• রোববার, ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৪ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

নৌকার বিপক্ষে আ. লীগ নেতার গোপন বৈঠক, ভিডিয়ো ভাইরাল

  রিয়াজুল ইসলাম, কুষ্টিয়া

২৬ ডিসেম্বর ২০২১, ১৫:২৭
কুষ্টিয়া সদর উপজেলা আ. লীগের কোষাধ্যক্ষ ওমর ফারুক
কুষ্টিয়া সদর উপজেলা আ. লীগের কোষাধ্যক্ষ ওমর ফারুক (ছবি : অধিকার)

কুষ্টিয়া সদরে ইউপি নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থীকে জেতাতে আ. লীগ নেতার গোপন বৈঠকের ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে। নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর বিপক্ষে করা ওই বৈঠক নিয়ে ইতোমধ্যে তোলপাড় শুরু হয়েছে।

ঘটনাটি কুষ্টিয়া সদরের বটতৈল ইউনিয়নের। যেখানে গত ২১ ডিসেম্বর ওই স্বতন্ত্র প্রার্থী মিজানুর রহমান মিন্টু ফকিরের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এরই জের ধরে ওইদিন তার সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের তুমুল সংঘর্ষ হয়।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পাওয়া ২ মিনিট ৩৭ সেকেন্ডের ওই ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে, ইউনিয়নের ওয়ার্ড পর্যায়ের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা উপস্থিত আছেন। ভিডিয়োটি গোপনে রেকর্ড করেছেন কোনো এক অংশগ্রহণকারী। সেখানে কুষ্টিয়ার একজন জাতীয় পর্যায়ের নেতার উদ্ধৃতি দিয়ে বক্তব্য রাখছেন কুষ্টিয়া সদর উপজেলা আ. লীগের কোষাধ্যক্ষ ওমর ফারুক।

ভিডিয়োতে তিনি বলেন, ‘আমাদের এখানে গ্যাঞ্জামের পর আসামিদের ছাড়ানোর জন্য আমি নেতার সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি বলেছেন, নৌকার অবস্থানটা ভালো নেই। ওর (নৌকার প্রার্থী) যা অবস্থা তাতে ভোট চাওয়ার মতো, করার মতো অবস্থা নেই।’

ভিডিয়োতে ওমর ফারক বলেন, ওসব বিশ্লেষণে যাবো না। আমরা ঘোড়া মার্কার ভোট করছি। আমার নৌকার ক্যান্ডিডেটের অবস্থা সবাই জানেন, তার পক্ষে জেতা সম্ভব নয়। তাই নির্দেশনা আসছে ঘোড়া মার্কার (বিদ্রোহী প্রার্থী) ভোট করার। আমি কোনো নেতার নাম বললাম না, তবে আমি সিগন্যাল মতো কথা বলছি।’

এ সময় উপস্থিত নেতারা প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘কে সিগন্যাল দিয়েছে আমি বলতে পারব না। এতো বিশ্লেষণ করে বলা সম্ভব নয়। আমাকে বলেছে ঘোড়া মার্কার ভোট করতে, আমি ঘোড়া মার্কার ভোট করছি। আমার সাহস নাই নৌকা মার্কার বিরুদ্ধে ভোট করার। আমি নৌকাকে জেতাতে পারছি না। যেহেতু আমাদের আ. লীগ করা একজন লোক দরকার সেই হিসেবে এই নির্দেশনা দিয়েছে।’

বটতৈল ইউনিয়নের কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এই বৈঠকটি হয় ইউনিয়ন আ. লীগের সভাপতি আবু বক্কার সিদ্দিকের অফিসে। ২৫ ডিসেম্বর দুপুর ১২টার দিকে এই বৈঠকে ওয়ার্ড পর্যায়ের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা উপস্থিত ছিলেন।

বিষয়টি স্বীকার করে ইউনিয়ন আ. লীগের সভাপতি আবু বক্কার সিদ্দিক বলেন, ইউনিয়নের বর্তমান পরিস্থিতি ও সংঘর্ষের ঘটনায় সাধারণ সম্পাদকসহ নেতা-কর্মীদের নামে মামলা হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে করণীয় ঠিক করতে আমি সব ওয়ার্ডের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে ডেকেছিলাম। সেখানে আমি কোনো কথা বলিনি। ওমর ফারুকই এসব বলেছেন। তবে ঘোড়া মার্কায় ভোট করার তার এ প্রস্তাব নেতারা সবাই মেনেও নেননি।

আবু বক্কার আরও বলেন, দুপুরের নামাজের আগে এসব আলোচনা হয়। পরে নামাজ পড়ে এসে সবাই খাওয়া দাওয়া করেন।

কুষ্টিয়া সদর উপজেলা আ. লীগের কোষাধ্যক্ষ ওমর ফারুকও ভিডিয়োর এই বক্তব্যের কথা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, কেউ একজন গোপনে এই ভিডিয়ো করেছেন। তবে কোন নেতা এই সিগন্যাল দিয়েছেন তার নাম তিনি বলেননি বলেও দাবি করেন।

এ ব্যাপারে কথা হয় কুষ্টিয়া সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও শহর আ. লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান আতার সঙ্গে। তিনি বলেন, এ রকম ভিডিয়োর ব্যাপারে আমার জানা নেই। তবে দলের বিপক্ষে কেউ কথা বললে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে এই ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান এমএ মোমিন মণ্ডল বলেন, এই বৈঠকের ভিডিয়ো আমিও দেখেছি। এটা খুবই নিন্দনীয়। আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

আরও পড়ুন : জামালপুরের তিন উপজেলায় শান্তিপূর্ণভাবে চলছে ভোটগ্রহণ

ওমর ফারুককে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, সে আ. লীগে অনুপ্রবেশকারী। জামায়াত থেকে আসছে। জামায়াত-বিএনপিকে সমর্থন করার প্রবণতা থেকে বের হয়ে আসতে পারেনি। তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করার জন্যই সে নৌকার বিরুদ্ধে অবস্থান নিচ্ছে।

উল্লেখ্য, কুষ্টিয়া সদর উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে আগামী ৫ জানুয়ারি ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

ওডি/এএম

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড