রণদা প্রসাদ হত্যায় মাহবুবুর রহমানের ফাঁসির আদেশ

একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন দানবীর রণদা প্রসাদ সাহা ও তার ছেলেসহ সাতজনকে হত্যার ঘটনায় টাঙ্গাইলের মাহবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে করা যুদ্ধাপরাধ মামলায় মাহবুবুর রহমানের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারক বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) এ রায় দেন।

বুধবার (২৬ জুন) বিচারপতি শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল রায়ের এ তারিখ নির্ধারণ করেন। এর আগে দুই পক্ষের যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল চলতি বছরের এপ্রিল মাসের ২৪ তারিখে মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমান রাখেন।

একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় অপহরণ, আটকে রেখে নির্যাতন, হত্যা- গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের ৩টি ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে টাঙ্গাইলের মাহবুবের বিরুদ্ধে। রাষ্ট্রপক্ষের দাবি তিনটি ঘটনায় আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছেন তারা। মাহবুবুর রহমানের সর্বোচ্চ দণ্ডের আশা করছে রাষ্ট্রপক্ষ।

রাষ্ট্রপক্ষে যুদ্ধাপরাধ মামলাটি পরিচালনা করেন প্রসিকিউটর রানা দাশগুপ্ত। মাহবুবের পক্ষে ছিলেন গাজী এমএইচ তামিম।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশনের তথ্যানুযায়ী, সত্তর বছর বয়সী আসামি মাহবুবুর একাত্তরে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর শান্তি কমিটির সভাপতি বৈরাটিয়াপাড়ার আবদুল ওয়াদুদের ছেলে। মাহবুবুর ও তার ভাই আবদুল মান্নান মুক্তিযুদ্ধের সময় রাজাকার বাহিনীতে ছিলেন।

ট্রাইব্যুনালে যুক্তিতর্ক শুনানির পর প্রসিকিউটর রানা দাশগুপ্ত বলেন, ‘আসামির বিরুদ্ধে একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের ৩টি অভিযোগ এনেছিল প্রসিকিউশন। আমরা মনে করি তিনটি অভিযোগই সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি। তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ এ মামলায় ১৩ সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন। যেসব সাক্ষ্যপ্রমাণ আমরা উপস্থাপন করেছি, তাতে আসামির সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড চেয়েছি।’

২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের ১২ তারিখে টাঙ্গাইলের মাহবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

ফেব্রুয়ারির ১১ তারিখে অভিযোগ আমলে নেওয়ার পর মার্চ মাসের ২৮ তারিখে আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে তার বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। বারো মাসের বেশি সময় পর বুধবার আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক শেষ হলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল যুদ্ধাপরাধ মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমান রাখে।

ওডি/এএন