বরিশাল প্রতিনিধি
বরিশালে চীন ফেরত শিক্ষার্থীর পরিবার একঘরে হয়ে পড়েছে। করোনা ভাইরাস আক্রান্তের গুজব ছড়িয়ে পড়ায় এমন পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। তাদের সঙ্গে প্রতিবেশীরা মিশছে না। গুজব এতটাই দানা বেধেঁছে যে, রিকশায় কাউকে উঠানো হয় না।
জানা গেছে, গৌরনদী শহরের উত্তর পালরদী এলাকার সৌদি প্রবাসী জালাল শিকদারের ছোট ছেলে হেলাল শিকদার (২৫)। তিনি চীনের সাংহাই থংচি ইউনিভার্সিটির চিকিৎসা বিজ্ঞান বিভাগের দশম সেমিস্টারের শিক্ষার্থী। ২০১৫ সাল থেকে তিনি চীনে অবস্থান করছেন।
করোনার বিস্তার শুরু হলে ১ ফেব্রুয়ারি রাতে চীন থেকে বাড়ি ফেরেন হেলাল শিকদার। এ খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে তাকে নিয়ে বিভিন্ন গুজব ছড়াতে থাকে। এরপর থেকে হেলালের পরিবারের সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় প্রতিবেশীরা। ভয়ে তার বাড়ির পাশ দিয়ে পর্যন্ত কেউ চলাফেরা করছেন না।
এলাকার রিকশা চালকরা ওই পরিবারের কোনো সদস্যকে রিকশায় তুলছেন না। এসব কারণে এক সপ্তাহ ধরে অনেকটা একঘরে হয়ে পড়েছেন হেলালের পরিবার।
হেলালের বোন নিপা বেগম বলেন, তার ভাইকে চীনে স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর অনুমতি দেয় দেশে ফিরতে। দেশেও তার স্বাস্থ্য পরীক্ষায় করোনা ভাইরাসের লক্ষণ পাওয়া যায়নি। এরপরও কিছু লোক গুজব রটায়। গত এক সপ্তাহ ধরে অনেকটা একঘরে থাকার মতো জীবনযাপন করছি। এতে এলাকায় তারা অসহায় হয়ে পড়েছেন বলে দাবি করেন।
চীন ফেরত শিক্ষার্থী হেলাল শিকদার জানান, চীন থেকে দেশে ফেরার আগে সাংহাই থংচি ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষ স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে। চীনের সাংহাই বিমানবন্দরেও আরেক দফা পরীক্ষা করা হয়। পথে শ্রীলঙ্কার কলম্বো বিমানবন্দরে প্রায় দুই ঘণ্টা স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। সবশেষে গত ২ ফেব্রুয়ারি বাড়িতে পৌঁছালে তাকে নিয়ে এলাকায় নানা গুজব ছড়িয়ে পড়ে। এ কারণে নানাভাবে হেয় প্রতিপন্ন করা হচ্ছে আমাদের পরিবারকে।
গৌরনদী থানার এসআই খাইরুল আলম জানান, খবর পেয়ে গত ২ ফেব্রুয়ারি তার স্বাস্থ্য পরীক্ষার বিভিন্ন কাগজপত্র দেখে আসি। দেশে ফেরার আগে ১৪ দিন তাকে চীনের চিকিৎসকরা পর্যবেক্ষণ করেন। সেসব কাগজপত্র হেলাল দেখিয়েছেন। তার শরীরে করোনা ভাইরাসের উপসর্গ নেই বলে পরীক্ষার রিপোর্টে উল্লেখ রয়েছে। বর্তমানে তিনি সুস্থ ও স্বাভাবিক রয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি।
এ বিষয়ে বরিশাল জেলা সিভিল সার্জন ডা. মনোয়ার হোসেন বলেন, হেলালের বাসায় চিকিৎসকের একটি দল গিয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেছে। পরীক্ষাতে তার শরীরে করোনা ভাইরাসের উপসর্গ ধরা পড়েনি। জ্বর, হালকা সর্দি অথবা কাশিও নেই হেলালের।
আরও পড়ুন : রংপুরে চীন ফেরতের শরীরে করোনার লক্ষণ নেই
তার পরও হেলালের বাড়িতে আলাদা একটি কক্ষ আইস্যুলেশন করে সেখানে অবস্থান করছেন। আমাদের পরামর্শে ১৪ দিন পরিবার থেকে দূরত্ব বজায় রেখে চলছেন হেলাল। তাকে নিয়ে ভীত বা আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই বলে জানান জেলা সিভিল সার্জন ডা. মনোয়ার হোসেন।
ওডি/এএইচ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড