রফিকুল ইসলাম রফিক, গাইবান্ধা
গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলায় রিকশাচালক ছকু মিয়া হত্যা মামলায় রনজু মিয়া ও মন্টু মিয়া নামে দুই আসামিকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। তারা উভয়ে সম্পর্কে ভাই।
মঙ্গলবার (২৬ অক্টোবর) বাদিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর হোসেন আসামিদের কারাগারে পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, মঙ্গলবার গাইবান্ধা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির হয়ে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করে ওই দুই আসামি। পরে আদালতের বিচারক আশিকুল খবির শুনানি শেষে জামিন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
অভিযুক্ত রনজু মিয়া ও মন্টু মিয়া সাদুল্লাপুর উপজেলার দামোদরপুর ইউনিয়নের পূর্ব দামোদরপুর গ্রামের মৃত কফিল উদ্দিনের ছেলে।
মামলার সূত্রে জানা যায়, সাদুল্লাপুর উপজেলার পূর্ব দামোদরপুর গ্রামের ছয় ভাই আলমগীর, আংগুর, রনজু, মনজু, সনজু ও মন্টু মিয়া দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় দাদন ব্যবসায় জড়িত। তাদের সাথে প্রতিবেশী রিকশাচালক ছকু মিয়ার পারিবারিক ও দাদনের টাকা নিয়ে পূর্ব বিরোধ ছিল। পরবর্তীকাল ছকু মিয়ার ছেলের সাথে মন্টু মিয়ার মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে সেই বিরোধ আরও তীব্র হয়। এ নিয়ে গত ১৫ মে সন্ধ্যা ৭টার দিকে ছকু মিয়াকে বাড়িতে আটকে হাত-পা বেঁধে মারপিট করে অভিযুক্তরা।
এ ঘটনার পাঁচ দিন পর দামোদরপুর ইউপি চেয়ারম্যান সাজেদুল ইসলাম স্বাধীনের উপস্থিতিতে সালিশ বৈঠকে ‘ছেলের প্রেমের খেসারত’ হিসেবে ছকু মিয়াকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। সেই টাকার জন্য ছকুর একমাত্র ঘরটিও ১৫ হাজারে বিক্রি করে দেন দাদন কারবারিরা। এরপর তাকে ভিটেছাড়া করা হয়। পরে ছকু মিয়া আশ্রয় নেন গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলাধীন ছেলের বাসার। সেখানে হাসপাতালের ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী চিকিৎসা নেওয়ার মধ্যেই ৩ জুন তার মৃত্যু হয়।
ওই ঘটনায় থানায় মামলা না নিলে গত ১৬ জুন নিহত ছকু মিয়ার ছেলে মোজাম্মেল হক সাদুল্লাপুরের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে মামলা করেন। পরে আদালতের বিচারক শবনম মুস্তারী সাদুল্লাপুর থানাকে মামলা রেকর্ডভুক্ত করে ২৩ জুনের মধ্যে মরদেহ উত্তোলনসহ প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন।
এরপর গত ২১ জুন সাদুল্লাপুর থানা পুলিশ ও জেলার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট লোকমান হোসেনের উপস্থিতে মরদেহ উত্তোলন করে ময়না তদন্তের জন্য রংপুর মেডিক্যাল কলেজ (রমেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।
আরও পড়ুন : বাঁচতে চায় কিডনি রোগে আক্রান্ত পার্থ
আদালতে মামলার শুনানিকালে আসামিপক্ষে আইনজীবী হিসেবে ছিলেন অ্যাডভোকেট সৈয়দ ছামছুল আলম হিরু, অ্যাডভোকেট আহসানুল করিম লাছু, অ্যাডভোকেট নিরাঞ্জন কুমার ঘোষ ও আদালতের সাবেক পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) শফিকুর রহমান শফি।
এ দিকে, মামলার পর বাদী মোজাম্মেল হকও বাড়িছাড়া করার অভিযোগ উঠেছে। বর্তমানে পাশের একটি গ্রামে তিনি আশ্রয় নিয়েছেন বলে জানা গেছে।
ওডি/নিলয়
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড