বউ বউ খেলা থেকে নাটোরে শিশু ধর্ষণ ও হত্যা

নাটোরের লালপুর উপজেলায় আলোচিত নুসরাত জাহান বাবলী ধর্ষণ ও হত্যার রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ।

রবিবার (২৪ অক্টোবর) হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করেন পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা। জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে ওই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

এর আগে শনিবার (২৩ অক্টোবর) রাতে অভিযুক্ত কিশোর ইমন ও তার বাবা ফাইজুল ইসলামকে গ্রেফতার করে লালপুর থানা পুলিশ। একই সাথে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত হাঁসুয়াও উদ্ধার করা হয়।

নিহত শিশু বাবলী উপজেলার চংধুপইল ইউনিয়নের আব্দুলপুর মধ্যপাড়া গ্রামের বাবু হোসেনের মেয়ে।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার জানান, চংধুপইল ইউনিয়নের আব্দুলপুর মধ্যপাড়ায় শিশুদের বনভোজনে বউ বউ খেলা থেকেই ঘটে সাত বছরের শিশু নুসরাত জাহান বাবলী ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ড। ধর্ষণের সময় ব্যথায় শিশুটি কান্না শুরু করলে তার মুখ চেপে ধরে সপ্তম শ্রেণি পড়ুয়া ইলিয়াস হাসান ইমন। তারপরও কান্নাকাটি করলে হাঁসুয়ার পেছন দিক দিয়ে ঘাড়ে আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে।

এ দিকে, মৃত্যু নিশ্চিতের পর লাশ বস্তায় ভরে পাশের টয়লেটের ট্যাংকিতে ভরে রাখে। পুলিশ বাবলীর খোঁজ শুরু করলে ইমনের বাবা ফাইজুল ইসলামের নিজের ছেলে ইমনকে সন্দেহ হওয়ায় জিজ্ঞাসাবাদ করে নিশ্চিত হন, তার ছেলে ইমনই বাবলীকে মেরে ফেলেছে। পরে নিজের ছেলেকে বাঁচাতে বাবা-ছেলে মিলে টয়লেটের ট্যাংকি থেকে লাশের বস্তা তুলে ৫০০ মিটার দূরে জিয়া মেম্বারের আম বাগানের পাশের ধানখেতে ফেলে রেখে আসে।

পুলিশ সুপার জানান, গত ১৯ অক্টোবর নিহত বাবলী হত্যাকারী ইমনসহ বেশ কয়েকজন শিশু পিকনিকের জন্য প্রতিবেশী আরশেদ আলীর বাড়িতে যায়। রান্না শেষে গোসলের জন্য সবাই বাড়ি গেলে ইমনও তার বাড়িতে চলে যায়। ওই সময় ইমন তার বাড়িতে একাকী থাকা অবস্থায় শিশু বাবলী তার বাড়িতে যায়। এ সময় বাবলীকে একা পেয়ে বউ বউ খেলার কথা বলে ধর্ষণ করে ইমন। এতে বাবলী চিৎকার শুরু করলে ইমন তার গলা চেপে থামানোর চেষ্টা করে। একপর্যায়ে বাবলী নিস্তেজ হয়ে পড়লে ধারালো হাঁসুয়ার উল্টো দিক দিয়ে ঘাড়ে আঘাত করলে বাবলীর মৃত্যু হয়।

তিনি জানান, হত্যার দিন দুপুরে আরশেদ আলীর বাড়িতে বাবলীকে খুঁজে না পেয়ে তার বাবা বাবু হোসেন আত্মীয়-স্বজনদের জানানোর পাশাপাশি আব্দুলপুর এলাকায় মাইকিং ও রেল স্টেশনে পোস্টারিং করেন। তবে নিখোঁজের চতুর্থ দিনে শিশুটির বাবা জানতে পারেন তার বাড়ির ৭০০ মিটার দূরে একটি জমিতে বস্তাবন্দি অবস্থায় একটি মৃতদেহ পড়ে আছে। এ সময় তারা সেখানে গিয়ে বাবলীর অর্ধগলিত মরদেহ শনাক্ত করেন।

এ ঘটনায় ইতোমধ্যেই অভিযুক্ত কিশোর ইমন ও তার বাবা ফাইজুল ইসলামকে গ্রেফতার করেছে লালপুর থানা পুলিশ।

আরও পড়ুন : জীবিত স্বামীকে মৃত বানিয়ে বিধবা ভাতার কার্ড!

সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারেক জোবায়ের, লালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফজলুর রহমান, গোয়েন্দা পুলিশের ইনচার্জ জালাল উদ্দীনসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ওডি/নিলয়