• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৯ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

সুবর্ণচরে পরিত্যক্ত জমিতে বিনাধান-১৯এর বাম্পার ফলনে চাষিদের মুখে হাসি

  আরিফ সবুজ, নোয়াখালী প্রতিনিধি

০১ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৩:১৮
নোয়াখালী
বিনাধান-১৯ এর চাষাবাদ

প্রতিকুল পরিবেশ ও ভালো জাতের বীজ না পাওয়ায় টানা ১০/১২বছর আউশের চাষ করেন না নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার ধান চাষিরা । এতে আউশ মৌসুমে চাষাবাদের জমি গুলো পরিত্যক্ত থাকতো। এ মৌসুমে বেকার সময় পার করতেন তারা। এবছর সুবর্ণচরে পরীক্ষা মুলক ভাবে বিনাধান-১৯ এর চাষ করেন চাষিরা। এতে কাঙ্ক্ষিত ফলনের চেয়েও বেশি ফলন পেয়েছেন তারা। এবিষয়ে বিস্তারিত জানতে কথা হয় এ উপকুলের চাষিদের সাথে।

বুধবার ২৬শে অক্টোবর সকালে সরে জমিনে গিয়ে কথা হয় নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার চরক্লার্ক ইউনিয়নের কেরামত পুর গ্রামের চাষি মো. বেলাল উদ্দিনের সাথে। তিনি জানান, গত দশবছর প্রতিকুল পরিবেশের কারণে আউশ মৌসুমে ধান চাষ করেন না তিনি। এসময় ঘরে বসে বেকার সময় কাটান বেলাল। এবছর সুবর্ণচর উপজেলার বিনা কর্মকর্তাদের পরামর্শে বিনাধান-১৯ এর চাষাবাদ শুরু করেন তিনি । এতে কমসময়ে ভালো ফলন পেয়ে খুশি । এবিষয়ে বেলাল জানান, আগামীতে তার দেখা দেখিতে অনেক চাষি বিনাধান-১৯ এর চাষের ব্যাপারে আগ্রহী রয়েছেন।

একই এলাকার চাষি মো. সেকান্তর মিয়া জানান, প্রাথমিক পর্যায়ে এ ধানের ব্যাপারে কাঙ্ক্ষিত সময় ও ফলনের ব্যাপারে সংশয় ছিল। কিন্তু ১০০দিনের মধ্যে হেক্টর প্রতি ৫.৩১ মে.টন ফলন পেয়েছেন তিনি। তার মতো একই রকম ফলন পেয়েছেন চাষি মো. আলাউদ্দিন, মো.আইউব আলীসহ আরো অনেকে । চাষিরা জানান, বিনা কর্মকর্তারা কেরামতপুর গ্রামের ১০০ চাষিদের মাঝে ধানের বীজ ও সার প্রদান করেন। এছাড়াও বীজতলা তৈরি থেকে শুরু করে ফলন সংগ্রহসহ বীজ সংরক্ষণের ব্যাপারে সর্বাত্মক সহযোগিতা করেন বিনা উপকেন্দ্র নোয়াখালীর বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তারা ।

এ বিষয়ে বিনা উপকেন্দ্র নোয়াখালীর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শেফাউর রহমান জানান, সুবর্ণচরের চাষিরা বিগত ১০/১২বছর যাবত আউশ মৌসুমে তাদের জমিতে কোন চাষাবাদ করতো না । ফলে এসময় তাদের জমীসমুহ অনাবাদী পড়ে থাকতো । এবছর পরীক্ষামূলক ভাবে বিনা উপকেন্দ্র থেকে ১০০জন চাষির মাঝে ১৪০০ কেজি ধান বিতরণ করা হয় । সাধারণত বিনাধান-১৯এ হেক্টর প্রতি ৩.৮৪ থেকে ৫মে.টন ধান পাওয়া যায় । কিন্ত সুবর্ণচরের চাষিরা প্রত্যাশার চেয়ে ভালো ফলন লাভ করেছে। এদিকে আমন মৌসুমেও প্রায় শতাধিক চাষিদের মাঝে ১৬২৫ কেজি আমনের বীজ প্রদান করা হয়েছে।

বিনাধান-১৯ এর উদ্ভাবক ড.মো. আবুল কালাম আজাদ জানান, আগামীতে দেশের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলা করা। সে চিন্তা মাথায় রেখে এধানের উদ্ভাবন। এটি জলবায়ুর সঙ্গে খাপ খাইয়ে ভালো ফলন দিতে সক্ষম । ফলে সেচসহ যাবতীয় খরচ কম হওয়ায় চাষিরা এধান চাষে উপকৃত হবেন ।

আরও পড়ুন : আশুলিয়ায় প্রবাসী হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার ১

অন্যদিকে জানতে চাইলে সুবর্ণচর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. শহীদুল ইসলাম জানান, ভালো ফলন না পাওয়া এবং প্রতিকূল পরিবেশের কারণে সুবর্ণচরের চাষিরা প্রায় আউশ মৌসুমে বেকার থাকতো । তবে এবছর বিনাধান-১৯এর বাম্পার ফলন এবং মাত্র ৯০-৯৫ দিনে ফলন আসায় চাষিরা উপকৃত হয়েছে। ফলে ভবিষ্যতেও এধানের ব্যাপারে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন চাষিরা । এছাড়াও বিনা কর্রমর্তাদের পাশাপাশি চাষিদের সবরকম প্রয়োজনে পাশে থাকার কথাও জানান শহীদুল ইসলাম।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড