• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩২ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

ছাদ থেকে ফেলে দেন প্রেমিক, সন্দেহ ডিবির

যেভাবে রুম্পাকে হত্যা করে প্রেমিক সৈকত!

  নিজস্ব প্রতিবেদক

০৮ ডিসেম্বর ২০১৯, ১৯:৫২
রুম্পা
রুম্পার মৃত্যুরহস্যের জট খুলতে শুরু করেছে (ছবি : সংগৃহীত)

রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরীতে স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী রুবাইয়াত শারমিন রুম্পার (২০) মৃত্যু হত্যা না কি আত্মহত্যা সেই রহস্যের জট খুলতে শুরু করেছে। রুম্পাকে ১২ তলা ভবনের ছাদ থেকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়ে হত্যা করেন তার প্রেমিক আবদুর রহমান সৈকত (২২)। রুম্পা হত্যার ঘটনায় তার প্রেমিক সৈকতকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর এমন সন্দেহ পোষণ করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) দক্ষিণ গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।

রবিবার (৮ ডিসেম্বর) ডিএমপির দক্ষিণ গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি) তাকে আদালতে পাঠায়। সৈকতকে আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তার সাত দিনের রিমান্ড চেয়েছিল ডিবি। তবে সৈকতের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

ডিবির ধারণা, রুবাইয়াত শারমিন রুম্পার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল আবদুর রহমান সৈকতের। কিন্তু সৈকত প্রেমের সম্পর্কের সমাপ্তি ঘটাতে চেয়েছিল। এ নিয়ে দুইজনের মধ্যে বিরোধ তৈরি হলে প্রেমিক সৈকত তার সহযোগীদের নিয়ে রুম্পাকে সিদ্ধেশ্বরীর একটি বহুতল ভবনের ছাদে নিয়ে যান। এক পর্যায়ে রুম্পাকে ছাদ থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন সৈকত।

মামলার তদন্ত সূত্রে জানা গেছে, কয়েক মাস আগেই সৈকতের সঙ্গে রুম্পার মান-অভিমানের শুরু হয়। ওই ঘটনার পর থেকেই রুম্পাকে এড়িয়ে চলছিলেন সৈকত। যা রুম্পা ভালোভাবে নিতে পারেননি। ঘটনার দিন সৈকতই তার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এরপর তারা সিদ্ধেশ্বরীর ৬৪/৪ নম্বর বাসায় দেখা করার সিদ্ধান্ত নেন। ওই ভবনের নিচ তলায় ও তৃতীয় তলায় ব্যাচেলর কিছু ছাত্র বসবাস করেন। সেখানে স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছাত্রও রয়েছেন। সেখানকার তিন তলার মেসে রুম্পা ও সৈকত দীর্ঘসময় কথা বলেন।

তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ‘রুম্পার মতো একাধিক মেয়ের সঙ্গেই শারীরিক সম্পর্ক ছিল সৈকতের। রুম্পার সঙ্গে সৈকত সম্পর্ক রাখতে না চাওয়ায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে ছিল সে। সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার জন্য কলেজের ঘনিষ্ঠ বান্ধবী সুলতানার শরণাপন্ন হন রুম্পা। সুলতানা ঘটনাস্থলের ঠিক পাশের ভবনের পাঁচতলায় থাকেন। মাঝে মাঝে সেখানে রাতে রুম্পাও থাকতেন। সৈকতের সম্পর্ক না রাখার বিষয়টি রুম্পা সুলতানাকে জানালে ঘটনার দিন দুপুরে স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে সৈকত যাওয়ার পর সুলতানা তাকে সম্পর্কটি রাখার কথা বলেন। কিন্তু সৈকত আবারও সম্পর্ক রাখা সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দেয়। এতে আরও বিষণ্ণ হয়ে পড়েন রুম্পা।’

তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির রমনার জোনাল টিমের পরিদর্শক শাহ মো. আকতারুজ্জামান ইলিয়াস নিহত ছাত্রী রুম্পার রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনার প্রাথমিক তদন্তের বিষয়ে আদালতকে জানান, স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী রুম্পা ও আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজের বিবিএ’র শিক্ষার্থী সৈকতের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তবে দিন দিন তাদের সম্পর্কের অবনতি ঘটে। গত ৪ ডিসেম্বর বিকালে তারা স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে দেখা করেন। সে সময় সম্পর্ক ছিন্ন করার কথা বলেন সৈকত। রুম্পা বার বার অনুরোধ করলেও সৈকত সম্পর্ক রাখতে রাজি হননি। এ নিয়ে রুম্পা-সৈকতের মনোমালিন্য ও বিরোধ চরম আকার ধারণ করে। এরই জের ধরে ওই দিন রাত পৌনে ১১টায় সৈকত তার কয়েকজন সহযোগীকে নিয়ে রুম্পাকে সিদ্ধেশ্বরীর ৬৪/৪ নম্বর বাড়িটির ছাদে নিয়ে যান। এক পর্যায়ে রুম্পাকে ছাদে থেকে ধাক্কা দিয়ে নিচে ফেলে দেন। প্রাথমিকভাবে এমনটাই সন্দেহ করা হচ্ছে।

শনিবার (৭ ডিসেম্বর) রাতে সৈকতকে আটক করে ডিবিতে নেওয়া হয়। সেখানে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে রমনা থানার মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।

উল্লেখ্য, বুধবার (৪ ডিসেম্বর) রাতে সিদ্ধেশ্বরী সার্কুলার রোডে দুই ভবনের মাঝে এক গলিতে রুম্পার লাশ পাওয়া যায়। ওই তরুণী আশপাশের কোনো ভবন থেকে পড়ে মারা গেছেন বলে তখন ধারণা করা হয়। কিন্তু পুলিশ তখন তার নাম-পরিচয় জানতে পারেনি। পরের দিন বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় স্বজনরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে গিয়ে লাশ শনাক্ত করেন।

ওডি/টিএএফ

অপরাধের সূত্রপাত কিংবা ভোগান্তির কথা জানাতে সরাসরি দৈনিক অধিকারকে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড