• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

পেকুয়ায় থামছেই না পাহাড় কাটার ধুম, দখল হচ্ছে বনভূমি

  এস এম জুবাইদ, পেকুয়া, কক্সবাজার

২২ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৫:০০
পাহাড়
পাহাড় কেটে জবরদখলে নেওয়া হচ্ছে সরকারি জমি। ছবি : দৈনিক অধিকার

কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলায় পাহাড় কাটা যেন থামছেই না। প্রতিনিয়ত এসব পাহাড় কেটে চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের জায়গা জবরদখলে নিচ্ছে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী চক্র। এরই মধ্যে বন বিভাগ থেকে একাধিকবার নিষেধ করা সত্ত্বেও থামেনি পাহাড় কাটা। ফলে মুহূর্তেই কাটা পাহাড়ের সমতল ভূমিতে গড়ে উঠছে বসতঘর।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, উপজেলার শিলখালী ইউনিয়নের ছৈয়দ নগর এলাকার আবদুল হাকিমের ছেলে মো. নুরুন্নবী ও তার ভাগিনা বেলাল উদ্দিন একটি পাহাড় কাটা সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন। গত চার মাস আগে শিলখালী ইউনিয়নের জারুলবুনিয়া পূর্ব আধারী এলাকার একটি পাহাড়ের পাদদেশে ঝুপড়ি ঘর বানিয়ে তা জবরদখল করে নেয় ওই চক্র। জবরদখল করে বানানো ওই ঘরে বেলাল উদ্দিন তার পরিবার নিয়ে বসতি গড়ে আসলেও তা নজরে আসেনি বন বিভাগের। তবে সম্প্রতি নুরুন্নবীর ইন্ধনে বেলাল উদ্দিন পাহাড় কাটা শুরু করলে বাধা দেয় বন বিভাগ।

এ ব্যাপারে বারবাকিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা আবদুল গফুর মোল্লা দৈনিক অধিকারকে বলেন, বেলাল উদ্দিন ও নুরুন্নবী কয়েক মাস আগে থেকে বন বিভাগের জমি দখলে নিয়ে ঘর করেছে। সম্প্রতি দেখছি পাহাড় কাটা শুরু করেছে। আমাদের সামাজিক বনায়নের গাছও কেটে ফেলছে তারা। এ ব্যাপারে শীঘ্রই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ দিকে, বুধবার (২২ সেপ্টেম্বর) সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, জারুলবুনিয়ার পূর্ব আধারীর সামাজিক বনায়ন সম্বলিত পাহাড়টির পূর্ব পাশের খাদে বেড়া আর পলিথিন দিয়ে বানানো হয়েছে ঝুপড়ি ঘর। এর উপরে পাহাড়ের প্রায় ৩০ থেকে ৪০ ফুট কেটে সমতল করা হয়েছে। সাথে পাহাড় কেটে মাটি দিয়ে ভরাট করা হচ্ছে ঘরের নিচের তলা। এমনকি পাহাড় কাটতে গিয়ে সাবাড় করা হয়েছে সামাজিক বনায়নের প্রায় ২০ থেকে ২৫টি গাছ।

স্থানীয় বাসিন্দা মো. হোছাইন দৈনিক অধিকারকে বলেন, বেলাল উদ্দিন নয় বছর আগে রাজাখালী থেকে এই এলাকায় আসে। এরপর থেকে তার মামা নুরুন্নবীর ইন্ধনে নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়েছে। সম্প্রতি নুরুন্নবী তার ভাগিনাকে দিয়ে বন বিভাগের দুই একর জমি দখলে নিয়েছে।

এ দিকে, দখল হওয়া সরকারি জায়গায় ভূমিহীন ভাগিনাকে থাকার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন অভিযুক্ত মো. নুরুন্নবী। তিনি বলেন, ‘বেলাল অসহায় একজন দিনমজুর। থাকার জায়গা নেই। তাই ওখানে তাকে বসতি গড়তে সাহায্য করেছি।'

এ বিষয়ে বেলালের সাথে যোগাযোগ করা হলেও তার বক্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি।

আরও পড়ুন : উখিয়ায় প্রথম নারী রেশমার পিএইচডি অর্জন

সার্বিক বিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আসিফ আল জিন্নাত দৈনিক অধিকারকে বলেন, পাহাড় কেটে পরিবেশ ধ্বংস করা এবং তা দখলে নেওয়া গুরুতর অপরাধের কাজ। আমরা এ বিষয়ে এখন জানলাম। যেহেতু জায়গাটা বন বিভাগের সেহেতু তারা আমাদের অবহিত করলে অভিযানে যাব।

অন্যদিকে, পরিবেশ অধিদফতর কক্সবাজার কার্যালয়ের উপ-পরিচালক সংযুক্তা দাশ গুপ্ত বলেন, এর আগেও পেকুয়াতে বিভিন্ন সিন্ডিকেট পাহাড় কেটে পরিবেশের ক্ষতি করেছিল। আমরা তাদের আইনের আওতায় এনেছিলাম। এ ক্ষেত্রেও তদন্ত করে সত্যতা পেলে আমাদের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ওডি/নিলয়

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড