মা-বাবাসহ শিশুকে হত্যা, মামলায় অভিযুক্ত ৯

কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে একই পরিবারের তিনজনকে হত্যার পর লাশ মাটি চাপা দিয়ে গুম করায় নয়জনকে অভিযুক্ত করে মামলা করা হয়েছে।

কিশোরগঞ্জে মা-বাবাসহ একই পরিবারের তিনজনকে হত্যার পর লাশ মাটিতে পুঁতে রাখার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। নয়জনকে অভিযুক্ত করে কটিয়াদী থানায় মামলাটি দায়ের করেছেন নিহত দম্পতির মেজ ছেলে তোফাজ্জল হোসেন।

কটিয়াদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ জলিল শুক্রবার (৩০ অক্টোবর) রাত ১০টার দিকে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, নিহত আসাদ মিয়া ও পারভিন আক্তার দম্পতির মেজ ছেলে তোফাজ্জল হোসেন বাদী হয়ে কটিয়াদী থানায় হত্যা মামলাটি করেছেন। আসামিদের মধ্যে গত বৃহস্পতিবার (২৯ অক্টোবর) রাতেই সন্দেহভাজন হিসেবে চারজনকে আটক করেছে পুলিশ। পরে তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

গ্রেপ্তাররা হলো- নিহত আসাদের ছোট ভাই দীন ইসলাম, মা জুমেলা বেগম, বোন নাজমা ও ভাগনে আল-আমিন। বাকি পাঁচ আসামিদের সবাই তাদের নিকটাত্মীয় বলে জানান ওসি।

জমিজমা ও পারিবারিক বিরোধের জেরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে উল্লেখ করে ওসি এম এ জলিল জানান, তদন্তের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদেই আসামি দীন ইসলাম হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি একাই শাবলের আঘাতে তিনজনকে হত্যা করে অন্যদের সহায়তায় মাটিচাপা দেন। ওই ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে পুলিশ দীন ইসলামকে নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত শাবলটি উদ্ধার করে।

উল্লেখ্য, এর আগে বৃহস্পতিবার কটিয়াদীর বনগ্রাম ইউনিয়নের জমশাইট গ্রামে বাড়ির কাছেই মাটিচাপা দেওয়া অবস্থায় মো. আসাদ মিয়া (৫৫), তার স্ত্রী পারভিন আক্তার (৪৫) ও ছেলে লিয়নের (৮) লাশ উদ্ধার করে পুলিশের একটি দল। নিহতরা গত বুধবার (২৮ অক্টোবর) থেকে নিখোঁজ ছিল।

নিহত আসাদ মিয়া জমশাইট বাজারের একজন ব্যবসায়ী ছিলেন। মোফাজ্জল (২৫) ও তোফাজ্জল (১৩) নামের আরও দুই ছেলে রয়েছে তার। তারা বাড়িতে না থাকায় প্রাণে বেঁচে যায় বলে ধারণা করা হচ্ছে।

মামলার বিবরণে জানা যায়, নিহত আসাদ, তার স্ত্রী পারভিন ও ছেলে লিয়ন গত বুধবার রাতে ঘুমিয়ে পরেছিল। এরপর বৃহস্পতিবার সকালে মেজ ছেলে তোফাজ্জল নানাবাড়ি থেকে ফিরে নিজেদের বাড়িতে যায়। কিন্তু বাড়িতে মা-বাবা ও ছোট ভাইকে খুঁজে পায়নি সে। পরে আত্মীয়-স্বজনের কাছে জিজ্ঞেস করলেও কোনো সদুত্তর পাওয়া যায়নি।

আরও পড়ুন : শ্বশুরবাড়িতে এসে ঘুমন্ত স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যা

পরে তোফাজ্জল বিষয়টি থানায় জানালে পুলিশ নিখোঁজদের সন্ধানে মাঠে নামে। এরপর রাত সাড়ে ৯টার দিকে বাড়ির পেছনে একটি নির্জন স্থানের গর্ত থেকে একটি হাত দেখা গেলে এলাকাবাসী পুলিশকে খবর দেয়। সঙ্গে সঙ্গে ঊর্ধ্বতন মহলকে বিষয়টি অবহিত করেন ওসি এম এ জলিল।

এ দিকে খবর পেয়ে পুলিশ সুপার (এসপি) মাশরুকুর রহমান খালেদসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করা হয়।

সর্বশেষ শুক্রবার দুপুরে কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মর্গে নিহত তিনজনের ময়না তদন্ত সম্পন্ন হয়।