• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

ছদ্মবেশে ঘুরে ঘুরে চুরির টার্গেট করতেন তারা

  হারুন আনসারী, ফরিদপুর

০৭ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১০:৩০
গ্রেফতার
মালেক শেখ হত্যাকাণ্ডে জড়িতরা গ্রেফতার (ছবি : দৈনিক অধিকার)

ফরিদপুরের মধুখালি উপজেলার গোন্দারদিয়া গ্রামের ষাটোর্ধ রিকশা চালক আ. মালেক শেখ হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেফতার করেছে পুলিশ। হত্যাকাণ্ডে জড়িত একটি সংঘবদ্ধ চক্র যারা বিশেষত ইঞ্জিনচালিত নসিমন চুরি করত। এজন্য দিনের বেলায় ফেরিওয়ালা ছদ্মবেশে ঘুরে ঘুরে চুরির টার্গেট করতেন তারা।

সোমবার (৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামান।

এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মো. তরিকুল ইসলাম, মধুখালি থানার ওসি শহিদুল ইসলাম ও সংশ্লিষ্ট মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ওসি (তদন্ত) রথীন্দ্রনাথ তরফদারসহ অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তা এবং সাংবাদিকগণ উপস্থিত ছিলেন।

জানা যায়, গত ১২ আগস্ট সকালে রায়পুর ইউনিয়নের ব্যসদি গ্রামে রাস্তার পাশে ডোবা থেকে মালেক শেখের লাশ উদ্ধারের পর অজ্ঞাত খুনিদের সন্ধানে তদন্তে নামে পুলিশ।

পুলিশ সুপার আলিমুজ্জামান জানান, ঘটনার রাতে একটি নসিমন চুরির উদ্দেশে তাদের দু'জন মালেক শেখের রিকশায় চড়েন । পথিমধ্যে ওই চক্রের আরও দুজন রিকশায় উঠতে চাইলে চালক বাধা দেয়। এ সময় তারা রিকশাটি লুটের সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু চক্রের এক সদস্যকে মালেক শেখ চিনে ফেলায় রিকশা লুটের সময় তাকে হত্যা করে।

এই হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নেয়া চারজন হলেন- বোয়ালমারীর দৈবকীনন্দনপুর গ্রামের আলমগীর শেখ (৪৯), মধুখালির মেছড়দিয়া গ্রামের আব্দুর রহমান (৩৫), পাবনার ঈশ্বরদির দিঘা গ্রামের আ. মান্নান ঘরামি ও বোয়ালমারী গ্রামের হাসামদিয়া গ্রামের লিয়াকত বিশ্বাস (৩৪)। তাদের সাথে, সদর উপজেলার ফতেপুর গ্রামের মিলন শেখ (৩৩), রাজবাড়ির কালুখালির মাঝবাড়ি গ্রামের কোরবান বিশ্বাস (৩০) নামে দু'জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যাদের গ্যারেজ থেকে মালেক শেখের রিকশাসহ আরও কিছু চোরাই যান উদ্ধার করেছে।

পুলিশ সুপার জানান, ঘটনার পর তারা সিসিটিভির অস্পষ্ট ফুটেজ পান যেখানে খুনিদের সনাক্ত করা যাচ্ছিল না। পরে গোয়েন্দা তৎপরতা ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় গত ২৬ আগস্ট প্রথমে আলমগীর শেখকে গ্রেফতার করা হয়।

এই মামলায় বর্তমানে সে জেল হাজতে রয়েছে। আলমগীর শেখের বিরুদ্ধে হত্যা, ডাকাতি, দস্যুতা ও চুরির ঘটনায় সাতটি মামলার রেকর্ড পেয়েছে পুলিশ। তবে তার বিরুদ্ধে এ ধরনের প্রায় ১৫টি মামলা রয়েছে বলে জানায় পুলিশ। আলমগীর শেখকে গ্রেফতারের পর আব্দুর রহমান ও অন্যান্যদের গ্রেফতার করা হয়।

পুলিশ সুপার আরও জানান, গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে মান্নান ঘরামী গত প্রায় ২৫ বছর ফরিদপুরে থাকে। তার দুই স্ত্রী। একজন শহরের পূর্ব খাবাসপুরে আরেকজন কানাইপুরে থাকে। বিভিন্ন প্লাস্টিক পণ্য ফেরীর আড়ালে এই মান্নান ঘরামি দিনের বেলায় ঘুরে ঘুরে চুরি করা যাবে এমন নসিমন, ভ্যান কিংবা অটোরিকশার সন্ধান করতো। এরপর রাতের বেলায় সহযোগীদের নিয়ে সেগুলো চুরি ছিনতাই করত। এই কাজে কেউ বাধা হয়ে দাড়ালে কিংবা পরিচয় জেনে ফেললে তাদের হত্যা করত।

এ ধরনের বেশ কিছু ঘটনার তথ্য তাদের নিকট থেকে পাওয়া গেছে। বিশেষত এদের টার্গেট হচ্ছে নসিমন চুরি। এসব চুরি করা নসিমন পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন জেলায় বিক্রি করে টাকা ভাগ করে নিত তারা।

আরও পড়ুন : নরসিংদীতে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের ওপর সন্ত্রাসী হামলা

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জানান, গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে মান্নান ঘরামী, লিয়াকত বিশ্বাস, মিলন শেখ ও কোরবান বিশ্বাসকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড চেয়ে ফরিদপুরের ৫ নং আমলী আদালতে চালান করা হবে।

ওডি/এসএ

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড