৩ দিনের মধ্যে জামায়াত নেতাদের ভোটভাগ্য নির্ধারণ

হাইকোর্ট জামায়াতে ইসলামীর ২৫ নেতার প্রার্থিতা বাতিলের পদক্ষেপ নিতে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) করা আবেদন তিন দিনের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন। এসব নেতার নির্বাচনে অংশগ্রহণের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে করা রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর হাইকোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার রুলসহ এ আদেশ দেন।

এর আগে সোমবার আদালত প্রাথমিক শুনানির পর রিট আবেদনকারীদের নির্বাচন কমিশনে আবেদন করতে বলেছিলেন। সেদিনই জামায়াতের ২৫ নেতার প্রার্থিতা বাতিলে পদক্ষেপ নিতে নির্বাচন কমিশনে আবেদন করেন রিটকারীরা।

রিটকারীর পক্ষে আদালতে শুনানি করেন ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর। মঙ্গলবার ইসি প্রতিনিধির উপস্থিতিতে প্রাথমিক শুনানির পর সেই আবেদনটি তিন দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

অন্যদিকে নির্বাচন কমিশনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী তৌহিদুল ইসলাম। পরে তানিয়া আমীর সাংবাদিকদের বলেন, ‘হাইকোর্ট জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল ঘোষণা করে রায় দিয়েছিলেন। এর বিরুদ্ধে জামায়াতে ইসলামী আপিল করলেও তার শুনানি করেনি। প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে অন্য দলের প্রতীক ও স্বতন্ত্র হয়ে তারা নির্বাচন করছে। আইনের প্রতিষ্ঠিত রীতি যা প্রত্যক্ষভাবে করা যায় না, তা পরোক্ষভাবেও করা যায় না। এসব যুক্তিতে রিটটি করা হলে আদালত রুলসহ ইসিকে ওই নির্দেশ দিয়েছেন।’

রিটকারীরা হলেন- বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের মহাসচিব সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরী, সমাজকল্যাণ সচিব শাহ মোহাম্মদ আলী হুসাইন, ‘আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান’-এর সভাপতি হুমায়ুন কবির ও সংগঠনটির সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য মো. এমদাদুল হক।

রিটে বলা হয়েছে, ‘ইদানীং বিভিন্ন পত্র-পত্রিকার মাধ্যমে জানতে পারি, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ২৫ জন প্রার্থী তাদের রাজনৈতিক পরিচয় গোপন রেখে অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের প্রতীক বা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন কমিশনে নমিনেশন পেপার জমা দেন, যা অত্র ইলেকশন কমিশন কর্তৃক গৃহীত হয় এবং তাদের বৈধ প্রর্থী হিসেবে নির্বাচন করার সুযোগ প্রদান করা হয়েছে, যা আইনগত বৈধ নয়।’

রিটে জামায়াতের ২৫ প্রার্থীসহ প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি), নির্বাচন কমিশন সচিব, জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে আমীর ও সেক্রেটারি জেনারেলকে বিবাদী করা হয়েছে। জামায়াত নেতাদের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন (ইসি) যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা নিয়ে রুল চাওয়া হয় রিটে। এ ছাড়া রুল বিচারাধীন থাকা অবস্থায় ওই ২৫ প্রার্থীর মনোনয়ন স্থগিত চাওয়া হয় আবেদনে।

বিএনপির প্রতীক ধানের শীষ নিয়ে জামায়াতের ২১ নেতা এবার ভোটের মাঠে রয়েছেন। এরা হলেন- ঢাকা-১৫ ডা. শফিকুর রহমান, ঠাকুরগাঁও-২ আবদুল হাকিম, দিনাজপুর-১ আবু হানিফ, দিনাজপুর-৬ আনোয়ারুল ইসলাম, নীলফামারী-২ মো. মনিরুজ্জামান, নীলফামারী-৩ আজিজুল ইসলাম, গাইবান্ধা-১ মাজেদুর রহমান, সিরাজগঞ্জ-৪ রফিকুল ইসলাম খান, পাবনা-৩ আনোয়ারুল ইসলাম, পাবনা-৫ ইকবাল হোসাইন, খুলনা-৫ মিয়া গোলাম পরোয়ার, খুলনা-৬ আবুল কালাম আজাদ, যশোর-২ আবু সাঈদ মো. শাহাদাত হোসাইন, ঝিনাইদহ-৩ মতিয়ার রহমান, সাতক্ষীরা-২ মুহাদ্দিস আবদুল খালেক, সাতক্ষীরা-৪ গাজী নজরুল ইসলাম, বাগেরহাট-৩ ওয়াদুল শেখ, বাগেরহাট-৪ আবদুল আলীম, পিরোজপুর-১ শামীম সাঈদী, কুমিল্লা-১১ সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের ও চট্টগ্রাম-১৫ আসনে শামসুল ইসলাম।