• রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩২ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

বসন্তের আগমনে মাতোয়ারা রাবি

  রাবি প্রতিনিধি

১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ২২:২৬
বসন্ত বরণ
শোভাযাত্রা বসন্ত বরণ (ছবি- দৈনিক অধিকার)

আজ পহেলা ফাল্গুন। ঋতুরাজ বসন্তের প্রথম দিন। গতকাল যা ছিল শীতের হিমেল বিদায়ী বাতাস, আজ তা বসস্তের আগমনী হাওয়া। ধরণীতে এসেছে ঋতুরাজ বসন্ত। কোথাও আগুন লাগা পলাশ কিংবা শিমুল, আবার কোথাও আমের ডালে কোকিলের কুহুতান, বনে লতায়, সবুজে নতুনের আগমনী গান। এসবকেই সঙ্গী করে বসন্ত রাজত্ব চালাবে আগামী দুই মাস।

বসন্ত মানেই একরাশ পূর্ণতা। বসন্ত মানেই তারুণ্যে নতুন রঙের জোয়ার। বাসন্তী, হলুদ, সবুজ কিংবা নিজের পছন্দমতো রঙের শাড়ি পড়ে, মাথায় ফুলের মুকুট দিয়ে বসন্তকে বরণ করে নেয় তরুণীরা, পিছিয়ে নেই তরুণরাও। বাঙ্গালিয়ানা সাজে নতুনকে বরণ করে নেন সকল বয়সী মানুষ। বসন্তের এই আগমনী সুবাতাস হৃদয় ছুঁয়ে গেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক- শিক্ষার্থীদের। শোভাযাত্রা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, পিঠা উৎসবসহ বিভিন্ন আয়োজনের মধ্যদিয়ে দিনটিকে বরণ করে নেয় তারা।

দিনের প্রথম প্রহরেই চারুকলা অনুষদ প্রাঙ্গণে আয়োজন করা হয় বরণ ও পিঠা উৎসবের। সকাল সাড়ে দশটায় চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে আয়োজন করা শোভাযাত্রা। শোভাযাত্রাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে সেখানে গিয়ে শেষ হয়। এতে যোগ দেন বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। মাদক, অন্যায়, অপরাধ, অপকর্ম, দূর্র্র্র্র্র্র্নীতি এগুলোর প্রতিবাদ জানিয়ে কাঁথা পুড়িয়ে বসন্তকে বরণ করেন শিক্ষার্থীরা।

পাশাপাশি চলে দিনব্যাপী পিঠা উৎসব ও শিল্পকর্ম প্রদর্শনী। এসময় তরুণ-তরুণীরা বাসন্তী রঙের শাড়ি-পাঞ্জাবি আর মাথায় ফুলের মুকুট পড়ে জানান দিয়েছে বসন্তকে। সেই সঙ্গে গোলাপ, গাঁদা, ডালিয়াসহ বাহারি নামের বর্ণালি ফুলে ক্যাম্পাসের গাছেও যেন বসন্ত জানান দিচ্ছে খুব ভালোভাবেই। ফুল আর পিঠার দোকানগুলোতে নানা বয়সী মানুষের ছিলো ভিড়। শীতের রিক্ততা মুছে প্রাণের স্পন্দনে বসন্তের আগমনে সেজেছে মতিহারের সবুজ চত্বর।

এদিন বিকেলে চারুকলা প্রঙ্গণের মুক্তমে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। পিঠার দোকানগুলোতে থরে থরে সাজানো হয়েছে ভিন্ন রঙ ও স্বাদের পিঠা।

ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা যায়, সকাল থেকেই চারুকলা অনুষদসহ গোটা ক্যাম্পাসেই শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি নগরীর বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের ছিল উপচে পড়া ভিড়। কেউ বন্ধু-বান্ধবীর, কেউ তার প্রিয় মানুষ আবার কেউ বা পরিবারের সঙ্গে উৎসবে মেতে উঠেছেন। সবাই একে অপরের সঙ্গে বিনিময় করছেন বসন্তের শুভেচ্ছা। আবার কেউ ব্যস্ত রয়েছে সেলফি তোলা নিয়ে।

বেলা বাড়ার সাথে সাথে প্রকৃতি প্রেমীরা ভিড় করছেন সেখানে। নানা শ্রেণি আর নানা বয়সী মানুষ অনুষ্ঠানে এসে যোগ করেছে নতুন এক মাত্রা। চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থী সাব্বিরা মজিদ জুই বলেন, ‘বসন্ত বাংলার ঐতিহ্য। রাজশাহীতে আমরাই বড় করে বসন্ত বরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করি। কাঁথা পুড়িয়ে শীতকে বিদায় দেওয়ার পাশাপাশি বসন্তকে স্বাগত জানাই। বসন্ত বরণের মূল আকর্ষণ থাকে পিঠা উৎসব। পিঠার জন্য রাজশাহীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে যে অনেকেই ভিড় জমায় এটাই আমাদের আনন্দ আর প্রাপ্তি।’

চারুকলা অনুষদের ডিন সিদ্ধার্থ শঙ্কর তালুকদার বলেন, ‘চারুকলার এবারের আয়োজন একটু ব্যতিক্রমই বলা চলে। বসন্তকে বরণ উপলক্ষে একসঙ্গে পিঠা উৎসব ও শিল্পকর্ম প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। আমাদের এ ধরনের আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য মাদক সন্ত্রাস নির্মূল করা।’

বসন্ত যেন প্রেমের ঋতু। প্রেমিকাকে ভালোবেসে তাইতো প্রেমিকের আবদার- ‘এ ফাগুনী পূর্ণিমা রাতে, চল পলায়ে যাই।’ বসন্তের রং ছুঁয়ে গেছিল বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকেও। তাইতো গানের সুরে তিনি বলেছেন, ‘ফাগুন, হাওয়ায় হাওয়ায় করেছি যে দান/ তোমার হাওয়ায় হাওয়ায় করেছি যে দান/ আমার আপনহারা প্রাণ, আমার বাঁধন-ছেড়া প্রাণ!

বসন্ত রঙিন ঋতু। রঙের বর্ণছটা সে ছড়িয়ে দিয়েছে সবার মনে। কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের ভাষায় বসন্তের শাশ্বত রূপটি তাই এমন- ‘ফুল ফুটুক, আর না-ই ফুটুক আজ বসন্ত।’ তাই তো সববয়সী মানুষ মুখে একই কথা “বসন্ত এসে গেছে।”

আপনার ক্যাম্পাসের নানা ঘটনা, আয়োজন/ অসন্তোষ সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড