মামুন আহম্মেদ, বাগেরহাট
সবুজ পাতার ডালে ডালে থোকায় থোকায় ঝুলছে লাল-হলুদ রঙের আপেল কুল। দূর থেকে দেখলে মনে হয় বিশাল সবুজের মাঠে যেন লাল-হলুদের সমারোহ। দেখলেই মন জুড়িয়ে যায়। সরেজমিনে গিয়ে এমনই দৃশ্য দেখা গেছে বাগেরহাটের মোল্লাহাট উপজেলার চুনখোলা ইউনিয়নের ছোট কাচনা গ্রামে।
বাগেরহাট ও গোপালগঞ্জ জেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় অবস্থিত মোল্লাহাট উপজেলা। আর এ উপজেলার চুনখোলা ইউনিয়নের কাচনা গ্রামে দুই বিঘা জমির যে কুল বাগানটি রয়েছে তার মালিক শরিফুল ইসলাম (৫৫)। মাত্র এক বছর আগেও তিনি ছিলেন বেকার, পারিবারিক অভাবের কারণে খুব বেশি লেখাপড়াও করতে পারেননি তিনি। একটা সময় অভাবের কারণে করেছেন দিন মজুরের কাজও। কিন্তু কখনো তিনি হতাশ হননি।
বেকার জীবনের কষ্ট লাগবে প্রতিবেশী এক ছোট ভাইয়ের পরামর্শে অন্যের এক বিঘা জমি লিজ নিয়ে আপেল কুলের চাষ শুরু করেন তিনি। পরবর্তীতে ভালো লাভ করায় আরও এক বিঘা জমি লিজ নিয়ে বড় পরিসরে দুই বিঘা জমির ওপর আপেল কুলের চাষ শুরু করেন। এখন বছর প্রতি কমপক্ষে নয় থেকে ১০ লাখ টাকার কুল বিক্রি করেন তিনি। বাগান পরিচর্যার জন্য রয়েছে দুইজন সহকারী।
বাগান মালিক শরিফুল ইসলাম বলেন, আমি প্রথমে যশোর থেকে আপেল কুলের চারা এনে এক বিঘা জমিতে চাষ শুরু করেছিলাম। ভালো লাভ করতে পারায়, পরবর্তীতে আমি জমির পরিমাণ বৃদ্ধি করি। এখন আমার দুই বিঘা জমির ওপর তিনটি আপেল কুলের বাগান রয়েছে, যা দিয়ে প্রতি বছরে আমার নয় থেকে ১০ লাখ টাকা লাভ হয়। এছাড়া গেল বছর ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের আঘাতে আমার বাগান ক্ষতিগ্রস্ত হলেও এ বছর আমি ৭ থেকে ৮ লাখ টাকার কুল বিক্রি করতে পারবো বলে আশা করছি।
তিনি আরও বলেন, একটি আপেল কুলের চারা বড় করতে আমার প্রায় ৪শ টাকা খরচ হয়। প্রতিটি গাছ থেকে সর্বনিম্ন হলেও আমি দুই হাজার টাকার কুল বিক্রি করে থাকি। ঘূর্ণিঝড় বুলবুলে আমার কিছু গাছ ক্ষতিগ্রস্ত হলেও আমার বাগানে বর্তমানে ৩ শতাধিক গাছ রয়েছে। এছাড়া গাছের বিভিন্ন রোগ বা গাছের ফলন নিয়ে কোনো সমস্যা দেখা দিলে উপজেলার কৃষি অফিস থেকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সুবিধা পেয়ে থাকেন বলেও জানান তিনি।
কথা হয় বাগানের পরিচর্যাকারী মো. করিম শেখের সঙ্গে। তিনি বলেন, আমাদের এ বাগান থেকে পার্শ্ববর্তী গোপালগঞ্জ জেলাসহ বাগেরহাট ও খুলনাতেও কুল সরবরাহ করা হয়। প্রতি মণ কুল আমরা চার হাজার টাকা করে বিক্রি করি।
আরও পড়ুন : অর্ধশত ছাত্রের চুল কেটে দেওয়ায় প্রধান শিক্ষক বরখাস্ত
মোল্লাহাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আবুল হাসান বলেন, আমরা কুল চাষে কৃষকদের সব সময় উৎসাহ দিয়ে থাকি। এ উপজেলার অধিকাংশ কুল বাগান গুলো বিভিন্ন মৎস্য ঘেরের ভেড়িতে হয় বলে, বালাই নাশক কম ব্যবহার করা হয়। এ বছর মোল্লাহাটে ১০ হেক্টর জমিতে কুলের আবাদ হয়েছে। আমরা কৃষকদের কুল চাষে প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দিয়ে থাকি যাতে কুল চাষটা মোল্লাহাটে বাণিজ্যিকভাবে হয় এবং কৃষক লাভবান হয়।
ওডি/এএসএল
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড