কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
৪৯ বছর আগে হারিয়েছেন স্বামী। নাবালক তিন সন্তানের মুখে খাবার জোটাতে বিভিন্ন বাসা-বাড়িতে কাজ করেছেন। শারীরিক শ্রম দিয়ে বড় করেছেন সন্তানদের। এই বিধবা নারীটির সংসারে বড়ই প্রয়োজন ছিল সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর একটি কার্ড। কিন্তু তার ভাগ্যে জোটেনি সেসব সহযোগিতা। ৭২ বছর বয়স্ক এই নারীটির ভরসা এখন লাঠি। বিবর্ণ দৃষ্টিতে অনেক আশা নিয়ে জনপ্রতিনিধিদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বিফল হয়ে ফিরতে হয়েছে ভাঙা কুটিরে।
কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা কবিজন নেসার স্বামীর নাম মৃত: নটকু শেখ। টানাটানির সংসারে অনেক কষ্ট করে মেয়েকে বিয়ে দেন। এরপর ছেলেকে বিয়ে দিয়েছেন। করোনার কারণে ছেলের হাতে কোন কাজ নেই। ফলে মানবেতরভাবে কাটছে তাদের দিন। এনিয়ে জাতীয় ও অনলাইন পোর্টালে একাধিক সংবাদ প্রচারের পর নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। কুড়িগ্রাম-৩ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক এম এ মতিনের পক্ষ থেকে তার প্রতিনিধিরা কবিজন নেসার খোঁজখবর নেন এবং তাকে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেন। পাশাপাশি উলিপুর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আবু সাঈদ সরকার খাবার সামগ্রী ও নগদ অর্থ বিতরণ করেন। তাকে বয়স্ক ভাতার কার্ড করে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এসময় সংসদ সদস্য অধ্যাপক এম এ মতিন কবিজন নেসাকে বয়স্ক ভাতাভুক্ত করার জন্য উলিপুর উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মশিউর রহমানকে তার প্রতিনিধি দ্বারা অবগত করেন। সমাজসেবা অফিসার কবিজন নেসাকে ভাতাভুক্ত করবেন বলে আশ্বাস দেন প্রতিনিধিকে।
সাংবাদিকরা বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর করে জানতে পারেন, ২০১৯-২০ অর্থ বছরে উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নে ৯৭ জন বয়স্ক ও ৮২ জন বিধবা ভাতা প্রাপ্তির জন্য তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। এই তালিকাতে নেই ৭২ বছর বয়সী বৃদ্ধা কবিজন নেসার নাম।
কোন রকমে হাঁটাচলা করতে পারেন কবিজন নেসা। তেমন কোনো কাজ করতে পারেন না। চোখে দেখেন কম, আবার কানেও শুনেন না। শরীরে আগের মতো শক্তি নেই। বাসা বেঁধেছে বার্ধক্যজনিত নানা রোগব্যাধি। ওষুধ কেনার সামর্থ্য নেই। এক প্রকার অনাহারে-অর্ধাহারে মেয়ের সংসারে কাটছে তার দিন। কবিজন নেসার এখন বড় প্রয়োজন সরকারের নিরাপত্তা বেষ্টনীর একটি সহায়তার কার্ড।
আরও পড়ুন : কবরস্থান ও ইদগাহের জমির বিরোধে প্রাণ গেল ভ্যানচালকের
এ ব্যাপারে উলিপুর উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মশিউর রহমান জানান, আমাকে তার কাগজপত্র দেয়া হলেও মাঠ পর্যায়ে যাচাই-বাছাই করার সময় তিনি উপস্থিত না থাকায় বাদ পরেছেন।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড