ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের লোকজনকে টাকা না দেওয়ায় আখাউড়ায় নাজমা বেগম নামে এক নারীকে মাদক মামলায় মিথ্যা আসামি করেছে বলে অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগীর পরিবার। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১২টায় আখাউড়া পৌরশহরের দূর্গাপুর গ্রামের নাজমা বেগমের বাড়িতে সাংবাদিক সম্মেলন করে এই অভিযোগ করেন।
সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নাজমা বেগমের কলেজ পড়ুয়া মেয়ে নাহিদা ইসলাম মিতু। মিতু বলেন, ২৪ আগস্ট সোমবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে সাদা পোশাকে চার থেকে পাঁচজন লোক জোর করে আমাদের ঘরে প্রবেশ করে। এসময় আমার মা বাড়িতে ছিলেন না। বাড়িতে আমি ও আমার এক বোন ছিলাম। ওই লোকজন নিজেদেরকে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের লোক বলে পরিচয় দেন। এসময় তারা আমার মা মাদক ব্যবসা করে বলে আমাদের ঘর তল্লাশি শুরু করে এবং আমাদের সাথে দুর্ব্যবহার করে। আমি তখন স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর মো. তাজুল ইসলাম ভূইয়া ও আশে পাশের বাড়ির লোকজনকে ডেকে আনি। ঘন্টাখানেক তল্লাশি করে আমাদের ঘরে কোন মাদক দ্রব্য পায়নি।
পরে সকলের উপস্থিতিতে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের লোকজন একটি জব্দ তালিকা করে। সেই তালিকায় আমাদের বসত ঘরে কোন মাদক দ্রব্য পাওয়া যাইনি বলে উল্লেখ করে। জব্দ তালিকায় পৌর কাউন্সিলর তাজুল ইসলাম, মো: আসলাম হোসেন ও আমি (মিতু) স্বাক্ষর করি। জব্ধ তালিকার একটি কপি চাইলে তারা তা দিতে অস্বীকার করেন। এক পর্যায়ে আমি মোবাইল ফোনে জব্দ তালিকার ছবি তুলে রাখি। মিতু অভিযোগ করেন, লোকজনকে সরিয়ে দিয়ে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী উপ পরিদর্শক মো: হুমায়ুন কবির আমার কাছে এক লক্ষ টাকা দাবি করেন। তার মোবাইল ফোন নম্বর দিয়ে পরে যোগাযোগ করতে বলেন। টাকা না দিলে মাদক মামলায় আমার মাকে ফাঁসিয়ে দেওয়া হবে হুমকি দিয়ে যান।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত নাজমা বেগম বলেন, আমি কখনও মাদক ব্যবসা করিনি। আমার নামে থানায় কোন মামলা নাই। কিন্তু পরদিন ২৫ আগস্ট মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো.মিজানুর রহমান আখাউড়া থানায় একটি মাদক মামলা করেন। সেই মামলায় নাজমা বেগমকে ২নং আসামি করা হয়েছে। টাকা না দেওয়ায় সাজানো একটি মামলায় তাকে ফাঁসানো বলে তিনি অভিযোগ করেন।
পৌর কাউন্সিলর তাজুল ইসলাম ভূইয়া বলেন, নাজমা বেগম মাদক বিক্রি করে বলে আমি কখনও শুনিনি। তল্লাশির সময় আমি উপস্থিত ছিলাম ওই সময় তার ঘর থেকে কোন মাদকদ্রব্য উদ্ধার হয়নি।
আরও পড়ুন : সব মিলিয়ে ক্ষতির সম্মুখীন সুন্দরবন ও বন্যপ্রাণী!
ব্রাহ্মণবাড়িয়া মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. মিজানুর রহমান বলেন, দূর্গাপুর এলাকা থেকে ৪০০ পিস ইয়াবাসহ কালন মিয়া নামে এক চোরাকারবারিকে আটক করি। কালনের বক্তব্য এবং গোপন তথ্যের ভিত্তিতে নাজমা বেগমের বাড়ি তল্লাশি করা হয়। তবে নাজমা বেগমের বাড়িতে কোন মাদক পাওয়া যায়নি। কিন্তু নাজমা বেগম দীর্ঘদিন যাবত মাদক ব্যবসা করে। মামলার ১নং আসামি কালনের বক্তব্যে তাকে এই মামলা আসামি করা হয়েছে। তবে টাকা চাওয়ার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড