্ততার কারণে কিংবা সমন্বয়ের অভাবে হয়তো শিক্ষার্থীদের আরেকটু কল্যাণের কথা ভাবার সময়টা ধীরে ধীরে আরও বিলম্বের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। বলছি, কর্মহীন অসহায় এ সময়ে বুটেক্স ছাত্রকল্যাণের বলিষ্ঠ ভূমিকা ও সময়োপযোগী পদক্ষেপ নেওয়ার কথা।

বুটেক্সের ছাত্রদের জন্য কোভিড-১৯ ফান্ড গঠন করার জন্য কাজ করতে গিয়ে এ বিষয়টা খুব ভালোভাবে অনুধাবন হয়েছে। আপনার এ পরিবারে ধনীর দুলালদের পাশাপাশি দরিদ্র কৃষকের সন্তান আছে। আবার টিউশনি করে নিজের পড়ালেখা চালানোর পাশাপাশি মায়ের হাতে সংসারের খরচ তুলে দেওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যাও নেহায়েত কম নয়। এদের কারও কষ্ট বোঝা যায়, কারো যায় না।

স্যার, বুটেক্সের ছাত্রকল্যাণের মাধ্যমে হয়তো এ সকল নিভৃতে চোখের জল ফেলা শিক্ষার্থীদের জন্য অভিভাবক হিসেবে আপনার কিছু করার আছে। কিছুদিন আগে কিছু ব্যাচের ফরম ফিলাপ হয়েছে, আবার কোন ব্যাচের ফরম ফিলাপ বাকী আছে এখনও। ছাত্রকল্যাণের তহবিলকে কাজে লাগিয়ে কয়েক মাসের জন্য শিক্ষার্থীদের (১) হলের বেতন মওকুফ, (২) সেমিস্টার ফি ও ফরম ফিলাপের ফি মওকুফ এবং (৩) আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত এককালীন অগ্রিম বৃত্তি প্রদানের মতো ব্যবস্থা করলে শিক্ষার্থীদের বোঝার ভারটা কিছুটা হলেও কমতো বলে আমার বিশ্বাস।

বুটেক্সের আবাসিক সমস্যা আছে বলে অনেক শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার আশেপাশে বিশেষত নাখালপাড়া, নিকেতন, ফার্মগেট এবং হাতির ঝিলের মহানগর আবাসিক এলাকার দিকে মেস ভাড়া করে বসবাস করতে হয়। বাড়িওয়ালার সঙ্গে আপনার দপ্তর থেকে এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে হয়তো তারাও জাতির এ দুর্যোগকালীন মুহূর্তে আরেকটু মানবতা দেখাতো।

স্যার, আরেকটা বিষয় আপনার দৃষ্টিগোচর হওয়া প্রয়োজন। বুকভরা স্বপ্ন নিয়ে শিক্ষার্থীরা আপনার ১২ একরের এ প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয়। অথচ একটা বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে শিক্ষার্থীদের যতটুকু সুযোগ সুবিধা দিলে নিজেদের আরও মেলে ধরতে পারবে এবং জাতির সম্মুখে বুটেক্সের নাম উজ্জীবিত করতে পারবে ততটুকু তারা পায় না। দেশের অর্থনীতিতে এখানকার স্নাতকদের যে ভূমিকা, তারও যথাযথ মূল্যায়ন হয় না যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে। এ-সব কিছুই হয়তো আপনার হাতে না, তবে আপনার আরও কিছু ইতিবাচক উদ্যোগে হয়তোবা সামনের আলোকচ্ছটা পরিষ্কার হয়ে আলোর আধার হয়ে দেখা দেবে।

আরও পড়ুন : বশেফমুবিপ্রবিতে অনলাইনেই ফিশারিজ মাইক্রোবায়োলজির তত্ত্বীয় কোর্স সম্পন্ন

স্যার, সেশনজটের কথা না বললেই নয়। আপনার প্রচেষ্টা থাকা সত্ত্বেও পিছিয়ে আছে শিক্ষার্থীরা। যথাসময়ে শুরু করেও ৬ মাস পিছিয়ে আছি আমরা। করোনার প্রাদুর্ভাব এই সেশনজটকে আরও পোক্ত করে তুলেছে। অনেক বাবা-মা তাকিয়ে আছে সন্তানের দিকে। পড়ালেখা শেষ করে তার ছেলে/মেয়েটা উপার্জন করে বাবার জোয়াল নিজের কাঁধে তুলে নেবে। চাকরির মতো সোনার হরিণ তুলনামূলক সহজে পাওয়ার আশ্বাসে হয়তো অচেনা এ আঙ্গিনায় অনেক মেধাবীর পদচারণা ঘটেছে। তাই, সেশনজট কিভাবে শূন্যের কোঠায় নিয়ে আসা যায়, তা নিয়ে একটা রূপরেখা তৈরি করে রাখলে হয়তো পরবর্তীতে তা প্রয়োগ করা যেত খুব দ্রুত।

স্যার, সন্তান তুল্য আমার কোনো বাক্য আপনার সঙ্গে বেয়াদবি করে ফেললে নিজ অনুগ্রহে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রইলো।

মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ আইএআর শিক্ষার্থী, ৪৩তম ব্যাচ, বুটেক্স

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড