এম কামাল উদ্দিন, রাঙামাটি
রাঙামাটিতে কলেজছাত্রী পূর্ণিমা চাকমার রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় অবিলম্বে সুষ্ঠু তদন্তসহ বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন পূর্ণিমার স্বজনরা।
বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) সকালে রাঙামাটি রিপোর্টার্স ইউনিটির সম্মেলন কক্ষে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন পূর্ণিমার ভাই পলাশ চাকমা।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, রাঙামাটি সরকারি মহিলা কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী পূর্ণিমা চাকমা শহরের রাজবাড়ি এলাকার মল্লিকা চাকমার বাড়িতে থাকত। পূর্ণিমা জেলার জুরাছড়ি উপজেলার ভারতের মিজোরাম সীমান্তবর্তী দুমদুম্যা ইউনিয়নের বগাখালী নামক পাহাড়ি গ্রামের সাধন চাকমার মেয়ে। ২৯ অক্টোবর রাঙামাটি শহরের রাজবাড়ির মল্লিকা চাকমার বাড়িতে তার রহস্যজনক মৃত্যু ঘটে। সেইদিন পূর্ণিমাকে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়েছিল। তার আগেও তাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে হয়রানি করা হয়েছিল সেখানে। হত্যার পর ঘটনাটিকে ‘পূর্ণিমা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা’ করেছে বলে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন বাড়ির মালিক মল্লিকা চাকমা ও তার সহযোগীরা। এটি নিঃসন্দেহে পূর্বপরিকল্পিত হত্যাকান্ড। কারণ, পূর্ণিমার লাশের শরীরে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যার মতো কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। পাওয়া গেছে, পাশবিক নির্যাতনের আঘাতের চিহ্ন। হত্যাকান্ডে বাড়ির মালিক মল্লিকা দেওয়ান ও তার সহযোগী অঞ্জলি চাকমা ওরফে গান্ডিসহ কয়েকজন জড়িত। অবিলম্বে তাদেরকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হলে ঘটনার প্রকৃত রহস্য উন্মোচিত হবে।
পলাশ চাকমা বলেন, আমার বোন পূর্ণিমা পড়ালেখার জন্য রাঙামাটি সরকারি মহিলা কলেজে ভর্তি হয়েছিল। এ কারণে রাঙামাটি শহরের রাজবাড়ি এলাকার ওই মল্লিকা দেওয়ানের পরিবারের সঙ্গে থাকত। আর সেখানে থাকার জন্য ঠিক করে দিয়েছিলেন জুরাছড়ির অঞ্জলী চাকমা ওরফে গান্ডি। সেখানে থাকাকালে একাধিকবার মানসিক ও শারীরিকভাবে হয়রানি করা হয়েছিল পূর্ণিমাকে। আমার বোন পূর্ণিমার স্বপ্ন ছিল ডাক্তার হওয়ার। আজ তার সেই স্বপ্নকে শেষ দিল ঘাতকরা।
তিনি আরও বলেন, এখন হত্যার ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে পূর্ণিমা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। দ্রুত সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে পূর্ণিমা চাকমার হত্যার বিচার ও আসামিদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি। রাঙামাটির কোতোয়ালি থানায় দায়ের করা অভিযোগ অবিলম্বে মামলা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হোক। আর যদি দ্রুত সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের পদক্ষেপ নেওয়া না হয় তাহলে ছাত্রসমাজ রাজপথে নামতে বাধ্য হবে।
এ বিষয়ে কোতয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত ওসি মো. কবির হোসেন বলেন, পূর্ণিমা চাকমার ভাই পলাশ চাকমার কাছ থেকে একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। সেটি আমরা তদন্ত করে দেখছি। এখনও মামলা হিসাবে অন্তর্ভুক্ত হয়নি, যা তদন্তাধীন।
আরও পড়ুন : কালিয়াকৈরে প্রতিপক্ষের হামলায় নিহত ১
সংবাদ সম্মেলনে মিথিলা চাকমা, সুমন চাকমা, মোহিনী চাকমা, রুবেল চাকমাসহ পূর্ণিমার স্বজন, সহপাঠী ও কলেজ শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। একই দাবিতে গত ১ নভেম্বর মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করেছিলেন তারা।
ওডি/এএম
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড